ব্রাজিলের সেই অস্কার এখন চীনের যাত্রী

নেইমারের মতো অতটা উজ্জ্বলতা ছড়াননি। তবে ব্রাজিল দলে তাঁর আবির্ভাবটাও ছিল বেশ দীপ্তিময়। কাকা-রোনালদিনহো যুগের পর অনেকটাই দ্যূতিহীন হয়ে পড়েছিল ব্রাজিলের মাঝমাঠ। অস্কারের আবির্ভাবে সেখানে আবার আলোর রেখা দেখতে পেয়েছিল অনেকেই। ঝিমিয়ে পড়া চেলসিও আশার আলো দেখতে শুরু করেছিল তাঁকে নিয়ে। শুরুটা ছিল নজরকাড়াই। তবে উল্কার মতো দ্রুত মিলিয়েও গেলেন। জাতীয় দলের বাইরে আছেন অনেক দিন থেকেই। চেলসির মূল দলেও ঠাঁই পাচ্ছিলেন না। ব্রাজিল আর চেলসির এই মিডফিল্ডারের ঠাঁই হলো চীনের ফুটবলে। সাংহাই এসআইপিজির সঙ্গে কথা পাকা হয়ে গেছে। এখন শুধু চীনগামী বিমানে চেপে বসাটাই বাকি।

সাংহাই এসআইপিজির সঙ্গে অস্কারের আলোচনার শুরু আরও আগেই হয়েছিল। এই মাসের গোড়ার দিকে সংবাদমাধ্যমে একবার বলেওছিলেন, চুক্তি যে হচ্ছে তা ৯০ শতাংশ নিশ্চিত। অস্কার-এসআইপিজি হয়তো চুক্তির বিষয়ে আগেই ঐকমত্যে পৌঁছেছিল। বাকি ছিল চেলসি-এসআইপিজির একমত হওয়া। সে কাজও হয়ে গেছে। ৬ কোটি ইউরোতে অস্কারকে দলে টানছে তারা। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী জানুয়ারি থেকেই চায়না সুপার লিগে খেলতে শুরু করবেন অস্কার। শুরুর মতো আলো ছড়াতে পারবে কি না কে জানে। তবে বেতনের দিক থেকে আপাতত লিওনেল মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোদের ছাড়িয়ে গেছেন। তাঁর সাপ্তাহিক বেতন হবে ৪ লাখ পাউন্ড।

ব্রাজিলের ক্লাব সাও পাওলোর যুব দলে চার বছর বেশ আলো ছড়ান অস্কার। ২০০৮ সালে জায়গা পান ক্লাবটির মূল দলে। এখানে দু বছর খেলার পর তাকে নিয়ে নেয় ইন্টারন্যাসিওনাল। কুড়ি থেকে অস্কারের পাপড়ি মেলে ধরার শুরু সেখানেই। দুই বছরে ক্লাবটির হয়ে ব্রাজিলিয়ান সিরি ‘আ’-তে ৩৬টি ম্যাচ খেলেন। গোল করেন ১১টি। পাশাপাশি সতীর্থদের গোলে সহায়তা রাখতে থাকেন সমান তালে।

ইউরোপের অনেক বড় ক্লাবেরই চোখ পড়েছিল তাঁর ওপর। তবে অস্কারকে পাওয়ার লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জেতে চেলসি। ২০১২ সালে ২৫ মিলিয়ন পাউন্ডে তাঁকে কিনে নেয় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবটি। দুটি মৌসুম সেখানে ভালোই খেলেন। এই সময়ে ভালো ফুটবল উপহার দিয়ে যান ব্রাজিলের হয়েও। ২০১৩ সালের কনফেডারেশন কাপে খেলেন অসাধারণ। ২০১৪ বিশ্বকাপে দেশের মাটিতে ব্রাজিল হতাশ করলেও অস্কার ছিলেন ফর্মে।

বিশ্বকাপের পর থেকেই পড়তির দিকে অস্কারের ফর্ম। চেলসিতে তাঁর ভালো খেলতে না পারার একটা কারণ অনেকেই দেখাতে চান—অস্কারের পলকা শারীরিক গঠন ইংল্যান্ডের ফুটবলের ধকল হয়তো সহ্য করে উঠতে পারছে না। আর এটা তো স্বাভাবিক—ক্লাবের হয়ে ভালো খেলতে পারছেন না বলেই নজরে আসছেন না ব্রাজিল কোচের। অস্কার কি তাহলে আলোর ঝিলিক দিয়েই হারিয়ে যাবেন?

হাওয়া বদল করছেন। দেখা যাক, চীনের ফুটবল তাঁকে অর্থের সঙ্গে আত্মবিশ্বাসটাও ফিরিয়ে দিতে পারে কি না। ফিরিয়ে দিতে পারে কি না পুরোনো সেই অস্কারকে! সূত্র: বিবিসি, ফোর ফোর টু।



মন্তব্য চালু নেই