রোনালদোই জিতলেন ব্যালন ডি’অর
ব্যালন ডি’অর জিতে যা বললেন রোনালদো
জুরিখের আলো ঝলমলে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, লিওনেল মেসি ও ম্যানুয়েল ন্যয়ার। উপস্থাপক ঘোষণা করবেন ফিফা ব্যালন ডি’অর বিজয়ীর নাম। পিনপতন নীরবতা বিরাজ করছে হলরুমে। নীরবতা ভেঙে সাউন্ড সিস্টেমে উচ্চারিত হল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর নাম। গোল করার পর যেমন উল্লাস করেন, তেমন উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন পর্তুগিজ তারকা।
লিওনেল মেসি ও ম্যানুয়েল ন্যুয়ারকে পেছনে ফেলে টানা দ্বিতীয়বার ও জীবনের তৃতীয়বারের মতো ফিফা ব্যালন ডি’অর পুরস্কার জিতলেন তিনি।
এই পুরস্কার জেতার পর রিয়াল মাদ্রিদ সুপারস্টার বলেন, ‘আমি যেভাবে খেলছি ঠিক সেভাবেই খেলে যেতে চাই। আরো চেষ্টা করতে চাই। আরো ট্রফি জিততে চাই- আমার মায়ের জন্য, বাবার জন্য ও সন্তানের জন্য। আমি কখনোই চিন্তা করিনি, যে তৃতীয়বারের মতো আমি এই পুরস্কারটি জিতব। আমি সর্বকালের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হতে চাই।’
যারা তাকে ভোট দিয়েছেন তাদের ও অন্যান্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে রোনালদো বলেন, ‘যারা আমাকে ভোট দিয়েছেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। বিশেষ করে আমাদের সভাপতি, আমার কোচ ও রিয়াল মাদ্রিদের সবাইকে। এটা আমার জন্য অবিস্মরণীয় বছর হয়ে থাকবে। এই ট্রফি জেতাটা সত্যিই অবিশ্বাস্য ও ইউনিক কিছু।’
রোনালদোই জিতলেন ব্যালন ডি’অর
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। টানা দ্বিতীয় বারের মতো বিশ্বসেরা খেলোয়াড় তথা ফিফা ব্যালন ডি’অরের পুরস্কার জিতেছেন। এ নিয়ে তিনি তৃতীয়বারের মতো এই পুরস্কার জিতলেন। এ যাত্রায় তিনি পেছনে ফেলেছেন আর্জেন্টিনা তারকা লিওনেল মেসি ও জার্মানির ম্যানুয়েল ন্যয়ারকে।
ব্যালন ডি’অর নির্বাচনের ক্ষেত্রে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ৩৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। লিওনেল মেসি পেয়েছেন ১৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আর ম্যানুয়েল ন্যয়ার পেয়েছেন ১৫ দশমিক ৭২ শতাংশ ভোট।
এর আগে ২০০৮ ও ২০১৩ সালে তিনি ফিফা বর্ষসেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছিলেন। চলতি মৌসুমে রোনালদো রীতিমতো উড়ছেন। লা লিগায় ১৭ ম্যাচে ২৬ গোল করে নতুন এক রেকর্ড গড়েছেন। ২৬টি গোল করার পাশাপাশি ৮টি গোলে সহায়তাও করেছেন। শুধু তাই নয়, উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে ৭১ গোল করে রাউল গঞ্জালেসকে ছুঁয়ে ফেলেছেন। রিয়ালকে জিতিয়েছিলেন উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের দশম শিরোপা। জিতিয়েছেন স্প্যানিশ কাপ, ইউরোপিয়ান সুপার কাপ ও ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ।
ইউরোপের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে সুয়ারেজের সঙ্গে যৌথভাবে তিনি গোল্ডেন শু জিতেছেন। কিন্তু বিশ্বকাপে পর্তুগালকে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য এনে দিতে পারেননি। ২০১৪ সালে তিনি মাত্র ৪৩ ম্যাচে ৫২ গোল করেছিলেন।
বর্ষসেরা নারী ফুটবলার : বর্ষসেরা নারী ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন জার্মানির নাদিন কেসলার। এই তালিকায় তার সঙ্গে ছিলেন ব্রাজিলের নারী ফুটবলার মার্তা ও যুক্তরাষ্ট্রের আবি ওয়ামবাচ। নাদিন জার্মানি জাতীয় নারী দল ও উলফসবার্গের হয়ে খেলেন।
বর্ষসেরা গোল : বর্ষসেরা গোলের পুরস্কার পেয়েছেন কলম্বিয়ার হামেস রদ্রিগেজ। তিনি বিশ্বকাপে উরুগুয়ের বিপক্ষে অসাধারণ এক ভলিতে গোল করেছিলেন। সেই গোলটিই জিতে নিয়েছে পুসকাস অ্যাওয়ার্ড। তার সঙ্গে লড়াইয়ে ছিলেন নেদারল্যান্ডসের রবিন ফন পার্সি ও আয়ারল্যান্ডের স্টেফানি রস। রদ্রিগেজ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে গোল্ডেন বুট জিতেছিলেন। এবার পুসকাস অ্যাওয়ার্ডটিও নিজের বগলদাবা করলেন।
ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ড : তবে ব্যতিক্রম হয়ে দেখা দিয়েছে ফেয়ার প্লে পুরস্কারটি। অন্যান্য বছর কোনো প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি বা দল এই পুরস্কার পায়। কিন্তু এবার সবাইকে অবাক করে দিয়ে বিশ্বকাপের স্বেচ্ছাসেবকরা জিতে নিয়েছেন ফেয়ার প্লে এর পুরস্কার।
বর্ষসেরা কোচ : বর্ষসেরা কোচ নির্বাচিত হয়েছেন জার্মানির বিশ্বকাপজয়ী কোচ জোয়াকিম লো। তিনি জার্মানিকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন। এই তালিকায় তার সঙ্গে ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের কার্লোস আনচেলত্তি ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের কোচ দিয়াগো সিমন।
বর্ষসেরা মহিলা কোচ : নির্বাচিত হয়েছেন জার্মানির ক্লাব উলফবার্গের রালফ ক্যালেম্যান। তিনি গেল বছরও তিনজনের সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিলেন। কিন্তু পুরস্কার জিততে পারেননি। এবার ঠিকই জিতে নিয়েছেন ৪৬ বছর বয়সী এই কোচ।
তথ্যসূত্র : গোলডটকম।
মন্তব্য চালু নেই