ব্যাঙ কেন ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ করে?

ব্যাঙ ডাকে ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ। কুনো ব্যাঙের ছা, খায়দায় গান গায়, তাইরে নাইরে না…

ব্যাঙ না কি গান করে? যারা এই গান শোনেননি তারা একটু অবাক তো হবেনই। বর্ষা এলে খালবিল, নদীনালা পানিতে টয়টুম্বুর হয়ে যায়। ডোবানালা ভরে যায় বর্ষার পানিতে। গুড়িগুড়ি বৃষ্টি রাতদিন চলতেই থাকে। আর সেই ডোবানালায় শুরু হয় নানা প্রজাতির ব্যাঙের উৎসব। তাদের ডাক শুনে শিশুরা বলে ওঠে প্যাক প্যাক,ওয়াক প্যাক!

ব্যাঙ বলে কি তাদের ঘর সংসার থাকবে না? তারা প্রধানত মাটি খুঁড়ে বাসা বানায়। যাদের জ্বর-সর্দির ভয় নেই তারা পানিতে থাকে। অনেকে অট্টালিকা ভেবে গাছের ডালে বাসা বাঁধে। আর যারা অলস প্রকৃতির তারা ঝোপে-ঝাড়ে, উদ্বাস্তুর মতো ঘুরে বেড়ায়। আলসে বাবুরা যেখানে রাত, সেখানেই কাত এই নীতিতে বিশ্বাসী। তাদের ভেতরেও হয় ভালবাসার আদানপ্রদান।

ব্যাঙের ডাক শুনে গ্রামের গৃহবধূরা বিরক্ত হয়। বাচ্চারা ঢিল ছোড়ে। কিন্তু মজার বিষয় হল এই বিরক্তিকর ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ ডাকটিই হলো তাদের প্রণয় সম্ভাষণ। যে বর্ষায় তারা এত ডাকাডাকি করে সেই বর্ষাই হল ব্যাঙের প্রজননকাল।

ব্যাঙেরা বুঝতে পারে ভূমিকম্প সতর্কতা, যা বিজ্ঞানীরাও এখনও আবিষ্কার করতে পারেননি। ইতালির এক গবেষক প্রফেসর গ্রান্ট। তিনি গবেষণার জন্য বেশকিছু কুনো ব্যাঙের গায়ে ঝুলিয়ে দেন বিশেষ সংকেতযুক্ত যন্ত্র। ভূমিকম্পের ৭ দিন আগে ব্যাঙগুলো অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করল। ভূমিকম্প শেষ হওয়ার ৬ দিন পর চিহ্নিত ব্যাঙগুলো পুনরায় গবেষণাস্থলে ফিরে এল এবং তার গবেষণা সফল হল। জানা গেল, এভাবেই প্রাকৃতিক দুর্যোগে তারা সতর্কতা জানায়।

বর্তমানে দেশে প্রায় ৪৯ প্রজাতির ব্যাঙ পাওয়া যায়। তার মধ্যে কটকটি, কাঁকাড়াভুক, কুনো, কোলা, চামড়াঝোলা, জাকেরানাসহ নাম-না-জানা বৈচিত্রময় ব্যাঙের দেখা মেলে গ্রাম-গঞ্জে। ব্যাঙ সংরক্ষণের জন্য আবার দিবসও পালন করা হয়। এই ব্যাঙ আমাদের গ্রামবাংলার ঐতিহ্য। এদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলা জরুরি।



মন্তব্য চালু নেই