ব্যভিচারের মিথ্যা অপবাদ জঘন্যতম অপরাধ

ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ ও শাশ্বত জীবন বিধান। জঘন্য সামাজিক ব্যাধি ব্যভিচারের শাস্তি প্রয়োগ করার সঙ্গে সঙ্গে ব্যভিচারের মিথ্যা অভিযোগকারীরও শাস্তির বিধান প্রদান করেছে।

কোনো নারী বা পুরুষকে ব্যভিচারের মিথ্যা অভিযোগে অভিযুক্ত করে হয়রানি করা, একে ‘কসফ’ বলা হয়। এক্ষেত্রে অভিযোগকারীর প্রত্যক্ষদর্শী, প্রাপ্ত বয়স্ক চারজন সাক্ষী উপস্থিত করতে হবে, না হয় তার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করা যাবে, যা শরিয়তে ফৌজদারি আইনের অন্তর্ভুক্ত।

বিষয়টি অনুধাবনের ক্ষেত্রে একটি ঘটনা উল্লেখ করা যেতে পারে-

ষষ্ঠ হিজরিতে বনি মুস্তালিক যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে আম্মাজান হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.)-কে জড়িয়ে মুনাফিক সরদার আবদুল্লাহ ইবনে উবাই মিথ্যা অপবাদ রটিয়েছিল, ইতিহাসে যা ‘ইফকের’ ঘটনা নামে খ্যাত। এ ঘটনার কারণে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও হজরত আয়েশা (রা.) তীব্রভাবে মর্মাহত হন।

অবশেষে দীর্ঘ এক মাস পর মহান আল্লাহ আয়াত নাজিল করেন ‘নিশ্চয়ই যারা মিথ্যা অপবাদ রটনা করেছে তারা তোমাদেরই একটি দল। তোমরা একে নিজেদের জন্য খারাপ মনে কর না। বরং এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। তাদের প্রত্যেকের জন্য ততটুকু, যতটুকু সে গুনাহ করেছে। আর অগ্রণী ভূমিকা পালনকারীর জন্য রয়েছে বিরাট শাস্তি।’ (সূরা নূর-১১)

এ আয়াত নাযিল করার মাধ্যমে হজরত আয়েশা (রা.)-এর পবিত্রতা পরিচ্ছন্নতা এবং সতীত্ব প্রকাশ করে দেওয়া হয়েছে।

এমন মারাত্দক অন্যায় কেউ যদি করে ফেলে তার জন্য রয়েছে তিন ধরনের শাস্তি। (ক) তাৎক্ষণিক শাস্তি হিসেবে তাদের ৮০ বেত্রাঘাত করা হবে। (খ) কখনোই এ অবস্থায় তাদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে না। (গ) এবং তাদের ফাসিক বা পাপাচারী সাব্যস্ত করা হবে। (সূরা আন্ নূর-৪)

সুতরাং অতিপরিতাপের সঙ্গেই বলতে হয়, আমাদের সমাজে এ প্রবণতা আছে যে বিনাদোষে অপরকে দোষী সাব্যস্ত করে সমাজের চোখে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়, এ থেকে প্রতিটি মানুষকেই ফিরে আসতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন, আমিন।



মন্তব্য চালু নেই