বেনাপোল সীমান্তে ২৫ দিনে নিহত ৪, আহত ৫
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সৌহার্দ্য, মাদক, অস্ত্র, সীমান্ত হত্যা ও চোরাচালান নিয়ে বার বার সমন্বয় বৈঠক হলেও হত্যা, গুম এবং আহতের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিএসএফ কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে ইচ্ছা ও খেয়াল খুশিমতো বাংলাদেশিদের ওপর চড়াও হচ্ছে। বিএসএফ’র নৃশংসতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কুপিয়ে, গুলি করে এবং পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে বাংলাদেশি নিরীহ কৃষক ও গরু রাখালদের।
বেনাপোল সীমান্ত এলাকায় ১ ফেব্রুয়ারি হতে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিএসএফের নির্যাতনে চার জন বাংলাদেশি নিহত ও পাঁচ জন আহত হয়েছেন। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন অনেকে।
স্থানিয় ও নির্ভর যোগ্য সূত্র জানায়, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ইং তারিখে বেনাপোলের পুটখালি সীমান্তে বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার ইউসুফ মিয়ার ছেলে আলিম খন্দকারকে (৩০) গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ। ২ ফেব্রুয়ারি বেনাপোলের বারোপোতা গ্রামের চাঁনমিয়ার ছেলে আজিজুর রহমানকে (২২) পিটিয়ে আহত করে। ৬ ফেব্রুয়ারি ভারতের বনগাঁ থানার জয়দেব পালের ছেলে জয়ন্ত পালকে (৩০) বাংলাদেশি ভেবে পিটিয়ে ও স্পিড বোট দিয়ে আঘাত করে বাংলাদেশ সীমারেখায় ফেলে রেখে যায়।
১৬ ফেব্রুয়ারি বেনাপোল পোর্ট থানার গয়ড়া গ্রামের বাবর আলীর ছেলে শরিফুলকে (২৬) বেনাপোলের পুটখালি সীমান্ত থেকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে বিএসএফ।
১৯ ফেব্রুয়ারি বেনাপোল পোর্ট থানার শিবনাথপুর গ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে আরিফ হোসেনকে (২৪) কুপিয়ে আহত করে বিএসএফ। একই দিন নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার আলিম মোল্যার ছেলে শরিফুল ইসলামকে (৩৫) গুলি কারে হত্যা করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ।
২১ ফেব্রুয়ারি যশোরের অভয়নগর উপজেলার আমজাদ হোসেনের ছেলে গোলাম রসুলকে (৩৫) পিটিয়ে হত্যা করে লাশ বাংলাদেশ সীমান্তে ভাসিয়ে দেয় বিএসএফ। ২৫ ফেব্রুয়ারি বেনাপোলের পুটখালি গ্রামের আইতাল মল্লিকের ছেলে কিতাব আলীকে (২৫) ধরে নিয়ে কুপিয়ে জখম করে বিএসএফ।
সর্বশেষ ২৬ ফেব্রুয়ারি বেনাপোলের পুটখালি সীমান্তের মেইন পিলার ১৭/৭ এস, ১৬৪ আর পিলারের নিকট থেকে মাত্র ২০০ গজ ভারত সীমান্তের ভিতর এক অজ্ঞাত নামা যুবতীকে বিএসএফ নির্যাতন করে হত্যা করে। এরপর তার লাশ সীমান্তবর্তী আমগাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। পরে ভারতের বনগাঁও থানার পুলিশ এসে লাশ সীমান্ত থেকে নিয়ে গেছে বলে ওপারের একটি সূত্র নিশ্চিত করে।
এ ব্যাপারে পুটখালি ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাপ করলে তিনি জানান, জনপ্রতিনিধিরা তো আর যুদ্ধ করতে পারে না। সীমান্তে বার বার বিজিবি-বিএসএফ বৈঠক হলে ও কিছু হচ্ছে না। বরং হত্যা নির্যাতন গুমের সংখ্যা বেড়ে চলেছে।
পুটখালি বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার জানান, সীমান্ত হত্যার বিষয় নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। বার বার বিএসএফের সঙ্গে বৈঠক হলে ও তারা সব কিছু উপেক্ষা করে তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী এসব হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। তারা এর তীব্র প্রতিবাদ করার পর ও সমস্যার কোনো সমাধান হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
মন্তব্য চালু নেই