বিয়ের নামে প্রতিবন্ধীর সঙ্গে প্রতারণা

নড়াইলে এক শারীরিক প্রতিবন্ধীকে বিয়ে করে তার সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে তার পরিবার ইউপি চেয়ারম্যানসহ স্থানীয় মাতব্বরদের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও পরিবারের পাশে দাঁড়ায়নি কেউ।

জানা যায়, এক বছর আগে সমবয়সী রিয়াজকে ভালোবেসে বিয়ে করেন ওই প্রবিবন্ধী। কিন্তু স্বামী রিয়াজের সঙ্গে এখন কোনো যোগাযোগ নেই। তিনি এখন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। শ্বশুর-শাশুড়ি কিছুতেই এ বিয়ে মেনে নিচ্ছেন না। বিয়ের সামাজিক স্বীকৃতির জন্য শ্বশুর-শাশুড়ি, আত্মীয়-স্বজনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

জানা যায়, ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর সদরের ভদ্রবিলা ইউনিয়নের সরকেলডাঙ্গা গ্রামের সালাম মোল্লার ছেলে রিয়াজুল ইসলাম ও সদরের মাইজপাড়া ইউনিয়নের চারিখাদা গ্রামের ইমদাদুল ইসলামের মেয়ে নাদিরা খাতুন একে অপরকে ভালোবেসে রেজিস্ট্রি বিয়ে করেন। বিয়ের পর তিন মাস তারা ঢাকায় বসবাস করলেও পরে রিয়াজ স্ত্রীকে তার বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এর পর থেকে তাদের মধ্যে কোনো যোগাযোগ নেই। বর্তমানে নাদিরা সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

প্রতিবন্ধী নাদিরা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, নিয়ম-কানুন মেনেই আমাদের বিয়ে হয়েছে। এখন স্বামীর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। শ্বশুরবাড়ি গেলে তারা খারাপ আচরণ করছে। বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিচ্ছে।

নাদিরা আরো বলেন, গত সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) থেকে স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়েছে। শরীর ভালো না। কি করব বুঝে উঠতে পারছি না। কোনো উপায় না পেয়ে সন্তান ও স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে গত ২০ আগস্ট ভদ্রবিলা ইউনিয়ন পরিষদে একটি লিখিত অভিযোগ করেছি। এতেও কোনো কাজ হয়নি।

কোনো মীমাংসা না হলে ঘর-সংসার ও সন্তানের পিতৃত্বের দাবিতে আদালতের দারস্থ হওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না বলেও জানান তিনি।

রিয়াজের বাবা সালাম মোল্যা বলেন, ছেলে-মেয়ে যেহেতু নিজেদের মনমতো বিয়ে করেছে, সেহেতু আমি এর মধ্যে নেই। ছেলে যদি তার স্ত্রীকে নিয়ে ঘর-সংসার করতে চায়, তাহলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু ছেলের তো কোনো খোঁজই পাচ্ছি না।

ভদ্রবিলা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার কাজী নাজমুল বলেন, নাদিরার অভিযোগ পেয়ে রিয়াজের বাড়ি গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। রিয়াজকে পাওয়া গেলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করা হবে।

প্রতিবন্ধী সংগঠন ডিপিডিও নড়াইল জেলা শাখার বিগত কমিটির সভাপতি জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রতিবন্ধী নাদিরার বিষয়টি জানার পর দুই পক্ষের মধ্যে মীমাংসার চেষ্টা করেছি। এখন পর্যন্ত কোনো সুফল হয়নি।

ভদ্রবিলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুর রহমান জানান, এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে, বিষয়টি স্পর্শকাতর সমাধানের চেষ্টা চলছে।



মন্তব্য চালু নেই