বিড়াল সহজে মরে না কেন ?
সহজে প্রাণ যায় না বিড়ালের। এ নিয়ে গবেষেকরা দীর্ঘ দিন গবেষণা চালিয়েছেন। সম্ভবত এবার তারা রহস্যের উন্মোচন করেছেন। আর সেটা হলো ভিটামিন ডি। এই ভিটামিনটির ব্যাপক উপস্থিতির কারণেই অনেক কঠিন রোগেও বেঁচে যায় বিড়াল।প্লস ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, `সূর্যকিরণ ভিটামিনের` স্বাস্থ্যগত উপকারিতা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারে বিড়াল।
ইউনিভার্সিটি অব এডিনবার্গ`স রয়্যাল স্কুল অব ভেটারিনারি স্টাডিজের গবেষকেরা গুরুতর রোগে আক্রান্ত ৯৯টি বিড়ালের রক্ত-নমুনা পরীক্ষা করে দেখেছেন, তাদের ভিটামিন ডি-এর মাত্রা অনেক বেশি। এ কারণেই মারাত্মক অসুস্থতার মধ্যেও তারা বেঁচে যায়।
ক্যান্সার, ইনফেকশন ইত্যাদি অনেক রোগ প্রতিরোধ করে ভিটামিন ডি। সূর্যকিরণ থেকে মানবদেহের ত্বক ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারে। তবে বিড়াল তাদের খাবার থেকে তা উৎপাদন করতে পারে।
——————————
বিড়াল বৃত্তান্ত
তেলাপোকা! তেলাপোকা!’ পাগলাটে এক তেলাপোকার ওড়াওড়ি দেখে ভয়ে লাফিয়েই উঠল আরশি। হঠাৎ কে যেন বীরের বেশে খপ করে ধরে ফেলল তেলাপোকাটাকে। কে আছে এমন বীর, চেনো তাকে? চারপেয়ে এই শিকারি বীর আর কেউ নয়, ওদের বাসায় থাকা ছোট্ট বিড়ালটা।
আদুরে বিড়ালগুলো কখনো কখনো এমন শিকারিও হয়ে ওঠে। ছোট পোকামাকড়গুলোকে খপ করে চেপে ধরে। ফিতা, দড়ি বা লম্বা কোনো তার নিয়ে খেলতে পছন্দ করে ওরা। জেনে অবাক হবে, স্কুলপড়ুয়া আকাশের বিড়ালটার খুব পছন্দের খেলনা হলো হেডফোনের লম্বা তার!
বল গড়িয়ে নিয়ে খেলতে ভালোবাসে বিড়ালেরা। শোনা যায়, একটা বিড়াল নাকি নিজের উচ্চতার পাঁচ গুণ উচ্চতায় লাফ দিতে পারে। খেলতে খেলতে আবার খানিকক্ষণের জন্য দুই পায়ে ভর করেই দাঁড়িয়ে যেতে পারে ওরা। অবাক করা ব্যাপার হলো, একটা বিড়াল ঘণ্টায় ৩০ মাইল গতিতে দৌড়াতে পারে! ওদিকে দ্রুততম মানুষ উসাইন বোল্টের গতি হলো ঘণ্টায় ২৭ মাইলের একটু বেশি!
আদুরে কোনো বিড়াল তোমার পায়ের ওপর হঠাৎ ঝাঁপিয়ে পড়লে ভয় পেয়ো না যেন। তোমার সঙ্গে খেলতে কিংবা তোমার আদর পেতে কোনো বিড়ালছানা এমনটা করতেই পারে। তোমার কাছে খাবারও চাইতে পারে ক্ষুধার্ত কোনো বিড়াল। দুধ, মাছ, মাংস কিংবা ভাত খেতে দিও ওকে। কোনো কোনো বিড়াল আবার মুড়ি খেতেও পছন্দ করে! অবশ্য চকলেট, আঙুর আর পেঁয়াজ, রসনু, কাঁচা আলু বা কাঁচা টমেটো কখনোই দিতে হয় না ওদের।
খেলাধুলা, শিকার আর খাওয়াদাওয়া, শুধু এটুকু করলেই কি আর চলে বলো? ঘুমাতেও তো হবে। দিনে ১৩-১৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ঘুমিয়েই কাটাতে পারে একটি বিড়াল। কেন এত ঘুমকাতুরে ওরা? আসলে শক্তি সঞ্চয় করতেই ঘুমাতে হয় ওদের। নিজের শরীরটাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতেও দিনের একটা লম্বা সময় ব্যয় করে ওরা।
টম অ্যান্ড জেরি তো তোমরা সবাই দেখেছ, তাই না? টম একটু বোকাসোকা হলেও সত্যিকারের বিড়ালেরা কিন্তু এত বোকা নয়। ইঁদুরের উৎপাত থেকে বাঁচতে অনেক জায়গাতেই বিড়াল রাখা হয়। এমনকি ডিজনিল্যান্ডে নাকি প্রতি রাতে অনেকগুলো বিড়াল ছেড়ে দেওয়া হয় ইঁদুরজাতীয় প্রাণীর যন্ত্রণা এড়াতে। রাতের অন্ধকারে বিড়াল যে তোমাদের চেয়ে অনেক ভালো দেখতে পায়, তা নিশ্চয়ই জানো? বিড়ালের শোনার ক্ষমতাও মানুষের চেয়ে অনেক বেশি। ঘ্রাণ শুঁকে অনেক কিছু বুঝতে পারে এই চারপেয়েরা।
স্বাভাবিকভাবে একটা বিড়ালের ওজন চার-পাঁচ কেজি হয়ে থাকে। তবে পোষা বিড়ালদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ওজনের বিড়ালটার ওজন কত জানো? ২১ কেজির চেয়েও কিছুটা বেশি! বিড়াল তার গলা দিয়ে নানান রকম আওয়াজ করতে পারে। তবে মিউ মিউ শব্দ করে ওরা শুধু মানুষের সঙ্গেই যোগাযোগ করে। বিড়ালদের ছোট্ট হৃৎপিণ্ডটা তোমার হৃৎপিণ্ডের চেয়ে অনেক দ্রুতগতিতে চলে। আর বিড়ালকে যে বাঘের মাসি বলা হয়, তা-ও তো জানো নিশ্চয়ই?
ভেবো না বিড়ালের প্রতি ভালোবাসা তোমার একার। যুক্তরাষ্ট্রের একসময়কার রাষ্ট্রপতি আব্রাহাম লিঙ্কনও কিন্তু বিড়াল পছন্দ করতেন। বিড়াল পোষে আর ভালোও বাসে, পৃথিবীতে এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়।
মন্তব্য চালু নেই