বিশ্বের সবচেয়ে বীভৎস চিড়িয়াখানা

চিড়িয়াখানা ব্যাপারটাই খুব একটা স্বাভাবিক নয়। মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য কিছু প্রাণীকে খাঁচায় ঢুকিয়ে রাখা হয়। প্রতিদিন নিয়ম করে মানুষ এসে এই প্রাণীদের দেখে যায় এবং তাদের আনন্দের খোরাক খুঁজে পায়। মজার বিষয় হলো, মানুষ নিজেও প্রাণী এবং টাকা দিয়ে টিকিট কেটে এই মানুষই আবার অন্য আরেক খাঁচাবদ্ধ প্রাণীকে দেখতে যাচ্ছে। যাই হোক, ধনী রাষ্ট্রই হোক আর গরীব রাষ্ট্রই হোক জনগণের মনোরঞ্জনের জন্য একটি চিড়িয়াখানা প্রতিটি দেশে থাকবেই। যেমন ধরুন যুদ্ধবিদ্ধস্ত ইরাক কিংবা ফিলিস্তিনের কথাই। ধনী দেশগুলোর চিড়িয়াখানাগুলোর অবস্থা বেশ ভালো। নিয়মিত খাবার এবং পরিচর্যার কারণে এই চিড়িয়াখানার প্রাণীদের অবস্থা বেশ ভালোই থাকে। কিন্তু গরীব বা যুদ্ধ বিদ্ধস্ত দেশগুলোর চিড়িয়াখানার অবস্থা কিন্তু বেশ কাহিল। যেমনটা ফিলিস্তিনের গাজার একটি চিড়িয়াখানা। দুর্দশা আর অব্যবস্থাপানার কারণে খান ইউনুস নামের চিড়িয়াখানাটিকে বলা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বীভৎস চিড়িয়াখানা।
TIGERচিড়িয়াখানাটির মালিক মুহাম্মদ আওয়াইদা চিড়িয়াখানার এই বেহাল দশার জন্য দায়ি করছেন ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের আভ্যন্তরীন যুদ্ধাবস্থাকে। তার দাবি, যুদ্ধের কারণে প্রাণীদের দেখাশোনার জন্য এবং খাওয়ানোর জন্য মানুষ পাওয়া যায় না। ২০০৭ সালের দিকে তিনি চিড়িয়াখানাটি শুরু করেন। পরের বছরই ইসরায়েলি বাহিনী হামাসকে লক্ষ্য করে সেনা অভিযান চালানো শুরু করে গাজাতে। তখন টানা তিন সপ্তাহ তিনি চিড়িয়াখানায় যেতে পারেনি তিনি। আর এ কারণে অনেক প্রাণীই তখন মারা যায়।
LIONগত গ্রীস্মে ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধে এক হাজার ৯৬০জন ফিলিস্তিনি এবং ৬৭ জন ইসরায়েলি মারা যায়। এই ঘটনায় আবারও হুমকির মুখে পরে চিড়িয়াখানাটি। বানর থেকে শুরু করে কুমির পর্যন্ত মারা যায় এসময়। একটি আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থার প্রতিনিধি সম্প্রতি খান ইউনুস চিড়িয়াখানায় সরেজমিনে ঘুরে আসেন। সংস্থায় ফিরে আসার পর তিনি যে রিপোর্ট দেন তাতে দেখা যায়, গোটা চিড়িয়াখানায় সুস্থ কোনো প্রাণীই নেই। সবচেয়ে হিংস্র প্রাণীটিও খেতে না পেয়ে নির্জীব হয়ে মাটিতে শুয়ে আছে। নতুন করে সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত চিড়িয়াখানার ৬৫টি প্রাণী ইতোমধ্যেই মারা গেছে। এরমধ্যে আছে অস্ট্রিচ, বানর, কচ্ছপ,হরিন, সিংহ এবং বাঘ।
BANORযুদ্ধাবস্থার কারণে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না চিড়িয়াখানার প্রতি যত্নবান হওয়া। তবুও পশ্চিমতীর কর্তৃপক্ষ মাঝে মধ্যে চিড়িয়াখানাটিতে খাবার এবং লোকবল দিয়ে সহায়তা করে থাকে। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, বর্তমান অবস্থা যদি দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত থাকে তাহলে একটা সময় সব প্রাণীই মারা যাবে এবং চিড়িয়াখানাটিকে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন এর মালিক।



মন্তব্য চালু নেই