বিশ্বের দ্বিতীয় উঁচু মিনারের মসজিদ তৈরি হচ্ছে টাঙ্গাইলে

বিশ্বের দ্বিতীয় উঁচু মিনারবিশিষ্ট মসজিদ তৈরি হচ্ছে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামে। মসজিদটির ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। বিশ্ব মসজিদের ইতিহাসে জায়গা নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টি করে গিনেস রেকর্ড বুকে নাম লেখাবে নির্মাণাধীন ঐতিহাসিক এ মসজিদটি।

বিশ্বের সর্বোচ্চ মিনারটি মরক্কোর কাসাব্লাংকায় দ্বিতীয় হাসান মসজিদে অবস্থিত। এর উচ্চতা ৬৮৯ ফুট (২১০ মিটার), যা ৬০ তলা ভবনের সমান। তবে এটি ইটের তৈরি নয়। ভারতের দিলি্লর কুতুব মিনার বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু, ইটের তৈরি মিনার। এটির উচ্চতা ৭৩ মিটার বা ২৪০ ফুট। ৩৭৯টি সিঁড়ি রয়েছে এতে।

মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে মসজিদটি নির্মিত হচ্ছে। ২০১ গম্বুজ মসজিদের পাশেই ইটের তৈরি ৪৫১ ফুট উচ্চতার (১৩৮ মিটার, ৫৭ তলা উচ্চতা সমান) বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম মিনারটি হবে বিশ্বের সবচাইতে উঁচু মিনার।

টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা সদর থেকে সাত কিলোমিটার পশ্চিমে ঝিনাই নদীর তীরে অবস্থিত সুদৃশ্য এ মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু করা হয়েছে ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি। কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের মা রিজিয়া খাতুন। আশা করা হচ্ছে, ২০১৭ সালের মধ্যে মসজিদের বাকি কাজ শেষ হবে এবং ২০১৮ সালের প্রথম দিকে পবিত্র কাবা শরিফের ইমামের ইমামতির মাধ্যমে মসজিদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।

মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ স্ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের ভাই নির্মাণাধীন এ মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক মো. হুমায়ুন কবির জানান, নির্মাণাধীন অবস্থাতেই এই ২০১ গম্বুজ মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় শুরু হয়েছে। প্রায় ১৫ বিঘা জমির ওপর এ মসজিদ কমপ্লেক্সে থাকবে অত্যাধুনিক সব সুবিধা। মিহরাবের দুই পাশে লাশ রাখার জন্য হিমাগার তৈরি করা হবে। পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ার পরও মসজিদটিতে শতাধিক ফ্যান লাগানো হবে। মসজিদের ছাদের মাঝখানে থাকবে ৮১ ফুট উচ্চতার একটি বড় গম্বুজ, এর চারদিকে থাকবে ১৭ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ২০০টি গম্বুজ।

মূল মসজিদের চার কোণে থাকছে ১০১ ফুট উচ্চতার চারটি মিনার। পাশাপাশি থাকবে ৮১ ফুট উচ্চতার আরও চারটি মিনার। ১৪৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪৪ ফুট প্রস্থের দ্বিতল মসজিদটিতে নামাজ আদায় করতে পারবেন একসঙ্গে প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লি। দেয়ালের টাইলসে অঙ্কিত থাকবে ৩০ পারা পবিত্র কোরআন শরীফ। যে কেউ বসে বা দাঁড়িয়ে মসজিদের দেয়ালের কোরআন শরীফ পড়তে পারবেন। আর মসজিদের প্রধান দরজা তৈরিতে ব্যবহার করা হবে ৫০ মণ পিতল। আজান প্রচারের জন্য মসজিদের দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হবে উঁচু মিনারটি। উচ্চতার হিসেবে মিনারটি হবে প্রায় ৫৭ তলার সমান অর্থাৎ ৪৫১ ফুট। মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হচ্ছে পৃথক দুটি পাঁচতলা ভবন।

সেখানে থাকবে দুস্থ নারীদের জন্য বিনামূল্যের হাসপাতাল, এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা। মসজিদের উত্তর-পশ্চিম পাশে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে দেশি-বিদেশি অতিথিদের জন্য। পশ্চিমের ঝিনাই নদীর তীর থেকে এ মসজিদ পর্যন্ত সিঁড়ি করা হবে, একটি সেতু নির্মাণ করা হবে নদীর ওপর। চারপাশে থাকবে দেশি-বিদেশি ফুলের বাগান।

হুমায়ুন কবির আরও জানান, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা সদর থেকে সাত কিলোমিটার পশ্চিমে ঝিনাই নদীর তীরে অবস্থিত সুদৃশ্য এ মসজিদের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি। কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের মা রিজিয়া খাতুন। ২০১৭ সালের শেষ দিকে এর নির্মাণকাজ শেষ হবে এবং ২০১৮ সালের প্রথম দিকে পবিত্র কাবা শরীফের ইমামের ইমামতির মাধ্যমে মসজিদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ লক্ষ্যে এখানে নির্মাণ করা হয়েছে দুটি হেলিপ্যাড। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা, শৈল্পিক স্থাপনা হিসেবে এ মসজিদটি অনন্য বৈশিষ্ট্যের প্রতীক হবে।’



মন্তব্য চালু নেই