বিশ্বের আশ্চর্য কিছু রেল সফর!
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে রেলপথের বিস্তীর্ণ জাল। রেলযাত্রায় ঝুঁকি যেমন আছে, মনোরম সফরের অভিজ্ঞতাও কম নেই। দেখে নেয়া যাক বিশ্ব রেলমানচিত্রে থাকা কিছু আশ্চর্যজনক রেল ক্রসিং।
১) ন্যাপিয়ের-জিসবর্ন রেলওয়ে, নিউ জিল্যান্ড: নিউজিল্যান্ডের ন্যাপিয়ের থেকে জিসবর্ন সংযোগকারী রেলপথ জিসবর্ন বিমানবন্দরের মূল রানওয়ের ওপর দিয়ে গেছে। এই পথে ট্রেন চলাচল করার আগে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের থেকে ছাড়পত্র নেয়া আবশ্যক। ব্যস্ত বিমানবন্দরের ভিতর দিয়ে ১৯৩৯ সালের স্টিম ইঞ্জিনে টানা ট্রেন ছুটে চলার দৃশ্য নিঃসন্দেহে বিরল।
২) ট্রেন আ লাস ন্যুবেস, আর্জেন্তিনা: স্প্যানিশ ভাষায় ট্রেনের নামের অর্থ, ‘মেঘমুলুকের ট্রেন’। আর্জেন্তিনার সাল্তা প্রদেশের মধ্যে চলাচলকারী ট্রেনটি অন্যতম পর্যটক আকর্ষণ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৩,৮৫০ ফিট ওপরের এই রেলপথ বিশ্বের তৃতীয় উচ্চতম। দেশের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের সঙ্গে আন্দেস পর্বতমালার কোলে প্রতিবেশী রাষ্ট্র চিলির সহ্গে সংযোগ ঘটিয়েছে এই রেলপথ। এ যাত্রায় রয়েছে মোট ২৯টি সেতু, ২১টি সুড়ঙ্গ, ১৩টি ভায়াডাক্ট, ২টি স্পাইরাল এবং ২টি জিগজ্যাগ।
৩) টানেল অফ লাভ, ইউক্রেন: ইউক্রেনের ক্লিভ্যান প্রদেশের এই রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য মাত্র ৩ কিমি। ট্রেনটি দিনে তিন বার স্থানীয় ফাইবারবোর্ড কারখানায় কাঠ বয়ে নিয়ে যায়। গোটা যাত্রাপথ সবুজে মোড়া। এই সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করতে ট্রেনে সওয়ার হন বিশ্বের তাবড় আলোকচিত্রী। এই রেলরুট প্রেমিক যুগলদের কাছেও অত্যন্ত জনপ্রিয়।
৪) ট্র্যান্স-সাইবেরিয়ান রেল, রাশিয়া: সাইহেরিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার পূর্ব সীমান্ত তথা জাপান সাগরতটের যোগাযোগ ঘটাতে তৈরি হয়েছিল বিশ্বের দীর্ঘতম রেলপথটি। এই পথে এসে মিশেছে মঙ্গোলিয়া, চীন ও উত্তর কোরিয়ার রেল সড়ক। ১৯১৬ সালে মস্কোর সহ্গে ভ্লাদিভস্তকের সংযোগ ঘটাতে রেলপথটি চালু হয়। এখনও তার সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া চালু রয়েছে।
৫) দ্য ডেথ রেলওয়ে, থাইল্যান্ড: ব্যাংকক, থাইল্যান্ড ও মায়ানমারে ইয়াঙ্গনের (অতীতের রেঙ্গুন) মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করতে তৈরি হয়েছিল দ্য বার্মা রেলওয়ে। ৪১৫ কিমি দীর্ঘ রেলপথ নির্মাণে অংশগ্রহণ করেছিলেন এক লাখের বেশি শ্রমিক এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মিত্রবাহিনীর কয়েক হাজার যুদ্ধবন্দি। প্রকল্প চলাকালীন প্রাণ হারান মোট ৯০,০০০ শ্রমিক এবং ১৬,০০০ যুদ্ধবন্দি।
এই মর্মান্তিক ঘটনা কেন্দ্র করেই পরিচালক ডেভিড লিন তাঁর সুপারহিট ছবি ‘দ্য ব্রিজ অন দ্য রিভার কোয়াই’ তৈরি করেন। ব্যাংককের উত্তর-পশ্চিমে কাঞ্চানাবুরি বেড়াতে এসে অনেকেই ঐতিহাসিক রেলপথের অবশিষ্ট অংশে ট্রেনসফর করেন। খাড়া পাহাড়ের গা ঘেঁষে নড়বড়ে কাঠের সেতুর ওপর দিয়ে এই বিপজ্জনক যাত্রার অভিজ্ঞতা স্বভাবতই রোমাঞ্চকর।-এই সময়
মন্তব্য চালু নেই