বিশ্বমানবতার কবি ‘আল্লামা ইকবাল’
আল্লামা শব্দের অর্থ শিক্ষাবিদ সেই থেকে ড. মোহাম্মদ ইকবাল তিনি ‘আল্লামা ইকবাল’ নামে সমাদৃত সারাবিশ্বে। ভারতীয়উপমহাদেশের বিখ্যাত কবি, দার্শনিক, ইসলামী চিন্তাবিদ ও রাজনীতিবিদ তিনি।
আজকের এই দিনেই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে পরলোকগমন করেন ইসলামি রেনেসাঁর এই অগ্রদূত। ১৯৩৮ সালের ২১ এপ্রিল ৬৫ বছর বয়সে পৃথিবীর বুক থেকে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার জন্ম হয়েছিল ১৮৭৭ সালের ৯ নভেম্বরপাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের শিয়ালকোটে।
আল্লামা ইকবাল উর্দু, ফার্সি বিচিত্র ভাষায় কবিতা লিখেছেন। তাঁর ফার্সি ও উর্দু কবিতা আধুনিক যুগের ফার্সি ও উর্দু সাহিত্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ইকবাল তাঁর ধর্মীয় ও ইসলামের রাজনৈতিক দর্শনের জন্যও বিশেষভাবে সমাদৃত ছিলেন। তাঁর একটি বিখ্যাত চিন্তা দর্শন হচ্ছে ভারতের মুসলমানদের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন। এই চিন্তাই বর্তমানপাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছে।
ইকবাল তাঁর কাব্য প্রতিভার স্বীকৃতি পান তাঁর শিক্ষক সাইয়িদ মীর হাসানের কাছ থেকে। ১৮৯২ সালে ইকবাল স্কটিশ মিশন কলেজ হতে তাঁর পড়াশোন শেষ করেন। পড়ে লাহোরের সরকারী কলেজে ভর্তি হয়ে দর্শন, ইংরেজি ও আরবি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেন। এখান থেকে তিনি স্বর্ণ পদক নিয়ে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। একই সাথে ১৮৯৯ সালে যখন তিনি মাষ্টার্স ডিগ্রী লাভ করেন মহাকালের এই জ্ঞান পুরোধা।
অপরদিকে আইন বিষয়েও অগাধ পাণ্ডিত্য দেখিয়েছেন ইকবাল। ১৯০৫ সাল হতে লন্ডনে আইন বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করে, তিন বৎসরের আইনের ডিগ্রী লাভ করেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লিঙ্কনস্ ইন হতে। আর ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন জার্মানীর মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয় হতে।
আল্লামা ইকবাল মৃত্যুঞ্জয়ী হয়ে আছেন তার কয়েকটি কবিতা ও রচনার জন্য। এরমধ্যে “আসরার ই খুদি, শিকওয়া ও জবাবে শিকওয়া, দ্যা রিকনস্ট্রাকশন ওফ রিলিজিয়াস থট ইন ইসলাম, বাআল ই জিবরাইল, জাভেদ নামা,” অত্যন্ত গভীর দার্শনিক ভাব সমৃদ্ধ রচনার মর্যাদা পেয়েছে।
ইকবাল ইউরোপে কতটা জনপ্রিয় ছিলেন তা বুঝা যায় জার্মানির হাইডেলবার্গের একটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে ইকবালের নামানুসারে। অপরদিকে তাঁর ফার্সি সৃজনশীলতার জন্য ইরানেও তিনি ছিলেন সমধিক প্রসিদ্ধ, তিনি ইরানে ‘ইকবাল-ই-লাহোরী’ নামে পরিচিত।
মন্তব্য চালু নেই