বিশ্বজুড়ে অপরাধের জন্য মর্মান্তিক যে সকল শাস্তি
শাস্তির নির্দয়তা কিংবা অপরাধের নির্দয়তা নিয়ে বিশ্বজুড়ে এখনো উত্তপ্ত বিতর্ক হয়ে থাকে। এখানে বর্ণিত শাস্তিগুলো সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে এখনো যুক্তরাষ্ট্র, চিন, সৌদি আরব কিংবা ইরানে চালু আছে। এসব শাস্তির সবগুলোই যে অপরাধীর মৃত্যু ডেকে আনে, তা নয়। অনেক সময় এগুলো দীর্ঘমেয়াদে শারিরিক ও মানসিক প্রভাব বিস্তার করে। এটা অনুধাবন করার সময় এসেছে যে, আমরা এখনো শাস্তির এইসব পদ্ধতি ব্যবহার করবো কিনা।
খুঁটিতে পুড়িয়ে হত্যা:
মধ্যযুগে বিশ্বাস-ঘাতকতা কিংবা ভিন্ন ধর্ম বা মত প্রদর্শনের মতো অপরাধের জন্য জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হতো। ইংল্যান্ডে বিশ্বাস-ঘাতকতার শাস্তি হিসেবে যখন পুরুষকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতো, তখন নারীকে পুড়িয়ে মারা হতো। কিছু কিছু বিচারক বা শাস্তি প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপরাধীকে বাঁচিয়ে রেখে পোড়াতো, যেন সে বেশি কষ্ট পায়। এইরকম শাস্তির জ্বলন্ত উদাহরণ জোয়ান অব আর্ক।
সেদ্ধ করা:
তাপ দিয়ে হত্যা করার আরেকটি উদাহরণ হলো সেদ্ধ করা। এই পদ্ধতিতে অপরাধীকে ফুটন্ত আলকাতরা, তেল কিংবা পানির ওপর উল্টো করে ঝুলিয়ে দেওয়া হতো। এরপর ধীরে ধীরে তাকে সেই ফুটন্ত তরলে চোবানো হতো।
শিরোচ্ছেদ:
বর্তমান সময়ে কড়িকাঠ সাধারণত কালি মন্দিরে দেখতে পাওয়া যায়, পশু বলি দেওয়ার জন্য। কিন্তু কড়িকাঠে অপরাধীর শিরোচ্ছেদের মাধ্যমে শিরোচ্ছেদ একসময় খুবই প্রচলিত ছিল। এখনো সৌদি আরবসহ বিভিন্ন আরব দেশে এই পদ্ধতি চালু আছে। এটা বিখ্যাত হয়ে ওঠে ফরাসি বিপ্লবের সময়। যখন সহস্র অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড দ্রুত কার্যকর করার প্রশ্ন সামনে এলো, তখনই গিলোটিনে হত্যা প্রিয় হয়ে ওঠে ফরাসিদের কাছে। এতে দ্রুত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় বলে, এটাকে অনেকখানি মানবিক শাস্তিও বলা হতো। অন্তত পুড়িয়ে কিংবা ফুটন্ত তরলে চুবিয়ে মারার চেয়ে এটাকে আমরা মানবিক বলতেই পারি।
ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা:
মানুষকে হত্যা করার এক অবিশ্বাস্য নিষ্ঠুর পদ্ধতি হলো ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করা। মোটা কাঠ দিয়ে অংকের যোগ চিহ্নের মতো ক্রুশ তৈরি করা হয়। এরপর অপরাধীর হাত পা সেই কাঠে পেরেক দিয়ে বিদ্ধ করা হয়। এরপর ক্রুশে এমন মর্মান্তিকভাবে বিদ্ধ থাকা মানুষটিকে বর্শা গেঁথে কিংবা ঢিল মেরে হত্যা করা হয়। পৃথিবীর ইতিহাসে ক্রুশবিদ্ধের সবচেয়ে আলেচিত ঘটনা যীশুখ্রিস্টের ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার কাহিনী।
পাঠক, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে এমন আরো অনেক পদ্ধতি আছে। সেগুলো নিয়ে আমরা আবার আপনাদের কাছে ফিরে আসবো।
সূত্র: ললওত।
মন্তব্য চালু নেই