বিশ্বকাপে দ্বিতীয় রাউন্ডের স্বপ্ন বাংলাদেশের
আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের দামামা বেজে উঠতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। বিশ্বকাপের পূর্ব মুহুর্তে শেষ প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছে অংশ নেয়া দলগুলো। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে তারুণ্য নির্ভর একটি দল নিয়েই খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। টাইগারদের ঘোষিত ১৫ সদস্যের দলে ৯ জনেরই বিশ্বকাপে খেলার অভিজ্ঞতা নেই।
কিন্তু তাতে কি? সেই অনভিজ্ঞ দল নিয়েই বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। বিশ্বকাপের দল নিয়ে বুধবার মিরপুর শেরে-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন কথাই বলেছেন তিনি।
বিসিবির ঘোষিত বিশ্বকাপে দলের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘ নির্বাচকরা আমার মত জানতে চেয়েছে। এতে আমি খুশি। দল নিয়েও খুশি। সব ধরনের খেলোয়াড়ই বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পেয়েছে। সবাই ভালো খেলার চেষ্টা করবে।’
বিশ্বকাপের আগে দলের সেরা খেলোয়াড়দের চোট নিয়ে উদ্বিগ্ন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘চোট নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়, তবে কিছুটা চিন্তিত। দলে তারাই মূল খেলোয়াড়। তাদের দ্রুত সুস্থতার জন্য ফিজিও থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সবাই কাজ করছেন। যেহেতু বিশ্বকাপ শুরু হতে এখনও এক মাসেরও বেশি বাকি আছে। আশা করি এ সময়ের মধ্যে তারা সুস্থ হয়ে উঠবেন।’
অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের লক্ষ্য কী জানতে চাইলে হাথুরুসিংহে বলেন, ‘কষ্টকর হলেও দলের প্রাথমিক লক্ষ্য দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়া। বাকিটা এরপরেও ভাবা যাবে। আসলে, বিশ্বকাপ খেলা সব সময়ই চ্যালেঞ্জের।’
বিশ্বকাপ দলে সৌম্য সরকারের যায়গা পাওয়া বিষয়ে প্রধাস কোচ বলেন, ‘সৌম্য দারুণ ব্যাটিং করেন। টপ অর্ডারের এক থেকে সাত নম্বর জায়গায় ব্যাট করতে পারে। ভালো একজন স্পিনারও সে। কন্ডিশনের কথা ভেবেই তাকে নেয়া হয়েছে। প্রথমে আমরা তার ব্যাট থেকে ভালো কিছু আশা করব। তারপর বোলিংয়েও যদি কিছু করতে পারে সেটা হবে বোনাস, যদি সে সুযোগ পায়। তবে তার ব্যাটিংটাই আগে বিবেচনায় থাকবে।’
জুবায়েরের বিষয়ে জানতে চাইলে মাশরাফিদের প্রধান গুরু বলেন, ‘হ্যা, জুবায়েরকে আমি দলে চেয়েছিলাম। আপনারা জানেন অস্ট্রেলিয়াতে লেগ স্পিন অনেক বেশি কার্যকর। আমার গত চার বছরের অভিজ্ঞতায় বলতে পারি, সেখানকার প্রতিটি প্রাদেশিক দলেই লেগ স্পিনাররা দারুণ বোলিং করে থাকেন। এ কারণে দলে একজন লেগ স্পিনার আমি চেয়েছিলাম। সে আমদের পরিকল্পনাতেও ছিল। তবে, আমাদের হাতে যেহেতু অন্য অপশন ছিল, সে কারণে তাকে দলে নেয়া হয়নি।’
বিশ্বকাপের আগে দুই সপ্তাহের প্রস্তুতি কি দলের জন্য যথেষ্ট মনে করছেন এমন প্রশ্নে হাতুরুসিংহে বলেন, ‘আসলে দুই সপ্তাহ নয়। দুই সপ্তাহ আমরা এখানে অনুশীলন করবো। তবে, আমাদের প্রধান ফোকাস থাকবে ব্রিসবেনের দিকে। ব্রিসবেনে গিয়ে আরো ১৪ দিনের মতো অনুশীলন করার সুযোগ আছে। কন্ডিশন বোঝার জন্যই তখন আমরা অনুশীলনে জোর দেবো। আসলে এশিয়ার সব দলগুলোর জন্য কন্ডিশন একটা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করবে।’
প্রিমিয়ার লিগে খেলে অনেকে বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েছেন, লিগের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট কি না, ‘ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে কিছু খেলোয়াড় দারুণ পারফর্ম করেছেন, আমি তাতে সন্তুষ্ট। দল ঘোষণার আগে প্রধান নির্বাচক থেকে শুরু সবাই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কোচিং স্টাফদের নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেই দল নির্বাচন করেছেন তারা।’
নিজের দেশ শ্রীলংকা। বিশ্বকাপে নিজ দেশের বিপক্ষেই দল পরিচালনা করতে হবে হাথুরুসিংহেকে। এ কারণেই বিশ্বকাপে শ্রীলংকার বিপক্ষে টাইগারদের ম্যাচ নিয়ে তিনি বলেন, ‘শুধু শ্রীলংকা কেন, সব বড় দলগুলোর বিপক্ষে খেলার জন্য আমি মুখিয়ে আছি। তবে শ্রীলংকার বিপক্ষে খেলার জন্য আমার অবশ্যই আলাদা পরিকল্পনা থাকবে। আমরা প্রতিটি দলের বিপক্ষেই জয়ের জন্য মাঠে নামবো।’
বাউন্সি উইকেট ও পেস বোলিং নিয়ে তিনি বলেন, ‘সবার মতো অস্ট্রেলিয়ার বাউন্সি উইকেট নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। কারণ অস্ট্রেলিয়াতে আমাদের খেলার খুব বেশি অভিজ্ঞতা নেই। ফাস্ট বোলারদের অনেক সুযোগ থাকবে অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে ভালো করার। উপমহাদেশে তারা তেমন সুযোগ পায় না।’
অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ বাংলাদেশের জন্য কতটা চ্যালেঞ্জ, ‘বিশ্বকাপ সবার জন্য চ্যালেঞ্জিং শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়। আমরা যদি নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেলতে পারি।’
বিশ্বকাপের আগে সাকিবের বিগ ব্যাশ লিগে খেলতে যাওয়াটা দলের জন্য উপকার হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিশ্বকাপের আগে সাকিব অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশনে খেলছে, এটা দলের জন্য অবশ্যই ভালো। কারণ সাকিব বিশ্বকাপের আগেই সেখানকার কন্ডিশনের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছে।’
মন্তব্য চালু নেই