বিপুল সোনায় পরিপূর্ণ বুলগেরিয়ার সকল নদী

ইন্দো-ইউরোপিয়ান উপজাতি থেরাসিয়ানদের গুপ্তধনের ভান্ডার থেকে মূল্যবান সোনার অলঙ্কার এবং সোনার তৈরি অন্যান্য বস্তু আবিষ্কৃত হওয়ার ফলে বুলগেরিয়ায় সোনার আধিক্য দেখা দিয়েছে। বিগত বছর গুলো থেকে এখনও পর্যন্ত বুলগেরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলেই ওই খনন কাজ চালানো হয়ে আসছে। বুলগেরিয়ানরা খনন ছাড়াও সোনার খোঁজে দেশটির নদীগুলোতে অনুসন্ধান চালায়। সংবাদসংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে বুলগেরিয়ানদের এই সোনা শিকারের বিষয়টি উঠে আসে।

ঐতিহাসিকগণ তথ্য দিয়েছেন, খ্রিষ্টপূর্ব ৪৩১ থেকে ৪২৪ পর্যন্ত থেরাসিয়ানদের বাস ছিল বুলগেরিয়ার ঐ অঞ্চলে। ভারতীয় এবং ইউরোপিয়ানদের নিয়ে গঠিত ওই যৌথ উপজাতি গোষ্ঠি সেই সময় ইউরোপের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে ছড়িয়ে পরেছিল। এর ধারাবাহিকতায় বুলগেরিয়াতেই তাদের বেশিরভাগ বসতি গড়ে ওঠে। থেরাসিয়ানদের সিউথোপলিস নামের একটি শহরও গড়ে ছিল ওখানে। তারা তাদের মহামূল্যবান সোনার অলঙ্কার এবং আসবাবের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। মূল্যবান স্বর্ণালঙ্কার ছাড়াও গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় বাসন কোসনও তারা সোনা দিয়ে তৈরি করতেন। আর সেই বিপুল সোনার ভান্ডার এখন বুলগেরিয়ায় উন্মুক্ত।

বুলগেরিয়ায় ২০০৯ সালের পর থেকে নদী বা অন্য কোনো উৎস থেকে স্বর্ণ সংগ্রহকে বৈধতা দিয়েছেন সরকার। বুলগেরিয়ার নদ নদীগুলোতে বেশির ভাগই অনুসন্ধান চালিয়ে আসছে দেশটির মানুষ। ব্যক্তিগত বা দলবদ্ধভাবে চলে এই সোনা সংগ্রহের কাজ। জরিপের হিসেব মতে, প্রায় ১৫০০ সোনা শ্রমিক এই সোনা সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত। অনেকের প্রধান পেশাই হল এই সোনা সংগ্রহ। কেউ কেউ তো ব্যক্তিগত সোনা উত্তোলন এসোশিয়েশন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠা করেছেন। আর এভাবেই গত কয়েকবছরের সোনা সংগ্রহের ফলে দেশে সোনার আধিক্য দেখা দিয়েছে। এত বিপুল পরিমান সোনা সংগ্রহরের ফলে পুরো দেশই যেন সোনার খনিতে পরিনত হয়েছে।

গত আগস্টে প্রকাশিত এক সরকারি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুলগেরিয়ার প্রায় প্রতিটি নদীই সোনা বহন করছে। কিন্তু তা শিল্প উত্তোলনের ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করার মত যথেষ্ঠ নয় বলেও জানিয়েছে ওই সরকারি প্রতিবেদন। তাই ব্যক্তিগত উদ্যোগেই চলছে তা সংগ্রহের কাজ।

সোনা পানির চেয়ে ১৯ গুন ভারি। তাই তা নদীর স্রোতে ভেসে যেতে পারেনা। তাই বর্ষার সময় নদীর পানি দূ’কুল ছাপিয়ে ওপর দিয়ে বয়ে গেলে এই সোনা গাছের শেকরের নিচে, পাথরের নিচে বা গর্তে আটকে থাকে। ফলে তা সহজেই সংগ্রহ করা যায়। বুলগেরিয়ানরা শুধুমাত্র বর্ষাকালই নয়। বরং সারা বছরই তারা সোনা সংরহ করে যাচ্ছেন ।



মন্তব্য চালু নেই