বিধবাকে ৬ দিন ধরে নৌকায় ধর্ষণ!

অপরহরণের পর ছয় দিন ধরে নৌকায় আটকে রেখে বাগেরহাটের রামপালে এক বিধবা নারীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে দুর্বৃত্তরা। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে পুলিশ।
বুধবার দুপুরে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ওই নারীর ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়।
মঙ্গলবার রাত ২টায় ধর্ষণের শিকার ওই নারীর দেবর বাদী হয়ে রামপাল থানায় অজ্ঞাতনামা চার যুবকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেছেন। তবে পুলিশ ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত কাউকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
ধর্ষিতা জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রামপাল উপজেলার মল্লিকেরবেড় ইউনিয়নের বড় সন্নাসী ফুলতলা পাড়া গ্রাম থেকে তিনি ও তার দেবর পার্শ্ববর্তী ডাকরা গ্রামে মহানামযজ্ঞে যান। সেখানে রাত ১০টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে আসলে অন্ধকারে ওঁৎ পেতে থাকা কয়েক যুবক তাকে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বাধা দিলে ওই যুবকরা তার দেবরকে মারধর করে তাকে তুলে নদীতে একটি নৌকায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তারা পার্শ্ববর্তী কুমারখালী গ্রামে তার এক বোনের বাড়িতে রেখে আসে। বিষয়টি তিনি যাতে কাউকে না জানাতে না পারেন সেজন্য রাত থেকেই ওই যুবকরা তাকে নজরবন্দি করে রাখে। মঙ্গলবার স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার নাজমুল কবীর ঝিলাম ঘটনাটি লোকমুখে জানতে পেরে গ্রামবাসী ও পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে।
এলাকাবাসী জানান, রামপালের এক জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতার ছত্রছায়ায় থাকা চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা ওই নারীকে পালক্রমে ধর্ষণের পর আটকে রাখে। ঘটনা জানার পরও ওই নেতার ভয়ে এতোদিন কেউ মুখ খুলতে সাহস পাইনি।
তবে পেড়িখালী ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম গত শনিবার জানান, এ ধরনের কোনো ঘটনা তার ইউনিয়নে ঘটেনি। পার্শ্ববর্তী এক ইউপি চেয়ারম্যান হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে বানচাল করতে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
রামপাল উপজেলার মল্লিকেরবেড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তালুকদার নাজমুল কবীর ঝিলাম জানান, ডাকরা গ্রামের কতিপয় যুবক তার ইউনিয়নের স্বামীহারা এক নারীকে অপহরণ করে গণধর্ষণ করে অবরুদ্ধ করে রেখেছে- এমন সংবাদ পেয়ে তার লোকজন সেখানে যায়। তাদের উপস্থিতি টের ওই যুবকরা পালিয়ে গেলে তাকে উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, ধর্ষণের শিকার ওই বিধবা নারীকে উদ্ধার করে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চার যুবকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। তার ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের সনাক্ত করতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।



মন্তব্য চালু নেই