বিএসএফ আতঙ্কে ঘরবাড়ি ছাড়ছে মানুষ
লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর সীমান্তে আবারো দেখা দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) আতঙ্ক। বিএসএফের লুটপাট থেকে ঘর-বাড়ি আর গরু-ছাগল রক্ষায় লাঠিসোটা হাতে টর্চ জ্বালিয়ে এলাকায় পাহারা বসিয়েছে বাসিন্দারা। কেউ কেউ বাড়িঘর ছেলে পালিয়ে যাচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিএসএফের হাতে উপজেলার চওড়াটারী গ্রামের পাঁচ বাসিন্দা গুলিবিদ্ধ হয়। এতে গুরুতর আহত হয়ে দুইজন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে আব্দুর রহিম (৩০) নামে একজন মারা যান।
ওই ঘটনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক হলেও দায় এড়িয়ে যায় বিএসএফ। ফলে কোনো রকম সমাধান ছাড়াই শেষ হয় বৈঠক।
আর এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ৪৮ ঘণ্টা পর শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আবারো বিএসএফের একটি দল বাংলাদেশের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
রাতেই সীমান্ত সংলগ্ন বানিয়াটারী, নামাটারী ও চওড়াটারী এলাকার নারী ও শিশুরা ভয়ে নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যেতে শুরু করে। এ সময় তারা লুটপাট হওয়ার ভয়ে গরু ছাগলসহ বিভিন্ন মালামালও সঙ্গে নেয়। এদিকে, নিজ নিজ বাড়িঘর রক্ষায় এলাকার পুরুষরা লাঠি-সোটা নিয়ে টর্চলাইট জ্বালিয়ে বিএসএফের প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে রাখছে।
দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন, আনোয়ারুল ইসলাম ও রহিমা বেগম জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হঠাৎ করেই বিএসএফ আমাদের গ্রামে ঢুকে জোর করে চারটি গরু ধরে নিয়ে যায়। এতে বাধা দিলে তারা আমাদের ওপর গুলি ছোড়ে। শনিবার রাতে আবারো বিএসএফ বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় গ্রামবাসী আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। অনেকে প্রাণের ভয়ে নিরাপদ স্থানে চলে যেতে থাকে।
দুর্গাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সালেকুজ্জামান প্রামাণিক বলেন, আকস্মিকভাবে বিএসএফ সদস্যরা বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে নিরীহ গ্রামবাসীর ওপর গুলি চালায়। শনিবার রাতে তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্ঠা করে। এতে গ্রামবাসী ভীত হয়ে পড়ে। ফলে নারী, শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যায়।
লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল বজলুর রহমান হায়াতী বলেন, ‘সীমান্ত নিরাপদ রাখতে বিজিবি সর্তক অবস্থানে রয়েছে। বর্তমানের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।
মন্তব্য চালু নেই