বিএনপি তাল গাছ চাইলে সংলাপ সফল হবে না : ওবায়দুল কাদের

বিএনপি যদি মনে করে সালিশ মানি, তাল গাছটা আমার। তাহলে সংলাপ সফল হবে না। তাদেরকে বাস্তবসম্মত মনোভাব নিয়ে অগ্রসর হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

রোববার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। তারা আজকে সংলাপের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে যাচ্ছেন। বিএনপি যদি গণভবনে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের সংলাপের ডাকে সাড়া দিত, তাহলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাস হয়ত ভিন্নভাবে লেখা হতে পারত।’

ইসি নিয়ে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়ায় রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত ও অভিনন্দন জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘অতীত অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। জিল্লুর রহমান সাহেব যখন সংলাপে ডেকেছিলেন, তখনো বিএনপি অংশ নিয়েছিল। এবারো বিএনপি যদি মনে করে, নালিশ মানি কিন্তু তাল গাছটা আমার, তাহলে সংলাপ সফল হবে না। তাদের রিয়েলিস্টিক (বাস্তবসম্মত) অ্যাপ্রোচ নিয়ে এগোতে হবে। তাদের বাস্তবসম্মত মনোভাব থাকতে হবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি আমাদের অভিভাবক। তিনি অনেক উদার প্রকৃতির মানুষ। অভিভাবক হিসেবে তিনি তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবেন বলে আমাদের আশা। রাষ্ট্রপতি যতই দায়িত্ব পালন করেন, বিএনপি যদি নালিশ মানি, তাল গাছটা আমার – এই নীতি নিয়ে থাকে তবে সংলাপ সফল হবে না।’

দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা এই দেশটাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। দেশের মানুষই আমাদের ক্ষমতায় উৎস। ভারতে কে ক্ষমতায় আসল, তিনি আমাদের বসিয়ে দেবেন, এই রাজনীতিতে শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন না। আমেরিকায় কে রাষ্ট্রপতি হবেন, তিনি এলে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবেন, এই রাজনীতিতেও আমরা বিশ্বাস করি না। আমাদের ক্ষমতায় উৎস দেশের জনগণ। একমাত্র জনগণই আমাদের ক্ষমতায় বসাতে পারে।’

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যারা পেছন দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার রাজনীতি করে কেউ তাদের বসিয়ে দেবে কখনো এখানকার (দেশের) কেউ, কখনো আটলান্টিকের ওপার থেকে, এই মানসিকতা হলে তাদের জনসমর্থনের পাল্লা ক্রমেই দুর্বল ও সংকুচিত হবে। এটা বিজয় দিবস প্রমাণ করেছে। আমরা তো ভাবতেও পারিনি। এত তরুণ, এত নারী, লাখ লাখ মানুষ হবে। কোথায় শুরু, কোথায় শেষ। সাড়ে ৩টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মিছিল চলেছে। এরাই আমাদের শক্তি। এবার জনগণ স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশ নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এই শক্তি দিয়েই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আবারো মুক্তিযুদ্ধের ধারায় সম্পূর্ণভাবে ফিরে আসতে শুরু করেছি। দেশের জনগণকে আর চিরাচরিত পাকিস্তানি ধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা এই বাংলাদেশে সফল হবে না। এবারকার বিজয় দিবসে স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি এটাই প্রমাণ করেছে।’

এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে রাজধানীতে লাগানা ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড অতি দ্রুত দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে নামিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি তাকে সংবর্ধনা দেওয়ার আর প্রয়োজন নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।



মন্তব্য চালু নেই