বার্সেলোনা যেন উৎসবের নগরী
আর্ক ডি ট্রিয়মফ। বার্সেলোনা গেট নামেও এখন অনেকে অভিহিত করে থাকেন। আজ থেকে প্রায় ১২৭ বছর আগে, ১৮৮৮ সালে জনৈক ভাস্কর ভিলাসেকা আই ক্যাসানোভা তৈরী করেছিলেন ঐতিহাসিক স্থাপনাটি। উদ্দেশ্যে, ১৮৮৮ সালে বার্সেলোনা ওয়ার্ল্ড ফেয়ার। যার সামনে পাথুরে মুর্তিতে খোদাই করে উৎকীর্ণ করা, বার্সেলোনা রেপ লেস ন্যাসিওন (বার্সেলোনা, ওয়েলকামস দ্য নেশন্স)।
কালক্রমে ওয়ার্ল্ড ফেয়ারের সেই গেইটটিই এখন বার্সেলোনা নগরীর প্রতীকও হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেই প্রতীকটির সামনে অংশটিও পরিণত হয়েছে বার্সেলোনার যাবতীয় সংস্কৃতি-বিনোদন কিংবা যে কোন কিছুর মিলন কেন্দ্রে। ঐতিহাসিক ত্রিমুকুট নিয়ে বার্সেলোনার প্রানকেন্দ্র এই আর্ক ডি ট্রিয়মফ স্কয়ারে এসে আনন্দ উদযাপন করবে না বার্সেলোনা, তা কী করে হয়!
চ্যাম্পিয়ন্স, সেগন #ট্রিপল৩টি সেগিয়াম ফেন্ট হিস্টোরিয়া- ছাদ খোলা বাসের গায়ে বড় বড় হরফেই লেখা এ কয়টি শব্দ, স্লোগান। তাতেই যেন বিশ্ববাসীকে শ্রেষ্ঠত্বের জয়গান শুনিয়ে দিচ্ছে কাতালানরা। শুধুই কাতালান বললে কিন্তু ভুল হবে। কাতালান হতে পারেন জাভি-ইনিয়েস্তা-পিকেরা। কিন্তু ক্লাবটি কি আদতেই কাতালান!
বৈশ্বিক জনপ্রিয়তা যে ক্লাবের, যেখানে মিলনমেলা ঘটেছে ইউরোপ-লাতিন আমেরিকান ফুটবলের, যেখানে খেলেন মেসি-নেইমার-সুয়ারেজরা খেলেন, আর ভক্ত-সমর্থকের কথা বিচার করলে যাদের কোটি কোটি ভক্ত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে এশিয়া-আফ্রিকা থেকে শুরু করে সারা বিশ্বব্যাপি- তারা আবার শুধুই কাতালান হয় কি করে! হলোও না, এই উৎসবের ঢেউ আছড়ে পড়ে যেন সারা বিশ্বে বার্সা ভক্তদের হৃদয়েও।
অসাধারণ ফুটবলশৈলী প্রদর্শন করে জুভেন্তাসকে হারিয়ে বার্লিন জয় করার পর বীরের বেশেই ন্যু ক্যাম্পে ফিরবেন মেসি-নেইমাররা, তাতে কোন সন্দেহ ছিল না। তবে বাকি ছিল শিরোপা উৎসব। ছাদ খোলা বাসে করে যখন বার্সার রাজপথে নেমে এলেন বার্সার বিজয়ী বীররা, তখন তো মনে হয় যেন পৃথিবীর সব রঙ ঢেলে দেওয়া হয়েছে স্পেনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরটির ওপর।
নানান রঙের বিস্ফোরণ। বার্সেলোনা-স্পেনের পতাকা থেকে শুরু করে কাতালুনিয়া রাজ্যের পতাকাও শোভা পাচ্ছিল সেই ‘ট্রেবল’ ট্রফির শোভা যাত্রায়। রাস্তায় হাজার হাজার জনতা। মেসি-নেইমারদের জার্সি পরে মাথায় পট্টি বেধে আর হাতে পতাকা নিয়ে বীর বরণে উপস্থিত তারা রাজপথে। ভিড় ঠেলে এগিয়ে চলে ছাদ খোলা বাসটি। যার সামনের অংশে মঞ্চ করে সাজিয়ে রাখা স্প্যানিশ লা লিগা, কোপা ডেল রে আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা। সঙ্গে বাতাসে কনফেত্তির ওড়াউড়ি। আর ভক্তদের হই হুল্লোড়।
পেছনে উৎসবে মাতোয়ারা জাভি-ইনিয়েস্তা থেকে শুরু করে বার্সার সব ফুটবলার। স্বপ্নের নায়কদের এত কাছে থেকে দেখতে পেয়ে উচ্ছসিত ভক্ত-সমর্থকরাও। কখনও নিজেরা গাইছিলেন, আবার গলা মেলাচ্ছিলেন ভক্তদের সঙ্গে। ট্রেবল সামনে নিয়ে ছবি তোলারও হিড়িক পড়ে ফুটবলার থেকে শুরু করে দর্শকদের মধ্যে। মুহূর্তেই যা ছড়িয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
মন্তব্য চালু নেই