বান্ধবীর সঙ্গে গল্প করায় মাথা মুড়িয়ে দিল অ্যান্টি রোমিও স্কোয়াড!

উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনী প্রচারে বিজেপি দাবি ছিল, ক্ষমতায় এলে মহিলাদের নিরাপত্তায় আরও জোর দেওয়া হবে। ক্ষমতায় এসে সে কথা রেখেছেন রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। ২২ মার্চ থেকে উত্তরপ্রদেশে চালু হয়েছে অ্যান্টি রোমিও স্কোয়াড। স্কুল, কলেজ, পথে-ঘাটে মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে টহল দিচ্ছে এই বিশেষ বাহিনী।

উত্তরপ্রদেশে ইভটিজারদের তাণ্ডব থামাতে রাজ্য পুলিশের ডিজিপি জাভেদ আহমেদকে কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন আদিত্যনাথ। কিন্তু বহু জায়গা থেকেই বাড়াবাড়ির খবর মিলছে। প্রেমিক যুগলদেরও নাকি হেনস্থা করছে এই অ্যান্টি রোমিও স্কোয়াড। সম্প্রতি এমনই একটি ভিডিও প্রকাশ হতেই হইচই পড়ে গেছে।

এই ভিডিওয় ধরা পড়েছে, এক যুবককে ধরে তাঁর মাথা কামানো হচ্ছে জনসমক্ষে। সামনে দাঁড়িয়ে গোটা ব্যাপারটার তদারকি করছেন তিন পুলিশ কনস্টেবল। ভিড়ের মধ্যে থেকে কাউকে বলতে শোনা গেল, ‘‘ও একটা ভুল করে ফেলেছে। ও আর এমন কাজ করবে না।’’

পুলিশ আর স্থানীয়দের ঘেরাটোপে বন্দি অসহায় যুবককে এক বার বলতে শোনা গেল, ‘‘আমি আর করব না! আমি অন্যায় কিছু করিনি…’’ ধমক দিয়ে তাঁকে থামিয়ে দিল একজন। নির্দেশ দিল চুপ করে বসে থাকতে। কী করেছিলেন সেই যুবক?

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট, কোনও মোহিলাকে দেখে আদৌ কোনও কটূক্তি করেননি তিনি। বান্ধবীকে বাড়ি পৌঁছে দিতে এসে একটু গল্প করছিলেন তাঁর সঙ্গে। তার পরই এই ঘটনা।

‘অ্যান্টি রোমিও স্কোয়াড’ কাজ শুরু করার পর পরই উত্তরপ্রদেশে বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু যুবককে আটক করা হচ্ছে মহিলাদের উত্যক্ত করা বা কটূক্তি করার অভিযোগে। সব মিলিয়ে উত্তরপ্রদেশে মহিলাদের নিরাপত্তায় বেশ কড়া দাওয়াই দিচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। কিন্তু এ ক’ দিনের মধ্যেই মহিলাদের নিরাপত্তা দেওয়ার নামে বাড়াবাড়ি পুলিশি তত্পরতা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজ্যের যুবক ও প্রেমিক যুগলদের কাছে। যত্রতত্র যুবকদের ধরে কান ধরে উঠবোস, কান ধরে ‘মুরগি’ করে রাখা ইত্যাদি নানা শাস্তি দিচ্ছে এই ‘অ্যান্টি রোমিও স্কোয়াড’।

অভিযোগ উঠছে, মহিলাদের উত্যক্ত করার জন্য নয়, তাঁরা শাস্তি পেয়েছেন ‘প্রেম’ করার অপরাধে। প্রেমিক যুগলদের ধরে ‘কেস’ দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ‘ঘুষ’ নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে এই ‘অ্যান্টি রোমিও স্কোয়াড’-এর বিরুদ্ধে। কিন্তু এ বার বাড়াবাড়িটা বোধহয় একটু বেশি হয়ে গিয়েছিল! একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পর নড়ে চড়ে বসেছেন উত্তরপ্রদেশের পুলিশ কর্তারাও।

এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই পুলিশের নিন্দায় সরব হন হাজার হাজার মানুষ। একটি সংবাদ মাধ্যমের দাবি, ভিডিওর তিন পুলিশ কনস্টেবলকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করে তাঁদের সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। গোটা ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজিপি জাভেদ আহমেদ।-আনন্দবাজার



মন্তব্য চালু নেই