বাড়িতে এক টাকাও ছিল না, স্কুলের ফি দিতে না পারায় যেভাবে বেড়ে উঠেন গ্রেট খলি
স্কুলের ফি ছিল আড়াই টাকা। কিন্তু গরিব বাবা-মার সেই সামান্য টাকাও দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না। তাই মাত্র আট বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে রোজ পাঁচ টাকার জন্য শিশুশ্রমিকের কাজ করতে বাধ্য হয়েছিলেন দ্য গ্রেট খলি। আত্মজীবনীতে ছোটবেলা থেকে এই লড়াইয়ের কথা তুলে ধরেছেন দলীপ সিংহ রানা ওরফে খলি।
বিনীত কে বনসলের সঙ্গে মিলে আত্মজীবনী লিখেছেন খলি। তাঁর আত্মজীবনীর নাম ‘দ্য ম্যান হু বিকেম খলি’। এই বইয়ে তাঁর জীবন সংগ্রামের কথা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। ছোটবেলায় শুধু দারিদ্র্যই প্রতিবন্ধকতা ছিল না, তার সঙ্গে বিশাল চেহারার জন্য জুটত বিদ্রুপ। কিন্তু সব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে কুস্তিগীর হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করেন দলীপ। তিনি প্রথম ভারতীয় হিসেবে ডবলুডবলুই-তে যোগ দেন। পরিচিত হয়ে ওঠেন দ্য গ্রেট খলি নামে। ডবলুডবলুই চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বজোড়া খ্যাতি লাভ করেন।
১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পর ছোট্ট দলীপের জীবনে সঙ্কটের সূচনা হয়। বাড়িতে একটা পয়সাও ছিল না। স্কুলের ফি দিতে না পারায় রোজ গালমন্দ করতেন প্রধান শিক্ষক। একদিন ক্লাসে সবার সামনেই চরম অপমান করলেন ক্লাসটিচার। সহপাঠীরাও হাসাহাসি শুরু করল। সেদিনের পর আর স্কুলে যায়নি দলীপ। তার পড়াশোনা সেখানেই শেষ হয়ে যায়।
এরপর একদিন তার বাবা এসে বলেন, গ্রামে গাছ লাগানোর কাজ করলে রোজ পাঁচ টাকা করে পাওয়া যাবে। স্কুলের আড়াই টাকা ফি দিতে না পারা দলীপের কাছে সেই টাকা লটারি পাওয়ার মতো ছিল। বাবার কথা শুনেই আনন্দে তার চোখ চকচক করে ওঠে। সে অবিলম্বে কাজে যোগ দেয়।
গাছ লাগানোর কাজ সহজ ছিল না। এই কাজে প্রচণ্ড শক্তি দরকার ছিল। আট বছর বয়সেই সেই শক্তি থাকায় বাবার আপত্তি সত্ত্বেও কাজে যোগ দেয় দলীপ। রোজ চার কিমি হেঁটে গিয়ে গাছ এনে গ্রামে লাগাতে হত। তারপর আবার বীজ আনতে যেতে হত। প্রথম দিনের কাজ শেষে পাঁচ টাকা পেয়ে অসম্ভব আনন্দ হয়েছিল ছোট্ট দলীপের। দ্য গ্রেট খলি হয়ে ওঠার পরেও এখনও সে কথা মনে আছে তাঁর।
শিশুশ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করলেও, খলির মতে, তাঁর প্রথম চাকরি সিমলার এক রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীর দেহরক্ষী হওয়া। থাকা, খাওয়া ছাড়াও তিনি পেতেন মাসে দেড় হাজার টাকা। এভাবে লড়াই করতে করতেই খ্যাতির শিখরে পৌঁছে যাওয়ার কাহিনীই আছে দ্য গ্রেট খলির আত্মজীবনীতে।- সৌজনে এপিবি আনন্দ
মন্তব্য চালু নেই