বাচ্চা পড়ায় অমনোযোগী?

দেখতে দেখতে সোনামনিটা বেশ বড় হয়ে উঠেছে। বুদ্ধিদীপ্ত আচরণ, নতুন কিছু করার ক্ষমতা, আগ্রহ সবই আছে। তাই বেড়ে ওঠার সঙ্গে তার সময় হয়েছে লেখাপড়া করার। কিন্তু পড়তে বসলেই অমনোযোগী হয়ে যায়।

স্পেসিফিক লার্নিং ডিজএবিলিটি বা ডিসলেক্সিয়া হলো বাচ্চার পড়ার সমস্যাকে নির্দেশ করে। এই সমস্যা থাকলে বাচ্চাদের মধ্যে বিশেষ ধরনের ‘মেন্টাল ফাংশন’ দেখা যায়। এরা অন্য সাধারণ বাচ্চাদের চেয়ে অনেক বেশি কৌতূহলী হয়। আশেপাশে কী হচ্ছে তা নিয়ে অনেক সচেতন থাকে। শব্দের চেয়ে ছবির সাহায্যে বেশি ভাবতে পছন্দ করে। বুদ্ধি বেশি থাকে, কল্পনাপ্রবণও হয়। এই সব ক্ষমতাকে যদি সঠিক পথে পরিচালনা করা যায়, তাহলে ডিসলেক্সিক বাচ্চাদের মধ্যে অসাধারণ সৃজনশীলতা দেখা দিতে পারে।

আপনার বাচ্চা যদি ডিসলেক্সিয়াতে ভুগে থাকে তাহলে কিছু লক্ষণ টের পাবেন-

* অন্য বাচ্চার তুলনায় দেরিতে কথা বলতে শেখে।

* ডান-বাম বা উত্তর-দক্ষিণ দিকের মধ্যে তফাত ধরতে কষ্ট হয়।

* জামার বোতাম লাগানো, জুতার ফিতা বাঁধায় সমস্যা থাকে।

* নাম ধরে ডাকলেও সঙ্গে সঙ্গে সাড়া দেয় না।

* বারবার হোঁচট খেয়ে পড়ে যায়।

* প্রতিটা শব্দ ধরে ধরে পড়ে কিন্তু মানে বুঝতে পারে না। কখনো আবার মানে বুঝতে দেরি হয়।

* দাঁড়ি, কমা, প্রশ্নবোধক চিহ্ন ইত্যাদির অর্থ আলাদা করা তার জন্য কষ্টকর।

* দেখে পড়ার সময় বারবার ভুল উচ্চারণ করে।

* অনেক সময় পড়তে গিয়ে লেখা শব্দের জায়গায় অন্য শব্দ ব্যবহার করে ফেলে।

* পড়তে গিয়ে লাইন বাদ দিয়ে যায়। অনেক সময় নিজের থেকে শব্দে অতিরিক্ত অক্ষর যোগ করে দিতে পারে। আবার অনেক সময় বাদও দিতে পারে।

* পড়তে পড়তে অন্য দিকে তাকালে যে লাইনটা পড়ছিল সেটা আর খুঁজে পায় না।

ডিসলেক্সিয়ার নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা হয় না। তবে কিছু পদ্ধতি ব্যবহার করে বাচ্চাদের দৈনন্দিন জীবন সহজ করে তোলা যেতে পারে। ডিসলেক্সিক বাচ্চারা যাতে সহজে পড়াশোনা করতে পারে তার জন্য বড়দেরকে সাহায্য করতে হবে। পড়াশোনা নিয়ে বাচ্চাকে বেশি চাপ দেয়া ঠিক হবে না। হোমওয়ার্ক করার সময় বিরতি নিন। কোনো পড়া ঠিকমতো করলে বাচ্চাকে প্রশংসা করুন। একেকদিন একেকভাবে পড়ালে বাচ্চা আগ্রহ ফিরে পাবে। বাচ্চার ঠিক কোন জায়গায় সমস্যা তা বোঝার চেষ্টা করুন এবং ব্যবস্থা নিন।

বাচ্চার ডিসলেক্সিয়া থাকলে তা সাধারণত বোঝা যায় স্কুলে ভর্তি করার পর। তাই এ সময়ে বাচ্চার দিকে বিশেষ নজর রাখা জরুরি।



মন্তব্য চালু নেই