বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ হ্যাক : ফিলিপাইনে ৬ ব্যক্তি শনাক্ত

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ হ্যাক সন্দেহে সম্পৃক্ত ৬ জন ফিলিপাইন নাগরিককে সনাক্ত করা হয়েছে। ফিলিপাইনের অর্থ পাচার বিরোধী দ্য এন্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিল (এএমএলসি) ৬ ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত করছে। ধারনা করা হচ্ছে তারা হ্যাকারদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ সম্পৃক্ততার মাধ্যমে তারা ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার নিয়ে নিয়েছে ফিলিপাইনের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে।

জড়িত এই ৬ ব্যক্তি হলো মাইকেল ফ্রাসিস্কো ক্রুজ, জেসি ক্রিস্টোফার ল্যাগ্রোজ, আলফ্রেড সান্তোস ভেরগারা, এনরিকো টেওডোরো ভাসকুয়েজ, উইলিয়াম সো গো ও কাম সিন ওং (কিম ওং)। ফিলিপাইনের কোর্ট অব আপিল গত ১লা মার্চ এই ৬ ব্যক্তির সব ব্যাংক একাউন্ট পরবর্তী ৬ মাসের জন্য জব্দ করার নির্দেশ দিয়েছে চারটি ব্যাংকে।

এ ব্যাংকগুলো হলো আরসিবিসি, ইস্ট ওয়েস্ট ব্যাংক, ব্যাংকো ডি ওরো এবং ফিলিপাইন ন্যাশনাল ব্যাংক। উইলিয়াম সো গো পরিচালিত কোম্পানি সেঞ্চুরিটেক্স ট্রেডিংয়ের সব ব্যাংক একাউন্টও জব্দ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এসব ব্যক্তির ব্যাংক একাউন্টে যে বিশাল অংকের অর্থ জমা হয়েছে তা তাদের বৈধ আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়- এমনটা বলা হয়েছে আদালতের ডকুমেন্টে। সন্দেহজনক এই ৬ ব্যক্তির ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনে (আরসিবিসি)। ধারণা করা হচ্ছে এই ব্যাংকের একাউন্ট ব্যবহার করে অর্থ পাচার করা হয়েছে।

ফিলিপাইনের একটি পত্রিকা বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের যে অর্থ যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে হ্যাকাররা চুরি করেছে তার একটি আন্তর্জাতিক সিন্ডিকেট হতে পারে এই ব্যাংকটি। এর মাধ্যমে খোয়া যাওয়া ওই অর্থ স্থানীয় পুঁজিবাজারে প্রবেশ করেছে। সেখান থেকে এ অর্থ ব্যবহৃত হয়েছে স্থানীয় ক্যাসিনোতে। কোর্ট অব আপিলস বলেছে, এএমএলসি যে তদন্ত করেছে তার ভিত্তিতে দেখা যাচ্ছে এই বিপুল অর্থ সুইফট কোডের (বিপুল অংকের অর্থ হস্তান্তরের জন্য একটি ইলেকট্রনিক ব্যবস্থা) মাধ্যমে হস্তান্তরের কোন কর্তৃপক্ষীয় নির্দেশনা নেই।

ওই পত্রিকাটি বলছে, সর্বনিম্ন ৫০০ ডলার দিয়ে ২০১৫ সালের ১৫ই মে আরসিবিসি’তে ডলার হস্তান্তরের একাউন্ট খোলে সন্দেহভাজন মাইকেল ফ্রান্সিস্কো ক্রুজ, জেসি ক্রিস্টোফার ল্যাগ্রোজ, আলফ্রেড সান্তোস ভারগাড়া ও এনরিকো টিওডোরো ভাসকুয়েজ। তাদের এ একাউন্টের খবর ৫ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গোপন ছিল। কেউ এ বিষয়ে জানতো না। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভে একটি পেমেন্ট অর্ডার পাঠায়। তাতেই ধরা পড়ে এ ঘটনা। ১৬ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান অর্থ উদ্ধারে সহায়তা চেয়ে ব্যাংকো সেন্টাল গভর্নর আমান্দো তেতাঙ্গকো জুনিয়রের কাছে একটি চিঠি লেখেন।

তিনি এতে বলেন, আরসিবিসিতে যে সুইফট অর্ডার পাঠানো হয়েছে তা ভুয়া। কোর্ট অব আপিলস বলেছে, ক্রুজ, ল্যাগ্রোসাস, ভারগাড়া ও ভাসকুয়েজ একত্রিত হয়ে উইলিয়াম সো গোর সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে ব্যাংক একাউন্ট ব্যবহার করে অর্থ নড়চড় করেছে। এক্ষেত্রে তারা ব্যবহার করেছে হ্যাকারদের।



মন্তব্য চালু নেই