চট্টগ্রামে শিশু দাসত্ব নিরসন সপ্তাহ-২০১৪ উপদযাপন উপলক্ষে গণজমায়েত ও স্বারকলিপি প্রদান কর্মসুচি

বাংলাদেশে শিশু দাসত্ব নিরসনে আইন ও বিধি প্রনয়ণসহ উন্নয়ন এজেন্ডায় সম্পৃক্ত করার দাবী

বাংলাদেশে ১৮ বৎসরের নীচে অসংখ্য শিশু পরিবারের দারিদ্রতা ও অসহায়ত্বের কারনে হোটেল-রেঁস্তোরা, বাস-টেম্পু, কল-কারখানা (গার্মেন্টস, চিমনী ফ্যাক্টরী, জামদানী পল্লী), এ্যলুমুনিয়াম ফ্যাক্টারী, মৎস্য ঘের, শুটকি, গৃহকর্মসহ ইত্যাদি ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিয়োজিত আছে। যা প্রকারান্তে আধুনিক দাসত্বমূলক পর্যায়ে পর্যভূষিত হয়েছে। পারিবারিক কলহ, পিতা-মাতার মৃত্যু বা অন্যত্র বিবাহে শিশুরা অভিভাবকহীনতায় দাস ও পথশিশুতে পরিণত হচ্ছে। এ শিশুরাই মাদক বিপণন ও আসক্তের পাশাপাশি পাচারের শিকার ও পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য হচ্ছে। সর্বোপরি পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্রের সংবেদনশীল পরিকল্পনা ও কর্মসূিচর অভাবে শিশুরা এই পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হতে পারছে না। আইএলও-এর এক জরিপ অনুযায়ী বিশ্বে প্রায় ৫.৫ মিলিয়ন শিশু জোরপূর্বক শ্রমদানে ব্যবহৃত হচ্ছে, যার ৮৫% শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত। প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশীও হতে পারে এবং প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমগ্র বিশ্বের লক্ষ লক্ষ শিশু ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার, বিশ্বের রাষ্ট্রসমূহ শিশু সুরক্ষায় ব্যর্থ হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে শিশুর অমানবিক পরিস্থিতি থেকে রক্ষায় শিশু দাসত্ব নিরসনে পূর্ণাঙ্গ আইন ও বিধিমালা প্রনয়ন, শিশুর সামাজিক নিরাপত্তার লক্ষ্যে জাতীয় উন্নয়ন কর্মসূচী গ্রহণ করাসহ সামাজিক উদ্দ্যোগ গ্রহণে উৎসাহিত করা; সারা দেশব্যাপী গণমাধ্যম ও বিভিন্ন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানসহ ব্যক্তিকে শিশু দাসত্ব নিরসনে সক্রিয় করার শিশু দাসত্ব নিরসনে আইন ও বিধি প্রনয়ণসহ সরকারের চলমান উন্নয়ন এজেন্ডায় সম্পৃক্ত করার দাবী জানিয়েছেন চট্টগ্রামে কর্মরত বেসরকারী উন্নয়ন সংগঠন ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ। ২৪ নভেম্বর ২০১৪ বিশ্বব্যাপী ২০-২৬ নভেম্বর’২০১৪ শিশু দাসত্ব নিরসন সপ্তাহ উদযাপন উপলক্ষে নগরীর চট্টগ্রামের জেলা পরিষদ চত্বরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় শিশু দাসত্ব নিরসন সপ্তাহ উদযাপন পর্ষদের পক্ষ থেকে আয়োজিত গণজমায়েত এ উপরোক্ত দাবী জানানো হয়।

আইএসডিই বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক এস এম নাজের হোসাইনের সভাপতিত্বে গণজমায়েত এ সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রিয় সহ-সভাপতি আবদুল ওয়াহাব চৌধুরী, জেলা সামাজিক উদ্যোক্তা পরিষদ এর যুগ্ন সম্পাদক জানে আলম, সুফিয়া কাMemorundum-ivমাল ফেলো ও নারী নেত্রী আবিদা আজাদ, জেসমিন পারভীন জেসি, অপরাজেয় বাংলাদেশ’র মাহবুব উল আলম, ইপসার শহীদুল ইসলাম, পার্কে’র নজরুল ইসলাম মান্না, বিবিএফ’র রফিকুল ইসলাম মজুমদার, ঘাসফুলের যোবাইদুর রশিদ, স্বপ্নিল বাংলাদেশ’র মোহাম্মদ আলী সিকদার, সুবজের যাত্রার নির্বাহী পরিচালক সায়েরা বেগম, সিএসডিএফ’র শাম্পা কে নাহার, ইউসেপ বাংলাদেশ এর প্রবীর দত্ত, শৈলী সিতাকুন্ডের নাসির উদ্দীন অনিক, ইশিকা ফাউন্ডেশনের জহুরুল ইসলাম ও অপরাজেয় বাংলাদেশ’র পিযুষ দাশ গুপ্ত, সভা পরিচালনা করে অপরাজেয় বাংলাদেশ’র আশরাফুল ইসলাম।

পরে র‌্যালী ও পদযাত্রা সহকারে কোর্ট বিল্ডিং এ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দাবীর স্বপক্ষে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। জেলা প্রশাসকের অনুপস্থিতিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক আবুল হোসেন স্মারকলিপি গ্রহন করেন।

গনজমায়েত ও পদযাত্রায় অপরাজেয় বাংলাদেশ, আইএসডিই বাংলাদেশ, সিএসডিএফ, ইপসা, ঘাসফুল, ইলমা, পার্ক, বিবিএফ, স্বপ্নীল বাংলাদেশ, অন্বেষা চিটাগাং, নির্মল ফাউন্ডেশন, ওয়ার্ল্ড ভিশন, বর্নালী, আইডিএফ, সিআরসিডি, সুবজের যাত্রা, স্বীকৃতি, এসইউএফ, জেলা সামাজিক উদ্যোক্তা পরিষদ, সুফিয়া কামাল ফেলো, ব্র্যাক, ইউসেপ, প্রশিকা, ইশিকা ফাউন্ডেশন এর শিশু প্রতিনিধি ও কমীরা অংশগ্রহন করেন।

গণজমায়েত এ শিশু শ্রম নিরসন ও শিশুর সার্বিক সুরক্ষা কার্যক্রমে সরকারী বেসরকারী উদ্যোগেকে আরো জোরদার, স্বচ্ছতা আনা এবং অধিক সংখ্যক সংস্থা ও ব্যক্তিকে সম্পৃক্ত করার দাবী জানানো হয়।



মন্তব্য চালু নেই