বাংলাদেশের ৯৯ টেস্টের ৯ অধিনায়ক
ক্রিকেটের লংর্গার ভার্সনের নাম টেস্ট। সেই আভিজাত্যে বাংলাদেশ প্রথম নাম লেখায় ২০০০ সালে। হাঁটি-হাঁটি পা-পা করে ১০০তম টেস্টের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে টাইগাররা। এই পর্যন্ত আসতে ৯ জন অধিনায়কের দেখা পেয়েছে লাল-সবুজের সমর্থকরা। তাদের আদ্যোপান্ত নিয়ে চ্যানেল আই অনলাইনের এই আয়োজন।
নাঈমুর রহমান দুর্জয়: ২০০০ সালের নভেম্বরে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলের অভিষেক টেস্টে নাঈমুর রহমান দুর্জয় অধিনায়ক ছিলেন। ভারতের বিপক্ষে যথাক্রমে ১৫ ও ৩ রান করেছিলেন। ব্যাটে সফল না হলেও বল হাতে সফল ছিলেন। প্রথম ইনিংসে ছয় উইকেট নিয়েছিলেন। ওই ম্যাচে ভারতের কাছে নয় উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ। দুর্জয় বাংলাদেশকে সাতটি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যার মধ্যে ছয়টিতে হার ও একটিতে ড্র রয়েছে।
খালেদ মাসুদ পাইলট: ২০০১ সালের ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ড সফরে টেস্ট অধিনায়কত্বের সুযোগ পান খালেদ মাসুদ পাইলট। অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক টেস্টে দুই ইনিংসেই ৬ করে রান করেন তিনি। নিউজিল্যান্ডের কাছে ওই ম্যাচে বাংলাদেশ ইনিংস ও ৫২ রানের ব্যবধানে হেরেছিল। পাইলট বাংলাদেশকে ১২ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যার মধ্যে সবকটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ।
খালেদ মাহমুদ সুজন: ২০০৩ সালের এপ্রিলে চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে সাউথ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্টে প্রথমবার অধিনায়কের দায়িত্ব পান খালেদ মাহমুদ সুজন। তিনি প্রথম ইনিংসে করেন ৬ রান এবং তৃতীয় ইনিংসে ১ রান। ১৭ ওভার বল করে উইকেটহীন ছিলেন। সাউথ আফ্রিকা ম্যাচটি ইনিংস ও ৬০ রানের ব্যবধানে জিতে নেয়। সুজন বাংলাদেশকে নয়টি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যার মধ্যে সবকটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ।
হাবিবুল বাশার: ২০০৪ সালে জিম্বাবুয়ে সিরিজে অধিনায়কত্ব পান হাবিবুল বাশার সুমন। হারারে স্পোর্টস গ্রাউন্ডে দুই ইনিংসেই ‘গোল্ডেন ডাক’র লজ্জায় পড়েন। টেস্টটি জিম্বাবুয়ে ১৮৩ রানে জিতে নেয়। হাবিবুল বাংলাদেশকে ১৮টি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যার মধ্যে একটি জয়, ১৩টি হার ও ৪টি ড্র রয়েছে।
মোহাম্মদ আশরাফুল: ২০০৭ সালের জুনে শ্রীলঙ্কা সফরে প্রথমবার টেস্ট অধিনায়কত্ব করার সুযোগ পান আশরাফুল। কলম্বোতে প্রথম ইনিংসে ৭ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। টেস্টটি শ্রীলঙ্কা ইনিংস ও ২৩৪ রানের ব্যবধানে জিতেছিল। আশরাফুলের অধীনে বাংলাদেশ ১৩টি টেস্ট ম্যাচে অংশ নেয়, যার মধ্যে ১২টি হার ও একটি ড্র।
মাশরাফি বিন মুর্তজা: বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে অভিষিক্ত অধিনায়কদের মধ্যে সবচেয়ে সফল মাশরাফি বিন মুর্তজা। মাত্র একটি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে একটিতেই জয় পায় মাশরাফির বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথম টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পান মাশরাফি। প্রথম ইনিংসে ৩৯ রান করলেও পরের ইনিংসে ০ রানে আউট হতে হয় ক্যাপ্টেন ম্যাশকে। ওই ম্যাচে ইনজুরিতে পড়ে দীর্ঘ সময়ের জন্য মাঠের বাইরে যেতে হয় তাকে।
সাকিব আল হাসান: ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মাশরাফির ইনজুরির জন্য দ্বিতীয় টেস্টেই অধিনায়ক করা হয় সাকিব আল হাসানকে। টেস্ট দলপতি নির্বাচিত হয়েই প্রথম টেস্টে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন সাকিব। শুধু কি তাই। অলরাউন্ডিং পারফরম্যান্স দিয়ে ম্যাচ সেরা ও সিরিজ সেরার পুরস্কার নিজের করে নেন সাকিব। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে ১৬ আর চতুর্থ ইনিংস ম্যাচ জেতানো অনবদ্য ৯৬ রানের ইনিংস খেলেন। বল হাতে প্রথম ইনিংসে তিন উইকেট ও তৃতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন। সাকিবের নেতৃত্বে নয়টি টেস্ট খেলে বাংলাদেশ। যার মধ্যে আটটি হার ও একটি জয়।
মুশফিকুর রহিম: ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হোম সিরিজে টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হয় মুশফিকুর রহিমের। এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের নেতৃত্বে প্রথম টেস্টটি ড্র করে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে ৬৮ রানের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ২ রানে অপরাজিত থাকেন মুশি। মুশফিকের নেতৃত্বে এখন পর্যন্ত ২৯টি টেস্টের অংশ নেয় বাংলাদেশ। যার মধ্যে পাঁচটিতে জয়, ১৫টিতে পরাজয় ও নয়টি ম্যাচে ড্র করে টাইগাররা।
তামিম ইকবাল: ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ড সিরিজে মুশফিকের ইনজুরির জন্য দ্বিতীয় টেস্টে অধিনায়কত্বের সুযোগ পান পান ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। ওই এক টেস্ট পরেই মুশফিককে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হয় তাকে। টেস্টটি বাংলাদেশ জিততে পারেনি।-চ্যানেল আই
মন্তব্য চালু নেই