বাংলাদেশের যোগাযোগ প্রসঙ্গে : ‘আকাশ পথ নিয়ে মতামত’

আমাদের দেশে স্বপ্ন দেখলে তা পূরণ হবে না দরিদ্র শ্রেণীর জন্য। একটি হলো সত্যিকার অর্থে দেশ প্রেমিকদের অর্থে আর অন্যটি দরিদ্রদের অর্থে। আমাদের দেশে বিবেক থাকে চার দেয়ালের মাঝে বন্দি আর মগজ থাকে মাথার খুলিতে তবে তাতে ক্যামিকেল ছাড়া কোন প্রগামিং থাকে না। আর তারাই সমগ্র দেশে বাণিজ্য করে বলে কোন স্বপ্নের উন্নতি হবে না। এদের সংখ্যা শতকরা আশি ভাগ বর্তমানে সন্দেহ ছাড়া লা যায়। তবে বাড়বে। তাই পত্রিকার কাগজে স্বপ্নে কথা লিখে কোন লাভ নাই। এ দেশে দিনদিন স্বজন প্রীতি বেড়ে এমন অপ্রীতিকর অবস্থা হয়েছে যে কোন কবিতা বা উপন্যাস লিখতে গেলে প্রথমেই বলতে হবে বাংলাদেশ দিনদিন ধর্ষিতা হতে চলেছে। আগে একটা কথা শুনতাম, লেখা পড়া করে যে গাড়ী ঘোড়া চলে সে। কিন্তু এখন সেটা পরিবর্তন করা হয়েছে , জনবল ও অর্থের জোর পায় যে প্রতিষ্ঠানের মালিক হয় সে।

যে আশি ভাগ মানুষের কথা বলছি তাদেও দৌড় ও নেটওয়ার্ক এতো বেশী যে এ দেশে ব্যবসা করতে হলে হয় কুকুরের মতো ঘেউ ঘেউ করে কুকুর সেজে তাদের সাথে মিশে যেতে হবে অথবা মুগুও তৈরী কওে নিয়ে হবে। তবে দশ ভাগ মানুষ তা পাওে না বিধায় তারা ব্যবসা বানিজ্যে আসতে পারেন না আর দেশের ও উন্নতি আছে না। তবে বসে থাকলে তো হবে না। কিজের সাধ্য মতো কাজ কওে যেতে হবে।

যে কোনো দেশের জন্য এক শহর থেকে অন্য শহরে যাতায়াতের মাধ্যম বলতে বাস , ট্রেন, নৌ ও আকাশ পথের প্রয়োজন হয়। মানুষ তার প্রয়োজন ও সাধ্য মতো জার্নি ব্যাবহার করে থাকে। তবে অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেও বিমান যোগে যাতায়াত বেশ ব্যয় বহুল ও তেমন সহজলভ্য নয়। কিন্তু অন্য সব পথ গুলোর প্রতি এত্তো যত্ন নেয়া হচ্ছে, দিনদিন সুযোগ বেড়ে যাচ্ছে তা হলে কেনো বিমান বা আকাশ পথটা সমানতালে এগিয়ে নেয়া যাচ্ছে না। একজন অতি নিম্ন শ্রেণির মানুষজন যদি কোনো না কোনো কারণে পরিবহনের পরিচালক হতে পারে, ব্যবসা করে অর্থের পাহাড় গড়ে তুরতে পারেন তা হলে তাদের মাথায় কেনো এট আসে না সেটাই অবাক করা বিষয়। প্রতি দিন যে সংখ্যক মানুষ রাজধানী থেকে যান বা আসেন তাদের যাতায়াতের জন্য বিমান পথটাও উন্নত করা প্রয়োজন।
এখানে আমি প্রকৌশলী হিসেবে হালকা আলোচনা করতে পারবো কেননা, এ ব্যাপারে যাদের বেশি ভূমিকা থাকবে তারা হলেন এরোন্যাটিক প্রকৗশলীরে মেধা ও জ্ঞান। আমি বাহ্য ও স্বপ্নটাকে উপস্থাপনা করতে পারবো। ঢাকা থেকে বগুড়া , রংপুরের দিকে বিমান বন্দর যে কি পরিমাণ সুফল বয়ে নিয়ে আসবে তা ভেবে দেখবার বিষয়। ঐ সব শহরে বেশ আন্তর্জাতিক মানের বন্দর নির্মাণ করার জন্য অনেক ভালো সুযোগ রয়েছে। রয়েছে অনেক স্থান। এখন এসব এলাকার সাথে বিমান যোগাযোগ করলে কত সুফল আসবে তা নিয়ে কিছুটা কথা বলবার প্রয়াস করেছি।

আজকে ২০১৪ সালে এসেও আমাদের দেশে লম্বা জার্নিতে রাস্তা গুলো মৃত্যূ ঝুঁকিতে আছে। কখনো পথের কারণে জান যাচ্ছে কখনো বা চালকের কারনে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ঢাকা থেকে বগুড়ার পথে ট্রেন ও বাসের ভালো সংখ্যা আছে। তা সত্ত্বেও কোনো ঘন্টাতেই যাত্রীর সংখ্যা কম দেখা যায় না। এমনকি engr mirzaট্রেনেও না। তা ছাড়া ট্রেন বা বাস যাই হোক না কেনো তা বেশ সময় ধরে পথে থাকতে হয়। স্বাভাবিক সাড়ে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা তো লাগেই। সে জন্য মালামাল, আসবাবপত্র বা সাধারণ জার্নি বেশ ভালো চড়তে পারে। অপর দিকে আকাশ পথে নাই ট্রাফিক জ্যাম। এ পথে নিমিষেই চলে যওয়া যাবে। আর জরুরি বিষয়ে যেমন রুগি নিয়ে বিষেশ স্থানে যাবার জন্য তো এ পথের কোনো বিকল্প নাই। তবে এবটি ব্যাপার থেকে যায় তা হলো ভাড়ার বিষয়। যদি এ পথকে সঠিকভাবে এবং পর্যাপ্ত সুবিধা দেওয়া হয় তবে এর ভাড়া অন্যান্যের তুলনাতে পার্থক্য কমানো যাবে। তা হলে স্বীকার করা যায় আমাদের বাংলাদেশে আকাশ পথ যাতায়াত সুযোগ দেওয়া সুফল বিনা কুফল নাই। বিশেষ করে ঢাকার সাথে এসব শহর গুলোতে। আর্থিক, সামাজিক বা পরিবেশ গতো যুক্তিতেও মনে হয় দ্বিমতের তেমন সুযোগ নেই। এবার আশা যাক, একটি আধুনিক বিমানবন্দর বলতে প্রকৌশলী হিসেবে কি বোঝা যায় এবং বাংলাদেশে কতোটা অত্যাধূনিক করে নির্মাণ সম্ভব হতে পাড়ে। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে আমি আমেরকান সোসাইটি অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ারস এর একটি রিপোর্টের সহায়তা নেবো এবং তা কি ভাবে আমাদের দেশে উপযুগী করা যায় তার দিক নিয়ে এগুবো।

আমাদের বাংলাদেশে আকাশ পথে যাতায়াতের সুযোগ নিয়ে আলোচনা করবো তাই অতীত ও এখনকার অবস্থা ভেবে দেখা প্রয়োজন। এতে করে ভবিষৎ বাজারে প্রবেশ করা সহজ হবে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যে বিমান চলে তা বেশ সফলতার সাথে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বলে আমরা গর্বিত। তাহলে কেনো সেই সুবিধা ঢাকার সাথে রাজশাহী, বগুড়া, বা এমন দূরত্বে দেওয়া যাবে না। এতে করে দেশের যোগাযেগের যে উন্নতি হবে তা সত্যিই বড় সফলতার হবে। অভ্যšতরীন বিমান যোগাযোগের জন্য বাজেট ও তেমন আহামরি হবে না তা বলা যায়।

এব্যাপারে অগ্রসরের জন্য কিছু মূল ব্যাপার সামনে চলে আসবে তা হলো:- বিমানের ধরন, নির্মাণের দায় দায়িত্ব, রুট পলিচালনা করা, যাত্রীসংখ্যা, বাস্তবায়নে বিভিন্ন দাতার অংশগ্রহণ, তালমিলিয়ে চলা ইত্যাদি। প্রথম আবস্থায় পরিষ্কার মনে যদি বলা হয়, এ ধরনের উক্তি নিয়ে সামনে এগুতে গেলে আমাদের দেশের জন্য কোনো বাঁধাই আসবে না। কেননা, আমাদের দেশে আছে মনোমুগ্ধকর হাতিলঝিল প্রকল্প, আছে ফ্লাই ওভার ব্রিজ, সব থেকে বড় উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যমুনা ব্রিজ। তা হলে এয়ারপোর্টের ব্যাপারটা যে একট স্বাভাবিক ব্যাপার তা বলতে অন্যায় হবে না , তবে প্রয়োজন কিছু সত্যিকার অর্থে এডুকেটেড ও দেশপ্রেমিকের উদ্যোগ ও রাস্ট্রনায়কের সদয় সম্মতি যার স্বপ্নে কাজ করে যাবে আমাদের দেশের প্রকৌশলী ও স্থপতিবৃন্দ। আর সে জন্য সব ধরনের শ্রমিকের কর্মের সহায়তা হবে।

কোন ট্রাফিক জ্যাম নাই কোথায়? অতি দ্রুত যাওয়া যায় কোন পথে? উত্তর আকাশ পথে। স্বাধীণতার পর থেকে আমাদের দেশে অনেক উন্নতি হয়েছে। যেখানে আলো ছিলো না, সেখানে পৌঁছে গেছে আলো। চিকিৎসা ছিলো না সেখানে গেছে দাতব্য চিকিৎসালয়। যেখানে বিদ্যালয়ের কথা ভাবাই যেতো না, সেখানেও হয়েছে বিদ্যালয়। যে পথে হেঁটে যাওয়া কল্পনা করা যেতো না সেখানে চরতে দ্রুতগামী বাস ও ট্রাক। আরো হবে ভবিষৎতে। আমাদের দেশে যে সংখ্যক জনসংখ্যা বাড়ছে আর প্রতিদিন কাজের তাগিদে যে সংখ্যক মানুজন দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে ছুটোছুটি করছে তাতে কি রাস্তা দিয়ে যোগাযোগ মেটানো যাবে? এক কথায় না। তার প্রমাণ দেবার প্রয়োজন নাই। তাই এ বিষয়ে ভেবে বিশেষ শহরে শহরে বমান বন্দও করা প্রয়োজন।

প্রকৌশলী মীর্জা শামীম হাসান
সদস্য আই.ই.বি.
বি.এসসি. সিভিল ,(থিসিস- স্ট্রাকচার ও ট্রান্সপোর্ট)
এল.এল.বি. সম্মান (ছাত্র), জাতীয় আইন কলেজ ঢাকা



মন্তব্য চালু নেই