বাঁশখালীর ইউএনও ওসির প্রত্যাহার দাবি
চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এস আলম গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ বিরোধকে ঘিরে সংঘর্ষে ৪ জন গ্রামবাসীর নিহতের ঘটনায় বাঁশখালীর ইউএনও শামসুজ্জামান এবং ওসি স্বপন কুমার মজুমদারের প্রত্যাহার দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে গন্ডামারা বাঁচাও আন্দোলনের নেতাদের এক মতবিনিময় সভায় স্থানীয়রা এই দাবি উপস্থাপন করেন।
মতবিনিময় সভায় স্থানীয়দের পক্ষে মতামত তুলে ধরে স্থানীয় সাংবাদিক ও গন্ডামারা বাঁচাও আন্দোলনের সহসভাপতি শওকত চাটগামী বলেন, বাঁশখালীতে হত্যাকাণ্ডের এতোদিন পর আপনারা আমাদের সঙ্গে মতবিনিময়ে বসেছেন। বাঁশখালীর সাধারণ মানুষের এই আলোচনা আগে করা হলে ৪ জন গ্রামবাসীর প্রাণ হারাতে হতো না।
শওকত চাটগামী বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের জন্য বাঁশখালীর ইউএনও এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দায়ী। তারা জনবান্ধব কর্মকর্তা নন।
স্থানীয় স্কুল শিক্ষক মাস্টার মফজল আহমদ বলেন, ঘটনার দিন ৪ এপ্রিল বাঁশখালী থানার ওসি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতেই জনগণের ওপর গুলি করা হয়েছে। গুলিতে ৪ জন গ্রামবাসী নিহত হয়েছেন। আমরা সারা রাত লাশ নিয়ে উঠোনে বসে থাকলাম। কিন্তু প্রশাসনের কেউ এলেন না। এমনকি ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নিতেও কেউ আসেননি। আমরা নিজের কাঁধে করে লাশ থানায় নিয়ে গেলাম, ময়নাতদন্তের হলো, হাজার হাজার মানুষ নিয়ে জানাজা হলো, কিন্তু একজন চেয়ারম্যান, মেম্বর এমনকি সংসদ সদস্যও জানাজায় অংশ নিলেন না।
তিনি বলেন, থানায় লাশ রেখে আহতদের বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য করা হয়েছে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের। ইউএনও এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বহীনতার কারণে ৪ জন গ্রামবাসী গুলিতে মারা গেছেন। আমরা তাদের অবিলম্বে প্রত্যাহার দাবি করছি।
গন্ডামারা ইউনিয়ন বাঁচাও আন্দোলনের প্রধান উপদেষ্টা প্রাক্তন সিটি মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, থানার ওসি ও ইউএনওর মতো কর্মকর্তাদের নিয়ে আমার মন্তব্য করা মানায় না। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, বাঁশখালীর পরিস্থিতি এতোটা খারাপ ছিল তা আমাদের আগে জানা ছিল না। ইউএনও এবং ওসি বিষয়গুলো সামলানের চেষ্টা করেছিলেন।
ইউএনও এবং ওসির প্রত্যাহার দাবি প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক বলেন, এ ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। পর্যায়ক্রমে এই দুই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হবে।
মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক ছাড়াও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুল জলিল, গন্ডামারা ইউনিয়ন বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি নিহত মর্তুজা ও আনোয়ারের ভাই বদি আহমদ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক, সরল ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আমিনুর রশিদ চৌধুরী প্রমুখ।
মন্তব্য চালু নেই