বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস, আওয়ার নিউজ বিডি’র শুভেচ্ছা

রাজনৈতিক উত্তাপে দেশ থেকে যেন ‘উচ্ছ্বাস’ শব্দটাই হারিয়ে গেছে! হারিয়ে যাওয়া শব্দটাকে ফিরিয়ে আনলো বাংলার বাঘেরা। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ক্রিকেটার ডন ব্রাডমানের স্মৃতিধন্য অ্যাডিলেইড ওভালে স্বর্ণাক্ষরে লেখা হলো নতুন ইতিহাস। ক্রিকেট জনক কিংবা মোড়ল বলে খ্যাত ‘সিংহ’ ইংল্যান্ডকে চোখের জলে ভাসিয়ে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের কোয়ার্টার ফাইনালে এখন বাংলাদেশ। ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এ প্রাপ্তিতে উচ্ছ্বাস আর উল্লাসে ভাসছে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশ। আনন্দের রঙ যেন লাল-সবুজ; উল্লাসের ভাষা রুবেল-মাহমুদ্দুল্লাহ-মুশফিক-সাকিব।

বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত সমস্যায় জর্জরিত ছিলেন পেসার রুবেল হোসেন। বিশ্বকাপ খেলাও ছিল অনিশ্চিত। সেই রুবেলের মহাকাব্যিক ডেলিভারিতে ইংলিশ ব্যাটসম্যান জেমস অ্যান্ডারসনের আউটের পরেই বাঁধাভাঙা উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো বাংলাদেশ। রাজধানীসহ সারা দেশের রাস্তায়, পাড়া-মহল্লায় কিংবা অফিসে শুরু হয় জয়ধ্বনি। বের করা হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। যাতে ছিল না কোনো বয়সের সীমারেখা। সব বয়সের সব শ্রেণীর মানুষের আনন্দমাখা মুখগুলোতে ছিল শুধুই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য স্তুতিবাক্য।

যে কোন উৎসবের প্রধান ক্ষেত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। বিরোধী জোটের ডাকা হরতাল-অবরোধের কারণে এবার আর টিএসসির সামনের রাস্তায় বসানো সম্ভব হয়নি জায়ান্ট স্ক্রিন। ফলে নিজ নিজ হলের টিভিরুমই ভরসা। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হওয়ামাত্রই আতঙ্কের রাজপথে নেমে আসে সব্বাই। আনন্দমাখা মুখ রঞ্জিত হয়ে যায় আবিরের রঙে। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে আর ভি চিহ্ন প্রদর্শন করে বাংলাদেশের জয়কে উদযাপন করে। আর উল্লাস শেষে মিষ্টিমুখ করা তো ছিলই।

bangladesh-fans-adelaide

সবমিলিয়ে টিএসসি হয়ে উঠে উৎসবের মিলনমেলা। লাল-সবুজের পতাকা জড়িয়ে সকলের কণ্ঠ এক হয়ে বলে উঠে ‘বাংলাদেশ…বাংলাদেশ’। খেলা- শেষে টিএসসিতে আনন্দরত ইমতিয়াজ, সুজন, ফরহাদ, বাঁধনসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ছাত্র বলেন, ‘সাতচল্লিশ সালে একবার ব্রিটিশদের হারিয়ে ছিলাম। ক্রিকেট মাঠেও দুইবার হারিয়ে ছিলাম, তবে আজকের এ জয় ভিন্ন। ওরা আমাদেরকে নিয়ে অনেক উল্টা-পাল্টা কথা বলছে; আজ আমরা সবকথার জবাব দিয়ে দিয়েছি। আশা করছি, কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতকে (কোয়ার্টার ফাইনালের সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ) হারিয়ে আমরা সেমিফাইনাল শুধু নয়, বিশ্বকাপ জিতে ফিরবো। ইনশাল্লাহ্‌।’

cricket05

কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, জয়ের এই আনন্দ ছিল ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়। আর যারা ঘরে ঘরে টিভি পর্দার সামনে ছিলেন তাদের মধ্যে ছিল তীব্র উত্তেজনা। সবার মনে একটাই প্রশ্ন ছিল- বাংলাদেশ জিতবে তো? রুবেল-সাকিব-তাসকিন এক একটি বল করেন আর প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তি ফুটে ওঠে কণ্ঠে কণ্ঠে। আর উইকেটের পতন হলে তো কথাই নেই। cricket02

এদিকে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমাদের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন জায়গায় বাংলাদেশের জয়কে উদযাপন করতে বের করা হয়েছে আনন্দ-মিছিল। বিতরণ করা হচ্ছে মিষ্টি। সব মিলিয়ে তাই টেকনাফ থেকে অ্যাডিলেড, তেঁতুলিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়া- যেখানেই বাংলাদেশিরা আছেন সবাই মেতেছেন আনন্দ উৎসবে।

বাংলাদেশ দলের এই বিজয়ে আনন্দিত অনলাইন নিউজ পোর্টাল আওয়ার নিউজ বিডি ডটকম। বাংলাদেশ দলের সব খেলোয়াড়কে আওয়ার নিউজ বিডির পক্ষ থেকে অনেক, অনেক শুভেচ্ছা। টাইগারদের বিজয়ে তাদেরকে অভিনন্দন জানিয়ে আওয়ার নিউজ বিডি’র সম্পাদক আরিফ মাহমুদ ও প্রকাশক সাদিয়া আফরিন (মিতু) বলেন, ‘বাংলাদেশ পারে। বাংলাদেশই পারবে। সামনের ম্যাচগুলোতে টাইগারা এগিয়ে যাবে দৃপ্ত পায়ে।’ সারাবিশ্ব আজ শুনেছে টাইগারদের গর্জন। বাংলাদেশ দলের জন্য রইল অনেক অনেক শুভ কামনা।



মন্তব্য চালু নেই