বাড়িয়ে দিন আপনার হাত
বাঁচতে চায় মেধাবী কোমলমতি শিক্ষার্থী আসমা
পাঠকদের উদ্দেশ্যে যে কাহিনীটি লিখছি, তার মূল চরিত্র আট বছরের একটি ফুটফুটে ছোট্ট শিশু। নাম আসমা খাতুন। সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার প্রত্যন্ত গোপীনাথপুর গ্রামে তার জন্ম। দিনমজুর মোঃ নূর ইসলাম গাজী (৪৩) এবং অন্যের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহকারী মোছাঃ মনোয়ারা খাতুন তার বাবা-মা। বাবা মায়ের অপর দুই ছেলে জম্মের দির্ঘবিরতির পর জন্ম নেয় বড় সাধের ছোট্ট মেয়ে সন্তান আসমা। বাবা-মা এর বড় সাধের এবং বড় দু’ভাইয়ের আদরের একমাত্র বোন সে।
বাবা-মায়ের দৈনিক স্বপ্ল আয়ে সুখে-দুঃখে, আনন্দ-বেদনায় বেশ চলছিল আসমাদের পরিবার। শান্ত হলেও উচ্ছল সদা হাস্যময়ী আসমা বেড়ে ওঠে গ্রামীণ সাধারণ পরিবেশে। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় গোপীনাথপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এ ভর্তি হয় সে। অল্প দিনেই আচরণ আর মেধাকে পুজিঁ করে সে হয়ে ওঠে শিক্ষক-শিক্ষিদের প্রিয় ছাত্রী। প্রতিবছর মেধার স্বাক্ষর রেখে ২০১৪ সালে উত্তীর্ণ হয় তৃতীয় শ্রেণিতে। স্বাভাবিক ভাবেই পড়ালেখা, বাবা-মায়ের স্নেহ, বড় ভাইদ্বয়ের ভালবাসা আর সহপাঠী প্রতিবেশি খেলার সাথীদের নিয়ে চলছিল আসমার জীবন।
এরই মধ্যে আসমা মাঝে মাঝে মাথায় যন্ত্রনা অনুভব করতে থাকে। প্রায়ই ঘুরে ফিরে যন্ত্রনা হতে থাকে। আসমা মায়ের কোলে শুয়ে যন্ত্রনায় ছটফট করে। দরিদ্র মা-বাবা একমাত্র মেয়ের কান্নামিশ্রিত মুখ দেখে দিশেহারা হয়ে পড়ে। প্রথমে অবহেলা করলেও পরে আসমা’র মা-বাবা দারস্থ হয়ে স্থানীয় হাতুড়ে ডাক্তারের কাছে। চলতে থাকে অন্ধকারে হাতড়ানো। হাতুড়ে ডাক্তার আর কবিরাজের চিকিৎসায় কোন কাজ না হয়ে যখন দিনে দিনে যন্ত্রনা আরও বাড়তে থাকে তখন ভিটেমাটিহীন দিনমজুর বাবা নূর ইসলাম ছুটে যায় স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের কাছে। আলোচনা-পরামর্শ আর স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় আসমাকে নিয়ে যাওয়া হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, তারপর শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল, খুলনাতে। উভয় হাসপাতালে অভিজ্ঞ নিউরো ও স্পাইন সার্জন এবং স্নায়ুরোগ (ব্রেইন, নার্ভ) ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শে অনেক অর্থ ব্যয় করে বিভিন্ন প্রকার পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে তাঁরা যে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তা হলো- আসমা ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত। তাঁরা আরো আশঙ্খা করছেন যে ক্যান্সারেও আক্রান্ত হতে পারে। সেজন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা আসমার সংশ্লিষ্ট পরীক্ষা নিরীক্ষা পূর্বক অপারেশনের পরামর্শ প্রদান করেছেন।
সব কিছু জেনে বুঝে দিনমজুর অসহায় মা-বাবার পক্ষে অপারেশন তো দূরের কথা পরবর্তি পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা চিকিৎসা কোনটিই করার সামর্থ নেই। এ ব্যাপারে আসমার বাবা মোঃ নূর ইসলাম গাজী কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, ‘আমি গবীর মানুষ ভাই। বড় সাধের মেয়ে আমার। তাকিয়ে দেখেন (মেয়েকে দেখিয়ে) এমন ফুটফুটে মেয়ে টাকা নেই বলে ………(কান্নায় ভেঙে পড়েন)। আত্মীয়, এলাকার লোক অনেক করেছে আমার জন্য। কোন মুখে তাদের কাছে যাই। অনেকে অনেকের কাছে যেতে বলছে, আমি গবীর মানুষ আমার কথা কি কেউ শুনবে।’
প্রিয় পাঠক, কাহিনীটি এখানেই শেষ নয় কিন্তু পরবর্তি কাহিনীও আমার জানা নেই। কি ঘটতে চলেছে অবুঝ ফুটফুটে ছোট্ট শিশু আসমা ভাগ্যে(?)। তার অসহায় দরিদ্র দিশেহারা পরিবার কিভাবে যোগাবে পরবর্তি চিকিৎসা ব্যয়। নাকি অকালেই ঝরে যাবে অবুঝ মেধাবী শিশু আসমা খাতুন, যে এখনও ভাল করে চিনতেই শেখেনি পৃথিবীকে, পূর্ণ হয়নি অনেক না দেখার সাধ। তাই আসুন আমরা সকলেই আমাদের মানবতাকে কাজে লাগিয়ে যার যত টুকু সামর্থ্য তা দিয়েই সাহায্য করি অসহায়-অসুস্থ-মেধাবী ছোট্ট শিশু আসমাকে। হতেও তো পারে আপনার যৎসামান্য সাহায্যে একটি শিশু ফিরে পেতে পারে তার জীবন, ভরিয়ে তুলতে পারে তার ভবিষ্যতে, সুন্দর নির্মল হাসিতে ভরে উঠতে পারে এক একটি পরিবাবের সকল সদস্যদের মুখ। আসমা ফিরে যেতে পারে তার শিক্ষাঙ্গনে, আবারও হাসি-খুশি আর উচ্ছলতায় ভরে উঠতে পারে একটি করূন অসহায় মুখ।
আসমাকে সাহায্য পাঠানোর ঠিকানাঃ
মোঃ নূর ইসলাম গাজী
সঞ্চয়ী হিসাব নং-৩১৫৯৩
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড।
কলারোয়া শাখা। সাতক্ষীরা।
বিস্তারিত জানতেঃ মোঃ নূর ইসলাম গাজী (পিতা), ০১৮৫৯১৭৯৮৫৭, ০১৭৫৬৮৯১৭২৯।
মন্তব্য চালু নেই