বসন্তের জোয়ার গ্রন্থমেলায়

অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বসন্ত আজ যোগ করেছে ভিন্নমাত্রা। পুরো মেলা প্রাঙ্গণে লেগেছে হলুদ রঙের ছোঁয়া। তরুণীরা বসন্তের সাজে নিজেদের সাজাতে খোপায়-গলায়-মাথায় পরেছে গাঁদা ফুলের মালা। হাতে রেশমি চুড়ি আর পরনে বাসন্তি রঙের শাড়ি।

বসন্ত উপলক্ষে পুরুষদের পরনেও শোভা পায় রঙিন পাঞ্জাবি-ফতুয়া। অভিভাবকদের সঙ্গে গ্রন্থমেলায় আগত শিশুরাও পরে বাহারি পোশাক। মেলা প্রাঙ্গণে বসন্তের ফুল হয়ে শিশুরা যেন বিচরণ করতে থাকে।

ছুটির দিন ও শিশু প্রহর হওয়ায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে মেলা প্রাঙ্গণে দর্শনার্থী-ক্রেতারা আসতে শুরু করেন। বিশেষ করে মেলার এক প্রাঙ্গণ বাংলা একাডেমি শিশু কর্নারটি ছিল শিশুদের পদচারণায় প্রাণবন্ত। হাতে বই ও মুখে হাসি— এমনটিই ছিল সকালের দৃশ্য।

সকাল গড়িয়ে দুপুর নামতে না নামতেই নগরীর তরুণ-তরুণীরা গ্রন্থমেলায় ভিড় করতে থাকেন। কোনো কোনো তরুণী ‍মুখে, হাতে আঁকিয়েছেন আল্পনা। হাতে শোভা পায় তাদের পছন্দের নানা বই। কোনো কোনো তরুণ-তরুণী হাতে হাত রেখে ঘুরেছেন মেলা প্রাঙ্গণে। একে অপরকে উপহার দিয়েছেন প্রিয় লেখকের নতুন বই।

বই কেনার এমন দৃশ্য দেখে মনে হচ্ছিল যেন ভালবাসার তীব্র বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর উন্মুক্ত স্থান এই গ্রন্থমেলা। আর আজকের দিনের প্রিয় উপহার যেন নতুন বই।

মেলা প্রাঙ্গণে হাস্যোজ্জ্বল একদল তরুণ-তরুণীর কাছে অনুভূতি জানতে চাওয়া হলে তারা জানান, বছরের এই দিনটির জন্য তারা অপেক্ষায় থাকেন। আজ ভাললাগা আর ভালবাসা ছাড়া কিছুই তাদের মাথায় আসছে না।

মিরপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী ইবরার জামান বলেন, ‘নিজের সাধ্যমতো এই দিনটাতে আমি প্রিয়জনদের হাতে বই তুলে দেই। এতে খুব আনন্দ পাই।’

এদিকে বসন্তের প্রথম দিকে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড় দেখে প্রকাশকরাও বেশ খোশ মেজাজে আছেন। বসন্ত উপলক্ষে কোনো কোনো স্টল সাজানো হয় গাঁদা ফুলে। কোনো কোনো স্টলে মৃদুস্বরে বাজতে থাকে বসন্ত বন্দনার গান।

বসন্তের এই দিনে প্রকাশকরা বেশ ব্যস্ত হয়ে পড়েন ক্রেতাদের সামলাতে। তাদের আশা বিগত দিনের লোকসান কিছুটা হলেও আজকে হয়ত কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

সময় প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ জানান, ‘বসন্তের প্রথম দিনে মেলায় বেশ বই বিক্রি হয়। আজও তার ব্যতিক্রম নয়।’

আমরা চাই মেলা প্রাঙ্গণে সব সময়ই যেন ক্রেতা-দর্শনার্থীদের এমন ভিড় থাকে।



মন্তব্য চালু নেই