বলিউডে এখন দাড়ির যুগ!

অনস্ক্রিন হোক বা অফস্ক্রিন, বিয়ার্ডেড লুক এখন নতুন ট্রেন্ড। বলিউড তারকা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, ট্রেন্ডে গা ভাসিয়েছেন সকলে। অনেক অভিনেতা তো বিয়ার্ডেড লুকে পরদায় এসে বদলে ফেলছেন তাঁদের কেরিয়ারগ্রাফও! চকোলেট বয় ইমেজ, নাকি বিয়ার্ড লুক, কার কদর বেশি এই নিয়ে আলোচনার শেষ নেই বলি-মহলে।

রণবীর সিং: শুরুটা হয়েছিল সঞ্জয় লীলা বনশালীর ‘গোলিওঁ কি রাসলীলা রামলীলা’ ছবির সময় থেকে। চকোলেট বয় ইমেজে দেখতে অভ্যস্ত দর্শক রণবীর সিংকে চিনেছিলেন এক নতুন লুকে। শোনা যায়, ছবির শ্যুটিং শুরুর আগে সঞ্জয় নাকি রণবীরকে জানিয়েছিলেন, দাড়ি রাখার প্রয়োজন নেই! নকল দাড়িতেই শ্যুটিং হয়ে যাবে। কিন্তু পরিচালকের এই প্রস্তাবে রণবীর রাজি হননি! পরিচালকের কাছ থেকে কয়েকমাস সময় চেয়ে নিয়েছিলেন রণবীর। যত্ন করে চুল বড় করেছিলেন তিনি। সঙ্গে দাড়িও। শুধু ‘… রামলীলা’ নয়, এরপর ‘গুন্ডে’ এবং ‘বাজিরাও মস্তানি’তেও বিয়ার্ডেড লুকে তাঁকে পরদায় দেখেছেন দর্শক। এবং তাঁর দাড়িওয়ালা লুকটাই বেশি প্রশংসিত।

অমিতাভ বচ্চন: তখন তাঁর প্রায় দেউলিয়া অবস্থা। শখ করে কেনা বিদেশি গাড়ি নিলাম করে দিতে হয়েছে। বাড়িও বিক্রি হয়ে যেতে পারে যে কোনও সময়। অমিতাভ বচ্চনের কথাতেই, ‘‘২০০০ সালে সারা বিশ্বের মানুষ যখন নতুন সহস্রাব্দকে স্বাগত জানাতে ব্যস্ত, আমি তখন দেউলিয়া! হাতে কাজ নেই। ব্যাঙ্কে টাকা নেই। মাথার উপর হাজারো মামলা ঝুলছে…।’’ সেই দেউলিয়া অবস্থা থেকে অমিতাভ বচ্চন কামব্যাক করলেন রিয়্যালিটি শো ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’র হাত ধরে। সারা দেশ চিনেছিল নতুন শাহেনশাকে। যাঁকে ক্লিন শেভ্‌ন অ্যাংরি ইয়ং-ম্যান অবতারে দেখতে অভ্যস্ত দর্শক, তিনি পরদায় ধরা দিয়েছিলেন ফ্রেঞ্চকাট লুকে। অমিতাভের নতুন লুক হিট হতে সময় নেয়নি। তারপর থেকে আর নিজের লুক নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেননি তিনি।

রণবীর কাপূর: এমনিতে পরদায় তাঁকে ক্লিন শেভ্‌ন লুকে দেখতেই অভ্যস্ত দর্শক। কিন্তু ‘ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’ ছবির বেশ কিছু দৃশ্যে স্টাবল্‌ড লুকে পরদায় এসেছিলেন রণবীর। তাঁর নতুন লুক ‘রণবীরহোলিক’দের মনে ঢেউ তুলতে সময় নেয়নি! শোনা যায়, ‘ইয়ে জওয়ানি…’র ভবঘুরে ফোটোগ্রাফার বানির চরিত্রের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতেই গালে হালকা দাড়ি রাখতে চেয়েছিলেন রণবীর। অভিনেতার পরামর্শ মেনেও নিয়েছিলেন ছবির পরিচালক অয়ন মুখোপাধ্যায়। ছবি হিট! সঙ্গে রণবীরের নতুন লুকও। সম্প্রতি ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ ছবির বেশ কিছু দৃশ্যেও স্টাবল্‌ড লুকে পরদায় এসেছেন রণবীর।

শাহরুখ খান: বড় পরদায় নিজের লুক নিয়ে বরাবরই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ভালবাসেন এই তারকা। ক্লিন শেভ্‌ন লাভার-বয় ইমেজের পাশাপাশি, ‘চক দে ইন্ডিয়া’ বা ‘যব তক হ্যায় জানে’র মতো ছবিতে তাঁর বিয়ার্ডেড লুক সমান জনপ্রিয়। এখন আবার ‘ডিয়ার জিন্দেগি’তে ফ্লন্ট করছেন দাড়িওয়ালা ‘রাগেড’ লুক। শোনা যায়, ব্যক্তিগতভাবে শাহরুখ নাকি নিজের ক্লিন শেভ্‌ন লুকটাই বেশি পছন্দ করেন। তবে এই বিষয়ে বাবার সঙ্গে একমত নয় কিংগ-কন্যা সুহানা। তার মতে, গালে হালকা দাড়ি থাকলেই নাকি শাহরুখকে বেশি আকর্ষণীয় লাগে! ইদানীং বিয়ার্ডেড লুক’এই স্বচ্ছন্দবোধ করছেন নায়ক। রিয়্যালিটি শো কিংবা অন্যকিছু— সর্বত্র দাড়ি মুখে হাজির হচ্ছেন তিনি!

সাইফ আলি খান: বিয়ার্ডে়ড লুকটাকে একপ্রকার নিজের ট্রেডমার্ক বানিয়ে ফেলেছেন সfইফ আলি খান। ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছেন সেই ১৯৯৩ সালে। ‘পরম্পরা’ ছবির হাত ধরে। দীর্ঘ স্ট্রাগ্‌লের পর প্রথম সইফ সাফল্যের মুখ দেখেন ২০০১ সালে। ছবির নাম ‘দিল চাহতা হ্যায়’। এরপর তাঁকে আর কেরিয়ার নিয়ে বেগ পেতে হয়নি। বলিউডে টিকে থাকতে গেলে তাঁর লুকে যে পরিবর্তন আনার প্রয়োজন সেটা বুঝেছিলেন সfইফ। এবং ক্লিন শেভ্‌ন চকোলেট বয় ইমেজের চেয়ে বিয়ার্ড ‘রাগেড’ লুকেই যে তাঁকে বেশি মানায়, সে কথা একবাক্যে মেনে নেবেন সকলে। ব্যাকব্রাশ করা চুল, গালে ট্রিম করা দাড়ি এবং পরনে থ্রি-পিস্‌ স্যুট— ছোট নবাবের আভিজাত্যই আলাদা।

হৃতিক রোশন; ক্যারি করতে হয়, তা হৃতিকের চেয়ে ভাল সম্ভবত কেউ জানেন না! ক্লিন শেভ্‌ন হোক, স্টাবল্‌ড কিংবা বিয়ার্ডেড লুক— যে কোনও কিছুতেই তিনি স্বচ্ছন্দ। সমান অ্যাপিলিংও! ‘গুজারিশ’ এবং ‘কাইট্‌স’ ছবিতে তাঁর বিয়ার্ডে়ড লুক এবং ‘অগ্নিপথ’ ছবিতে তাঁর স্টাবল্‌ড লুক পছন্দ করেছেন দর্শক। শুধু বড় পরদায় নয়, পরদার বাইরেও স্টাবল্‌ড অবতারেই বেশি স্বচ্ছন্দ হৃতিক।-এবেলা



মন্তব্য চালু নেই