বরখাস্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থীদের শরীরের ওপর দিয়ে হাঁটা উপজেলা চেয়ারম্যান
শিক্ষার্থীদের পিঠকে পদ্মাসেতু বানিয়ে হাঁটা চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলা চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটোয়ারীকে বরখাস্ত করতে যাচ্ছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপজেলা শাখার একাধিক পদস্থ কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেন। একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যান যে কাজ করেছে, তাতে তাকে বরখাস্ত না করার কোনো উপায় নেই। মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন মাত্র অফিসে এসেছেন, এই আদেশ হতে হতে কিছুটা বিলম্ব হতে পারে।’ অন্য একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই আদেশ হতে হতে রবিবার হয়ে যেতে পারে।খবর ঢাকাটাইমসের।
কর্মকর্তারা জানান, ওই উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। এই অবস্থায় তাকে দায়িত্ব পালন করতে দিতে চায় না মন্ত্রণালয়। তিনি আপাতত বরখাস্ত হচ্ছেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আসার পর তার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এর আগে উপজেলা চেয়ারম্যানের এই কাণ্ডের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর তীব্র সমালোচনার মুখে ঘটনাটি তদন্ত করতে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সৈয়দ সারোয়ার জাহানকে প্রধান করে একটি কমিটি করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। বুধবার গঠন করা ওই কমিটি আজ বৃহস্পতিবার থেকে কাজ করবে বলেও জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে সুষ্ঠু তদন্ত করে ঘটনার মানবিক এবং স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায় নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ গিয়েছে বিভাগীয় দপ্তরে।
সোমবার হাইমচর উপজেলার নীলকমল ওসমানিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে নবম ও দশম শ্রেণির কিছু শিক্ষার্থী মিলে একটি ‘মানবসেতু’ তৈরি করে। পরস্পরের হাত ধরে একদল ছাত্র সেতু বানায়। সে সেতুর উপর উপুড় হয়ে শোয়ে ছিল আরও কয়েকজন ছাত্র। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যায় সবার উপরে হাঁটছেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপজেলা চেয়ারম্যান নুর হোসেন পাটোয়ারী।
হাইমচরের উপজেলা চেয়ারম্যান হোসেন পাটোয়ারী গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করছেন তার প্রতি সন্তুষ্টি জানিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমাকে মানবসৃষ্ট সেতুর উপর দিয়ে হাঁটার অনুরোধ জানায়। অনিচ্ছা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের অনুরোধে আমি তাদের পিঠের উপর দিয়ে কিছু সময় হাঁটি।’
জনাব পাটোয়ারি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের পিঠের উপর দিয়ে হাঁটার কোনো ইচ্ছে আমার ছিল না। আমি তাদের নিষেধও করেছিলাম। কিন্তু তাদের জোরালো অনুরোধে আমি সাড়া দিতে বাধ্য হই।’
শিক্ষার্থীরা জানান, এবারই ওই স্কুলে প্রথমবারের মতো এই ঘটনা ঘটেনি। নিয়মিতই সেখানে এই চর্চা হয়ে আসছে। আর এবার উপজেলা চেয়ারম্যান এই ঘটনা ঘটানোর পর তার কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা উপহারও পেয়েছে শিক্ষার্থীরা।
মন্তব্য চালু নেই