ফুলবাড়ীতে রেলওয়ের পরিত্যক্ত ভবনগুলো এখন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য
শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর থেকে : দিনাজপুরের ফুলবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনের পরিত্যক্ত ভবনগুলো এখন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আসর বসে মাদকের। আর এখান থেকেই ঘটছে চুরি ছিনতাই,ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধের পরিকল্পনা। সেই সাথে চুরি হয়ে যাচ্ছে পরিত্যক্ত ভবনের মুল্যবান লোহা, রড,টিন ও ইট সহ বিভিন্ন সামগ্রী।
এক সময় রেলওয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বসবাসের জন্য নির্মিত এই ভবনগুলো ১০/১৫ বছর আগেই বসবাসের অযোগ্য হওয়ায় রেলওয়ে প্রকৌশলী বিভাগ এই ভবনগুলোতে পরিত্যক্ত ভবন হিসেবে ঘোষনা করে। যার ফলে এখন সেখানে কোন ব্যক্তি বসবাস না করায় এই পরিত্যক্ত ভবনগুলোতে আড্ডা জমিয়েছে এলাকার চিহ্নিত দুঃস্কৃতিকারি ও মাদক সেবীরা। সেখানে মাদকের আড্ডা,জুয়ার আড্ডা ও অপরাধীদের আড্ডায় পরিণত হয়েছে। এই আড্ডাকারী মাদকসেবীরা তাদের মাদক সেবনের খরচ যোগাতে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে রেলওয়ে ভবনের মুল্যবান টিন,লোহা,রড ও ঘরের ইট পর্যন্ত। ইতিমধ্যেই তাদের হাতে শেষ হয়ে গেছে রেলের কয়েকটি ভবন।
রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, রেলওয়ে স্টেশনের সন্নিকটে একটি পরিত্যক্ত ভবন এখনও দাঁড়িয়ে আছে। পাশের ভবনটি লোহা,টিন সবই চুরি হয়ে গেছে। একই অবস্থা রেলওয়ে স্টেশনের পূর্ব পার্শ্বে খালাসীভবনগুলোর। সেখানেও রেলের মোটা মোটা টিনগুলো কয়েকটি চুরি হয়ে গেছে। বাঁকী টিনগুলোও চুরি হওয়ার উপক্রম। এছাড়া মালামাল বহনের ৪ নং লাইনের ধারে যে গোডাউনটি ছিল তার চিহ্ন পর্যন্ত নাই। সবই গেছে মাদক সেবীদের হাতে হাতে।
এলাকাবাসীরা জানায়, মাদক সেবীরা রাত হলেই রেলওয়ের ঘরের ছাউনির টিনগুলো খুলে নিয়ে গিয়ে ভাংড়ীর দোকানে বিক্রি করছে। এমনকি ঘরের ইটগুলো পর্যন্ত খুলে নিয়ে গিয়ে তারা কোন না কোন ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করছে। এভাবেই হারিয়ে যাচেছ রেলের মুল্যবান সম্পদ। ফুলবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রবিউল ইসলাম বলেন, রেলওয়ের আইন শৃঙ্খলা দেখভাল করে রেলওয়ে পুলিশ। কিন্তু রেলওয়ে পুলিশ স্টেশন ফুলবাড়ীতে না থাকায় পার্বতীপুর থেকে এসে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিতে পারে না। যার ফলেই চুরি হয়ে যাচ্ছে,রেলের পরিত্যক্ত ভবনের রড ও টিনগুলো।
রেলওয়ে প্রকৌশলী অধিদপ্তরের(আই ডাব্লু) সহকারী প্রকৌশলী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভবনগুলো অনেক আগেই পরিত্যক্ত ঘোষনা করা হয়েছে। এখন ওই ভবনগুলো নিলামে বিক্রির জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলেই এগুলো নিলামে বিক্রি করা হবে।
এদিকে রেলওয়ে ভবনগুলোতে অপরাধীদের অভয়ারণ্য হওয়ায় প্রতিদিনই ঘটছে রেলওয়ে যাত্রীদের মালামাল চুরি ছিনতাই এর ঘটনা। এজন্য রেলওয়ে স্টেশনের বাসিন্দা ও রেলওয়ে যাত্রীরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মন্তব্য চালু নেই