ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) এর কিছু খবর :
ফুলবাড়ীতে অবরোধে বিজিবির নিরাপত্তায় চলছে দূরপাল্লার যানবাহন
২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধের ফলে যখন স্বাভাবিক যানবাহন বন্ধ হয়ে পড়েছে ঠিক সেই সময় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী ২৯ বিজিবি বিশেষ নিরাপত্তায় গত কয়েকদিন থেকে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে দিনাজপুর থেকে ঢাকা সহ বিভিন্ন বড় বড় বিভাগীয় শহরে চলাচলরত দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসসহ পণ্যবাহী ট্রাক ও কনটেইনারগুলো ফুলবাড়ীর ২৯বিজিবির টহল দলের বিশেষ নিরাপত্তায় চলাচল করছে। ফলে একেবারে বন্ধ হওয়া যোগাযোগ কিছুটা স্বাভাবিক হতে দেখা গেলেও আতংক রয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
ফুলবাড়ীর ২৯ বিজিবির অধিনায়ক লে কর্ণেল জাহিদুর রশিদ(পিএসসি) জানান, জনগণের যাতায়াতের সুবিধার্থে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল করতে ২৯ বিজিবির একাধিক টহলদল মহাসড়ক গুলোতে দায়িত্ব পালন করছে।
ফুলবাড়ীতে ২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধে সবজি চাষীদের মাথায় হাত
২০ দলীয় জোটের টানা অবরোধের ফলে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে মাথায় হাত পড়েছে সবজি চাষীদের। অবরোধের কারনে যান চলাচল একেবারে বন্ধ থাকায় তাদের উৎপাদিত সবজি পরিবহন করতে না পারায় এখন পানির দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে করে তাদের উৎপাদিত মূল্য উঠছে না।
ফুলবাড়ী সবজি বাজারে গিয়ে দেখা যায় সবজি চাষীরা বাজারে সবজি নিয়ে আসলেও কোন ক্রেতা নেই। সবজি ব্যাবসায়ীরা জানায় সবজি কিনে কোথাও পরিবহন করা যাচ্ছে না তাই তারা তাদের সবজির আড়ৎ বন্ধ করে রেখেছে। তারা জানায় এই অঞ্চলে যে সবজি উৎপাদন হয় তার সিংহ ভাগ সবজি রাজধানী শহর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে চলে যায়। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে টানা অবরোধের কারনে সেই সবজি পরিবহন করা সম্ভব হচ্ছে না। অপরদিকে স্থানীয় চাহিদার চেয়ে উৎপাদন অনেক বেশি হওয়ায় সবজির বাজারে ধস নেমেছে।
বাজার ঘুরে দেখা যায় গত কয়েক দিন আগেও প্রতিটি ফুলকপি ১০ টাকা দরে বিক্রি হলেও এখন তার মূল্য মাত্র ২ টাকা, এখন প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৮ হতে ১০ টাকা দরে, অথচ কয়েকদিন আগেও প্রতি কেজি টমেটোর মূল্য ছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকা । একই অবস্থা পিয়াজ,আলু বেগুনের মূল্যতেও। বেগুন চাষি উপজেলার রাংগামাটি গ্রামের গৌতম চন্দ্র ও মলিন সিং ও রাজারামপুরের মনোয়ার হোসেন, মকছেদ আলীসহ কয়েক জন জানান, কৃষক যদি তাদের উৎপাদিত পণ্যের মুল্য না পায়, প্রতি বছরেই যদি একের পর এক নতুন সমস্যার মূখে পড়ে লোকসান খেতে থাকে প্রতিটি ফসলে তাহলে কৃষক আর মাথা উঁচু করে দাড়াতে পারবে না। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, এখন রাজনীতির প্রতিযোগীতার দৌড়ে পিষ্ঠ হয়ে মরছে কৃষক, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা। এভাবে চলতে থাকলে এই শ্রেণী পেশাজীবিরা পথে বসতে বাধ্য হবে। এজন্য তারা তাদেরকে রাজনীতির রোষানলের শিকার না করার জন্য অনুরোধ জানান।
অবরোধে বন্ধ হয়ে পড়েছে বড়পুকুরিয়া ও মধ্যপাড়া খনির কয়লা ও পাথর সরবরাহ
২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধের জেরে দিনাজপুরে বড়পুকুরিয়া ও মধ্যপাড়া খনির কয়লা ও পাথর সরবরাহ বন্ধ হয়ে পড়েছে।
খনি সূত্রে জানাগেছে, দেশের দূরদূরান্ত এলাকার ভাটা মালিকেরা কয়লার ডিও ক্রয় করলেও পরিবহন করতে না পারায় তারা খনি থেকে কয়লা সরবরাহ নিতে পারছে না। একই অবস্থা মধ্যপাড়া কঠিন শিলা খনিতে সেখানেও বিভিন্ন পাথর ব্যবসায়ীরা পাথার কেনার চাহিদা দিলেও তারাও অবরোধের কারনে পরিবহন করতে না পেরে পাথর সরবরাহ নিতে পারছেন। এতে প্রতিদিনে খনিটিতে অবিক্রিত পাথরের মজুদ বাড়ছে এবং খনিটি প্রতিদিনে কোটি টাকার উর্দ্ধে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
গতকাল রোববার বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে গিয়ে দেখা যায় কয়লা নিতে আসা শতশত ট্রাক খনি গেটে সারিবদ্ধ ভাবে দাড়িয়ে আছে। ট্রাক চালকেরা জানায় ট্রাকে কয়লা বহন করা ব্যাপক ঝুকি দেখা দিয়েছে। অবরোধের মধ্যে কোন দূরঘটনার সিকার হলে কয়লাটি জ্বালানী দ্রর্ব হওয়ায় তা ধ্বংস হয়ে যাবে। একারণে তারা কয়লা নিয়ে দূর পাল্লার পথ পারি না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে খনির গেটে অপেক্ষা করছেন।
বড়পুকুরিয়া খনি কতৃপক্ষ জানান কয়লার চাহিদা প্রচুর থাকায় ইট-ভাটা মালিকেরা হুমড়ি খেয়ে কয়লা ডিও কিনলেও তারা পরিবহন করতে না পেরে খনি থেকে কয়লা সরবরাহ নিতে পারছেনা। এতে করে কয়লা ইয়ার্ডে কয়লার পরিমান বৃদ্ধি পাওয়ায় কয়লার স্থুপে ঝুকি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে ভাটা মালিকেরা জানায় কয়লার অভাবে ভাটা বন্ধ হয়ে গেলেও অবরোধের কারনে কয়লা সরবরাহ করা যাচ্ছে না। এতে করে স্তমিত হয়ে পড়েছে ভাটার কার্যক্রম। এ অবস্থা চলতে থাকলে যে পরিমান টাকা ভাটায় বিনিয়োগ করা হয়েছে তার অর্ধেকও উঠবে না।
মন্তব্য চালু নেই