ফরিদপুরের এক সময়ের অন্যতম ফসল রাই-সরিষা বিলীনের পথে

বাংলাদেশ কৃষি মাতৃক দেশ এ কথা যেমন সত্য তেমনি বাংলার কৃষি আজ হুমকির মুখে পড়ে আছে এই কথাটিও তেমন সত্য। জেলার অধিকাংশ কৃষক বিভিন্ন প্রকার ফসলের চাষাবাদ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। এর মধ্যে রাই-সরিষা শস্যটি ছিলো ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলার অন্যতম ফসল। এই শস্যটি এক সময়ে ছিলো কৃষকের নিয়মিত চাষাবাদ ফরিদপুরে।

বর্তমানে পাট- পিয়াজের পাশাপাশি অন্যান্য ফসল বেশি চাষাবাদ করার জন্য রাই-সরিষার চাষ একেবারে কমে গেছে। ১৯৯৫ সালের পুর্বে শীতকালে জেলার প্রতিটি গ্রামগঞ্জের মাঠ ভরা দেখা যেত শুধু রাই-সরিষার আবাদ। সেই সময়ে পরন্ত বিকালে চারিদিকে সরিষার ক্ষেতে মৌ-মাছির গুনগুন শব্দে ভরে উঠতো হৃদয়। বছরের পর বছর কৃষক তাদের চাষ করা সরিষা দিয়ে তৈরি করতো খাটি সরিষার তেল।

এদেশের মানুষের রান্না, ব্যবহারের একমাত্র ভরসা ছিলো এই সরিষার তেল। সয়াবিন-পামওয়েল তখনকার সময় কেউ ব্যবহার করতো না, বলতে গেলে পরিচয় ছিলো না এই তেল গুলোর সাথে। বর্তমানে শতকরা ৯৯% মানুষ তাদের ঐতিহ্যবাহী সরিষার তেল না পাওয়ায় সয়াবিন ও পামওয়েলের উপর নির্ভরশীল। মাছ-ভাতের পাশাপাশি খাটি সরিষার তেল ছিলো কৃষকের প্রধান খাদ্য।

আজ সে সব খাদ্য ও পন্য থেকে অনেক দুরে রয়েছে সাধারন মানুষ। জেলায় রাই-সরিষার আবাদ না থাকায় মৌ-মাছির মৌচাক ও মধু বিলীনের পথে চলে গেছে। মৌমাছিরা এই রাই-সরিষার ফুল থেকে মধু আহরন করে মৌচাক তৈরি করতো, আর সাধারন মানুষ তাদের পর্যাপ্ত মধু উৎপাদন করে খেত আর পন্য হিসাবে বাজারে বিক্রি করতো। আজ এই অতি মূল্যবান ফসলটি রাই-সরিষা বিলীনের পথে চলে গেছে জেলায়।

বিজ্ঞজনেরা মনে করছেন নিজেদের সুস্থ থাকতে হলে রাই-সরিষার চাষাবাদ বাড়াতে হবে সাথে খাবার রান্নায় সড়িষার তেল রাখতে হবে। বাইরের সয়াবিন-পামওয়েল তেলের ব্যবহার কমাতে হবে, তাহলেই সুস্থ থাকা সম্ভব অনেকটা।



মন্তব্য চালু নেই