প্রেসক্লাব থেকে বেরুতেই ফখরুল গ্রেপ্তার, প্রতিবাদে ঠাকুরগাঁওয়ে হরতাল

প্রেসক্লাব থেকে ডিবি কার্যালয়ে ফখরুল

টানা ২০ ঘণ্টারও বেশি সময় জাতীয় প্রেসক্লাবে অবস্থানের পর সোমবার বিকেল সোয়া ৪টায় বের হন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বের হওয়ার পর মূল ফটকেই তাকে আটক করে রমনা থানা ও ডিবি পুলিশ। আটকের পর তাকে বহনকারী সাদা পাজেরো গাড়িটি সোজা নিয়ে যাওয়া হয় মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে। বকশীবাজারে বিএনপি মিছিলে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

বিকেল ৪টায় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন মির্জা ফখরুল। এসময় তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত নিরাপত্তাজনিত কারণে রাতে আমি প্রেসক্লাবে অবস্থান করেছি। আমাকে আতিথেয়তা দেয়ার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।’

বক্তব্য শেষে প্রেসক্লাবের নিচে রাখা ব্যক্তিগত পাজেরো গাড়িতে চড়েন ফখরুল। এসময় তাকে ঘিরে বিএনপি ও আওয়ামীপন্থি সাংবাদিকরা ছিলেন। আওয়ামীপন্থি সাংবাদিকরা ফখরুলকে কটাক্ষ করে স্লোগান দেন।

সাংবাদিকদের ভিড় ঠেলে গাড়িটি প্রেসক্লাবের প্রধান ফটকে যেতেই ডিবি পুলিশের সদস্যরা সাংবাদিকদের সরিয়ে গাড়িটিকে ঘিরে ফেলে। এ সময় বিএনপিপন্থি সাংবাদিকদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তিও হয়। সাংবাদিক নেতা আব্দুল হাই শিকদারকে পুলিশ টেনে হিঁচড়ে সরিয়ে নিতেও দেখা যায়।

পরে ফখরুলের গাড়ির দরজা খুলে একজন ডিবি সদস্য ঢুকে পড়েন। তার গাড়ির সামনে ও পেছনে পুলিশের গাড়ি অবস্থান নেয়। ফখরুলকে পুলিশের প্রিজন ভ্যান গাড়ির বেষ্টনিতে সাইরেন বাজিয়ে সোজা নিয়ে যাওয়া হয় মিন্টু রোডের ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে।

ফখরুলকে আটকে নেতৃত্ব দেন পুলিশের রমনা জোনের সহকারী কমিশনার শিবলী নোমান। এসময় ডিবির কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও ছিলেন।

প্রেসক্লাব থেকে বেরুতেই ফখরুল গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তার হওয়ার আগে প্রেস ব্রিফিংয়ে ফখরুল
গ্রেপ্তার হওয়ার আগে প্রেস ব্রিফিংয়ে ফখরুল

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার পর জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে বেরুনোর পথেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে তিনি এক সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্রিফিং করেন। এ সময় তিনি বলেন, ব্যক্তিগত নিরাপত্তার কারণে আমি প্রেসক্লাবে ছিলাম।
প্রেস ব্রিফিং শেষ করে মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ১২ মিনিটে তার গাড়িতে (ঢাকা মেট্রো-ঘ ১১৬৭-১৯) উঠে বসেন। এ সময় প্রজন্ম লীগের নেতাকর্মীরা ও আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাংবাদিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে স্লোগান দেয়। অন্যদিকে বিএনপিপন্থী সাংবাদিকরা ফখরুলের গাড়ির চারদিকে ঘিরে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করে। এমনকি দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তিও হয়।
এরপর পুলিশ সদস্যরা ফখরুলের গাড়ির দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন এবং গাড়িসহ ফখরুলকে গ্রেপ্তার করে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যান।
ফখরুল বের হওয়ার সময় তার সঙ্গে ছিলেন জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, আব্দুল হাই সিকদার, জাহাঙ্গীর আলম প্রধানসহ বিএনপিপন্থী পেশাজীবী নেতারা।
সোমবার দুপুরের পর সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সমাবেশে বক্তব্য দেন ফখরুল। এ সময় প্রেস ক্লাবের চারিদিকে পুলিশ অবস্থান নেয়। এ অবস্থায় বক্তব্য শেষে তিনি প্রেসক্লাবের ভেতরেই অবস্থান নেন।
ফখরুলের এ সময় প্রেস ক্লাবের বাইরে অবস্থান করা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের কর্মীরা ফটক টপকে ভেতরে ঢুকে বিএনপি কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় রণক্ষেত্রে পরিণত হয় প্রেস ক্লাব।
এ হামলার বিষয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে দুই পক্ষ।
দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া যখন গুলশানে তার নিজ কার্যালয়ে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন, ঠিক সে সময়ই গ্রেপ্তার হলেন ফখরুল।

মির্জা ফখরুল গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে হরতাল শুরু

Fakrulবিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে হরতাল শুরু করেছে জেলা বিএনপি।

মঙ্গলবার বিকেল ৫টা হতে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ হরতাল পালনের ডাক দিয়েছে জেলা বিএনপি।

মঙ্গলবার বিকেলে হরতালের এ ঘোষণা দিয়েছেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মির্জা ফয়সাল আমিন।

এর আগে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির উদ্যোগে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিএনপির জেলা কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

পরে প্রতিবাদ সভায় জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মির্জা ফয়সাল আমিন ঠাকুরগাঁও জেলায় হরতাল শুরুর আহ্বান জানান।



মন্তব্য চালু নেই