প্রেমের টানে পালিয়ে বিয়ে : প্রেমিক জেলে-প্রেমিকা সেভহোমে

চট্টগ্রামের রাউজানে প্রেম করে বিয়ে করাই প্রেমিকার মামার দায়ের করা মামলায় প্রেমিক জেলে গেলেও প্রেমিকা নিরাপদ হেফাজতে রয়েছে। জানা যায়, উপজেলার ডাবুয়া ইউনিয়নের হিংগলা এলাকার আবদুল মাবুদ খোকনের পুত্র জাবেদ ফারুকের রাউজান পৌর এলাকার ছত্র পাড়া এলাকার শামশুল আলম সওদাগরের কন্যা জান্নাতুল ফাহিমা এ্যনির সাথে প্রেমের স¤র্পক গড়ে উঠে। দুইজনের প্রেমের সম্পর্ক প্রেমিকা এ্যাানির পরিবার মেনে না নেওয়ায় তারা দুইজনেই পালিয়ে গিয়ে গোপনে গত ১৯ মে ২০১৪ সালের নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে বিবাহের হলফনামামুলে একে অপরকে বিবাহ করে। একই তারিখে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আলকরন ওয়ার্ডের নিকাহ রেজিষ্টার কাজী মৌলানা জামাল উদ্দিনের কাছে দশ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য্য করে নিকাহনামা রেজিষ্টার করেন।

এই বিবাহটি প্রেমিকা এ্যানির পিতা শামশুল আলম সওদাগর ও তার পরিবারের সদস্যরা মেনে না নেওয়ায় ২২ এপ্রিল প্রেমিক জাবেদ এ্যানিকে নিয়ে তার পিতার বাড়ী রাউজানের ডাবুয়া ইউনিয়নের হিংগলা এলাকায় নিয়ে যায়। এ সংবাদ পেয়ে প্রেমিকা জান্নাতুল ফাহিমা এ্যানির মামা রাউজানের উত্তর সর্তা এলাকার মোঃ হাফিজুর রহমানের পুত্র আসলাম উদ্দিন এ্যানিকে রাউজানের কুন্ডেশ্বরী এলাকা থেকে প্রেমিক জাবেদ ফারুক তার সহযোগীরা জোর পুর্বক ধরে নিয়েছে বলে দাবী করে গত ৭ মে রাউজান থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত-০৩) এর ৭/৩০ ধারায় মামলা করেন।

মামলাটি তদন্তকারী কর্মকর্তা রাউজান থানার এস আই খলিল ভিকটিম এ্যানিকে উদ্ধার ও জাবেদকে গ্রেফতার প্রচেষ্টায় অভিযান চালালে গত ১৮ মে প্রেমিক জাবেদ ফারুক ও প্রেমিকা জান্নাতুল ফাহিমা এ্যানি আদালতে আত্মসর্মপন করেন। আদালতে প্রেমিক জান্নাতুল ফাহিমা এ্যানি জবানব›ন্দীতে উল্লেখ করেন, জাবেদ ফারুকের সাথে তার এক বৎসর পূর্বে বিবাহ হয়েছে। এ্যানি এসএসসি পরিক্ষা দিয়েছেন তবে এখনো ফলাফল বের হয়নি। এ্যানি স্বামীকে নিয়ে সুখে রয়েছে বলে আদালতে জবানবন্দ্বীতে উল্লেখ করেন এবং স্বামীর সাথে সংসার করেন। মা-বাবা জানতোনা আমি মাঝে মাঝে শ্বাশুর বাড়ীতে স্বামীর সাথে থাকার কথা। মা-বাবা আমাদের বিয়ে মেনে নিচ্ছেনা। আমি নিজ ইচ্ছায় স্বামীর সাথে গিয়ে ছিলাম। আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে অনত্র বিয়ে ঠিক করায় আমি স্বামীর সাথে পালিয়ে যেতে বাধ্য হই।

আদালত থেকে প্রেমিকা জান্নাতুল ফাহিমা এ্যানির পিতা শাশশুল আলম সওদাগর তার কন্যাকে জিম্মায় নিতে চাইলে আদালতে দেওয়া এ্যাানির জবানবন্দ্বী ও বিবাহের দলিলপত্র বিবেচনা করে প্রেমিক জাবেদ ফারুককে জেল হাজতে ও প্রেমিকা জান্নাতুল ফাহিমা এ্যানিকে হাটহাজারী ফরহাদাবাদে সেভহোমে নিরাপদ হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশক্রমে প্রেমিকা জান্নাতুল ফাহিমা এ্যানিকে হাটহাজারীর ফরহাদাবাদ সেভহোমে নিরাপদ হেফাজতে নিয়ে যায় পুলিশ।

প্রেমিক জাবেদ ফারুককে চট্টগ্রাম জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন পুলিশ। আদালতের নির্দেশে জান্নাতুল ফাহিমা এ্যানির বয়স পরিক্ষার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয় বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাউজান থানার এসআই খলিল জানান। নির্দেশের কপিটি পাওয়া না যাওয়ায় এখনো পরিক্ষা করা হয়নি বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। বিবাহের নিকাহনামা ও হলফনামায়, রাউজান পৌরসভার কাছে থেকে জম্ম নিবন্ধন সনদে জান্নাতুল ফাহিমা এ্যানির জম্ম তারিখ ১৯৯৬ সালের ১৪ এপ্রিল লেখা রয়েছে। জাবেদ ফারুকের জম্ম তারিখ ১৯৯৩ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী লেখা রয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই