প্রবীণ দিবসে ব্যতিক্রমী আয়োজন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের
বিধান মুখার্জী, গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক কোটি চল্লিশ লাখ নাগরিক প্রবীণ।বিশ্বব্যাপী সাস্থ্যসচেতনতা,চিকিৎসা শাস্ত্রের উন্নতি, যোগাযোগ এবং উন্নত জীবনযাপন পদ্ধতি সাধারণ মানুষের আয়ুষ্কাল বাড়িয়ে দিয়েছে অনেকটাই। এরই ফলশ্রুতিতে ক্রমান্বয়ে বেড়েছে প্রবীণদের সংখ্যা আর সমাজ পেয়েছে পরিপক্ক অভিজ্ঞতার দিকনির্দেশকদের।
জাতিসংঘের তথ্য মতে বিশ্বের প্রতিটি দেশেই প্রবিনেরা সবচেয়ে বেশি অবহেলা, অত্যাচার, অবমুল্যায়ন ও শোষণের শিকার হন।বয়স বৈষম্য আর শারীরিক কর্মক্ষমতার হ্রাস এর প্রধান কারণ হলেও দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে প্রাপ্য সামাজিক মর্যাদা এবং অভিজ্ঞতা পূর্ণ অভিভাবক হিসেবে প্রবীণদের যথাযোগ্য মুল্যায়নের নিরিখে জাতিসংঘ ১৯৯০ সালে ১ অক্টোবর দিবসটিকে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।এরপর থেকেই বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও তাৎপর্যপূর্ণ কর্মসূচীর মাধ্যমে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
দিবসটি উপলক্ষে ১ অক্টোবর শনিবার সাভরের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে দিনব্যাপী কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। সকাল সাড়ে নয়টায় ঢাকার সাভার এলাকার প্রায় পাঁচশত প্রবীণ এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মীদের অংশগ্রহনে ‘বয়স বৈষম্য দূর করুন’ স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পি এইচ এ ভবন পর্যন্ত পরিক্রমণ করে। এরপর প্রবীণদের অংশগ্রহনে এক আনন্দঘন পরিবেশে দ্রুত হাঁটা প্রতিযোগিতা, দড়িটান খেলা এবং বেলজিয়াম খেলা অনুষ্ঠিত হয়।
দুপুরে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস উপলক্ষে পি এইচ এ ভবনে আয়জিত আলোচনা সভায় উদবধনি বক্তব্যে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ডা. মনজুরুল কাদির বলেন, ‘প্রবীণ মানে শুধু বেশি বয়সী ব্যক্তি বা বৃদ্ধ বুঝায় না। প্রবীণরা একটি দেশের সঞ্চিত পরিপক্ব অভিজ্ঞ, বিজ্ঞ ও দিকনিদের্শক। পরবর্তী প্রজন্ম তথা পরবর্তী পৃথিবীর উত্তরণের পথ তাঁরাই দেখান’।অনুষ্ঠানে গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. লায়লা পারভীন বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘ প্রবীণরা দেশের ইতিহাস। দেশের রক্তক্ষয়ী ইতিহাসের সাক্ষি তাঁরা।তাই নবীনদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য প্রবীণদের পরিবারেই থাকতে হবে’। এছাড়া বৃদ্ধাশ্রম প্রবীণদের ঠিকানা হতে পারেনা বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আবু নাসের বেগ।তিনি গণস্বাস্থ্যের এমন আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘প্রবীণদের সমস্যা আমরা সবসময় গুরুত্ব দিয়ে দেখি’ এবং নতুন প্রজন্ম বয়স বৈষম্যের আওতামুক্ত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।আলোচনা সভা শেষে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে দিনব্যাপী এই আয়জনের পরিসমাপ্তি ঘটে।
মন্তব্য চালু নেই