প্রজাপতির জানা-অজানা

‘প্রজাপ্রতি প্রজাপতি কোথায় পেলে ভাই এমন রঙিন পাখা…।’ এই গান তোমার সবাই জানো। প্রজাপতি নামে ছোট্ট সুন্দর প্রাণীটিকেও নিশ্চয়ই তোমরা চেনো। প্রজাপতি এতো সুন্দর যে এটি সবারই চোখের নজর কাড়তে বাধ্য। বিশেষ করে এর রঙের বৈচিত্র্যের জন্য। কী যে সুন্দর দেখতে! চিরচেনা এই সুন্দর প্রজাপতি সম্পর্কে এমন কিছু বিষয় আছে যা আমাদের কাছে অজানা। আসো বন্ধুরা জেনে নেই অসম্ভব সুন্দর ছোট্ট এ প্রাণী সম্পর্কে কিছু তথ্য:

প্রজাপতির স্বচ্ছ পাখা:
আমরা জানি প্রজাপতির পাখাগুলো বেশ স্বচ্ছ। পৃথিবীর সব ধরনের পোকামাকড়ের মধ্যে প্রজাপতিই সবচেয়ে রঙিন এবং স্পন্দনশীল। প্রজাপতির পাখাগুলো আসলে এক ধরনের চিটিন নামক প্রোটিনের স্তর দিয়ে তৈরি যেগুলো প্রাণীটিকে উড়তে সাহায্য করে। এ স্তরগুলো এত পাতলা যে এর ভেতর দিয়ে সবকিছুই দেখা যায়। হাজার হাজার হালকা তুলার মতো পদার্থ স্বচ্ছ চিটিনের চারপাশে বেষ্টন করে থাকে যেগুলোকে আলো পড়লে তা প্রতিফলিত হয়ে বিভিন্ন রঙের তৈরি করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই হালকা তুলার মতো পদার্থগুলো পাখা থেকে খসে পড়ে যায় এবং একসময় পাখাগুলোর উজ্জ্বলতা হারিয়ে যায়।

পা দিয়ে স্বাদ গ্রহণ:
আমরা সাধারণ মুখ দিয়ে স্বাদ গ্রহণ করে থাকি। আমরা জানিও প্রজাপতিও হয়তো মুখ দিয়েই ফুলের স্বাদ নিয়ে থাকে। কিন্তু না। প্রজাপতি তার পা দিয়ে কোনোকিছুর স্বাদ গ্রহণ করে থাকে। পা ব্যহার করে সে যেকোনো উদ্ভিদ বা বিভিন্ন খাবার খুঁজে বেড়ায়। মেয়ে প্রজাপতি বিভিন্ন গাছের উপরে বসে এবং দুই পা দিয়ে কোনো ফুলকে জড়িয়ে ধরে এর রস আস্বাদন করে থাকে। প্রজাপতির পা উপরে মেরুদণ্ডের কাছে একটি কেমোরেসিপটরস থাকে যা বিভিন্ন গাছের রাসায়নিক পদার্থের কোনো মিল খুঁজে পেলে সেখানে সে তার ডিমগুলো স্থাপন করে যায়। এভাবে পা দিয়েই তারা বিভিন্ন খাবারের এবং তাদের বাসস্থানের স্বাদ গ্রহণ করে থাকে।index প্রজাপতির জানা-অজানা

প্রজাপতির খাবার তরল:
প্রাপ্ত বয়স্ক প্রজাপতি সবসময় তরল জাতীয় খাবার যেমন মধু খেয়ে থাকে। এ রকম তরল খাবার ছাড়া এরা কঠিন খাবার খেতে পারে না। তাদের মুখে হাতির শুঁড়ের মতো এক ধরনের নলাকার বস্তু থাকে যা দিয়ে তারা বিভিন্ন গাছের বা ফুলের মধু খেয়ে থাকে এবং এভাবেই জীবন ধারণ করে থাকে।

গুটিপোকার ক্ষেত্রে হাতি শুঁড়কে কাজে লাগায়:
একটি প্রজাপতি স্বাভাবিকভাবে বিভিন্ন মধু খেয়ে থাকে। কিন্তু নতুন বয়সে মাঝেমাঝেই সে গুটিপোকাকেও আক্রান্ত করে। এক্ষেত্রে তার মুখটি দুটি অংশে ভাগ হয়ে যায়।

প্রজাপতি নোংরা কাদা মিনারেল পান করে:
প্রজাপতি শুধু মধু খেয়ে বাঁচতে পারে না এদের কিছুটা মিনারেলেরও প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই মধু আহরণের পাশাপাশি মাঝে এটি কাদাখানাতেও চুমুক দিয়ে থাকে যেটিতে প্রচুর পরিমাণে মিনারেল এবং খনিজ লবণ থাকে। এই কাজটি বেশিরভাগ সময়ে পুরুষ প্রজাপতিটি করে থাকে। কেননা এই মিনারেল তাদের স্পার্ম তৈরিতে সহায়তা করে। প্রজননের সময় এই মিনারেল স্ত্রী প্রজাপতির দেহে স্থানান্তর হয়। যার ফলে এদের ডিমের কার্যকারিতাকে বাড়িয়ে তোলে।



মন্তব্য চালু নেই