প্রচারের সময় শেষ হচ্ছে রাত ১২টায়

ঢাকা সিটি করপোরেশন (উত্তর ও দক্ষিণ) ও চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের নির্বাচনী প্রচার শেষ হচ্ছে আজ রাত ১২টায়।

প্রার্থীরা রাত ১২টার পর আর কোনো প্রকার প্রচার চালাতে পারবেন না। আগামী মঙ্গলবার ২৮ এপ্রিল তিন সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানের ২১ দিন আগে প্রচার চালানো যাবে না এবং ভোট গ্রহণের ৩২ ঘণ্টা আগে প্রচার বন্ধ করতে হবে। যদি কেউ প্রচার চালায় সেটা আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হবে।

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা মিহির সারওয়ার মোর্শেদ রাইজিংবিডিকে জানান, ভোট গ্রহণের ৩২ ঘণ্টা আগে থেকে সব ধরনের নির্বাচনী প্রচার বন্ধ করতে হবে প্রার্থীদের। যদি কেউ প্রচার চালায়, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অনলাইন পত্রিকায় যারা বিজ্ঞাপন দিয়েছেন, তা থাকবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী অনলাইনে বিজ্ঞাপনও নামিয়ে ফেলতে হবে। তা না হলে আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হবে।

নির্বাচন কেন্দ্র করে নির্বাচনী এলাকায় যাতে কোনো ধরনের সহিংসতা না হয়, সেজন্য নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন আগামী ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে। আমরা এই তিন সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আমাদের সব লজিস্টিক প্রস্তুতি সম্পন্ন। আমাদের নির্বাচনী মালামাল প্রস্তুত করা হয়েছে এবং চট্টগ্রামের মালামাল গতকাল পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজ ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনী মালামাল দেওয়া হবে। এই নির্বাচন সুষ্ঠু, নির্বিঘ্ন ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য নির্বাচন কমিশন সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে।

সচিব বলেন, ‘আমরা মোটামুটি হিসাব করে দেখেছি, আনসার, পুলিশ, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, বিজিবি মিলে প্রায় ৮০ হাজারের মতো নিরাপত্তাকর্মী নির্বাচনের দিন নিয়োজিত থাকবে। এ ছাড়া সেনাবাহিনী নিয়োজিত থাকবে। তারা ২৬ তারিখ থেকে সেনানিবাসে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা যখনই মনে করবেন যে আইনশৃঙ্খলা-পরিস্থিতি তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে এবং সেনাবাহিনীর প্রয়োজন আছে তখন আহ্বান করলেই সেনাবাহিনী চলে আসবে।

এদিকে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের বেশিরভাগই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া গতকাল বলেন, দুই ধরনের কেন্দ্র রয়েছে। একটি একক কেন্দ্র, অন্যটি যৌথ কেন্দ্র। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ২৩১টি একক কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে ১৮৩টি সাধারণ অর্থাৎ ঝুঁকিপূর্ণ নয়। আর ১ হাজার ৫৬৮টি যৌথ কেন্দ্রের মধ্যে ১ হাজার ১৯৮টিই ঝুঁকিপূর্ণ। মোট ১ হাজার ৭৯৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ১ হাজার ৪২৯টি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ঢাকা মহানগরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের দিন ও নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে বলবৎ থাকবে। র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ চারটি কন্ট্রোল রুম স্থাপন করেছে। এগুলো সার্বক্ষণিক ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নির্বিঘ্নে যাতায়াতের বিষয়টি মনিটরিং করবে। এর মধ্যে উত্তর সিটি করপোরেশনে দুটি ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে দুটি কন্ট্রোল রুম থাকবে।

উত্তর সিটির কন্ট্রোল রুম থাকবে মিরপুরে পুলিশ অর্ডার ম্যানেজমেন্ট অফিস ও গুলশান ডিপ্লোমেটিক এরিয়াতে। আর দক্ষিণে আব্দুল গণি রোডে একটি, অন্যটি তেজগাঁও থানায় থাকবে।

ঢাকা সিটিতে মোট ৯৩টি ওয়ার্ডের ভোটারদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের ৩১টি স্ট্রাইকিং ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। প্রত্যেক সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১০টি অস্ত্র ও ১২টি লাঠির সমন্বয়ে নিরাপত্তা দেওয়া হবে। এর মধ্যে পুলিশের অস্ত্রধারী সাতজন আর বাকিরা আনসারের অস্ত্র নিয়ে থাকবে।

আর ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে ১২টি অস্ত্র ও ১২টি লাঠির সমন্বয়ে নিরাপত্তা থাকবে। এর মধ্যে সাতজন পুলিশের অস্ত্র আর বাকিরা আনসারদের অস্ত্রে থাকবে।



মন্তব্য চালু নেই