পৃথিবী থেকে দ্রুত কমে যাচ্ছে অক্সিজেন!

পৃথিবী থেকে দ্রুত কমে যাচ্ছে অক্সিজেন, একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা তেমন ইঙ্গিত পেয়েছেন। যদিও এ বিষয়ে এখনি আতংকিত হওয়ার কিছু নেই কিন্তু ভবিষ্যত পৃথিবীর জন্য এ এক ভয়ানক দু:সংবাদ। কারণ পানি ছাড়া কিছুদিন কাটানো যায়, খাবার ছাড়াও কয়েকদিন বাঁচা সম্ভব, কিন্তু অক্সিজেন ছাড়া প্রাণীসভ্যতা মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে যাবে।

অ্যামেরিকার নিউ জার্সির প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী একটি গবেষণা চালিয়ে অক্সিজেন কমে যাওয়ার বিষয়ে এ সিদ্ধান্তে এসেছেন। বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণ, গত ৮ লাখ বছরে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল থেকে ০.৭ শতাংশ অক্সিজেন উধাও হয়ে গেছে। যার পরিমাণ খুব একটা বেশি না হলেও বিজ্ঞানীদের বেশি ভাবাচ্ছে যেটা তা হলো গত একশো বছরে এই পরিমাণ সর্বাধিক। ০.১ শতাংশ। অর্থাৎ গত ১০০ বছরে অক্সিজেন কমে যাওয়ার হার সর্বাধিক।

স্পষ্ট করে এর কোনো নির্দিষ্ট কারণ না জানালেও বিজ্ঞানীদের ধারণা, গত ১০০ বছরে পৃথিবীতে বিপুল পরিমাণ জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হয়েছে। ফলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের উৎপত্তি হয়েছে অনেক বেশি। আর এই বিষয়টা অক্সিজেন কমে যাওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হতে পারে।

গ্রিনল্যান্ড ও আন্টার্কটিকায় হাজার বছর ধরে জমাট বেঁধে আছে যে বরফ, সেই বরফের ভিতর থেকে বুদবুদ সংগ্রহ করেন বিজ্ঞানীরা। পরে তার মধ্যেকার অক্সিজেন তারা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেন। তবে নিছকই কৌতুহলবশে তারা এই পরীক্ষা চালান বলে বিজ্ঞানীরা জানান। পরে তারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হোন যে, বর্তমানে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের যে মাত্রা তা আগের লক্ষাধিক বছর আগের তুলনায় অনেকটাই কম। বর্তমানে অক্সিজেনের মাত্রা মোটামুটি ২১ শতাংশ। বিজ্ঞানীদের আরো পর্যবেক্ষণ, অক্সিজেনের মাত্রা কম মানে এটা নয় যে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বায়ুমণ্ডলে বেড়ে গেছে।

অক্সিজেন কমে যাওয়ার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে বিজ্ঞানীরা আরো একটি বিষয়কে সামনে এনেছেন। তা হলো সমুদ্রের জলের সংস্পর্শে থাকা একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া।

বিজ্ঞানীদলের সদস্য ড. হিগিনস জানান, বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে সামুদ্রিক জলতল যত উত্তপ্ত হবে, তত তা বেশি অক্সিজেন শোষণে সমর্থ হয়ে উঠবে। উল্টোদিকে জলতল যত ঠান্ডা হবে তত তা গ্যাস শোষণে সমর্থ হবে।

তিনি আরো জানান, পৃথিবীতে অক্সিজেনের ইতিহাস যদি ঘেটে দেখা যায়, তাহলে দেখা যাবে জটিল জীবনযাপনের সঙ্গে বিষয়টি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বিজ্ঞানীদের ইঙ্গিত, জটিল জীবনযাপন প্রক্রিয়া কিয়দংশে হলেও অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যাওয়ার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।

বিজ্ঞানীদের এই গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ সম্প্রতি সায়েন্স নামে একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।



মন্তব্য চালু নেই