পৃথিবীর গভীরতম ও স্বচ্ছ হ্রদ !

পৃথিবীর সবচেয়ে পুরাতন ও গভীরতম স্বচ্ছ পানির হ্রদ হল “বৈকাল”। মঙ্গোলিয়ান বর্ডারের উত্তরে পূর্ব-দক্ষিণ বরাবর ৪০০ মাইল এলাকা জুড়ে এই হ্রদটি অবস্থিত। এটি এশিয়ার পাশেই অবস্থিত, কিন্তু এটি আস্তে আস্তে বিভাজন হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে ভবিষ্যতে সমুদ্রের সূত্রপাত ঘটতে পারে।

ভূতত্ত্ববিদগণ বলেছেন, বর্তমানে বৈকাল হ্রদটি যে রকম দেখা যাচ্ছে, লক্ষ লক্ষ বছর আগে উত্তর আমেরিকা, আফ্রিকা ও ইউরোপ এর সমুদ্র বন্দরগুলো ঠিক এমনি দেখা যেত। হ্রদটি প্রায় ৫,০০০ ফিট বা ১,৬৩৭ মিটার এর চেয়ে বেশি গভীর। হ্রদের নীচে চার মাইল পলল মাটির পুরু স্তর রয়েছে। লেক এর ঠাণ্ডা পানিতে প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন রয়েছে। সমৃদ্ধ জলের নীচে কিছু প্রাণীর উদ্ভট জীবন পরিচালনা হয়।

হ্রদে গোলাপি বর্ণের “গোলোমিয়াঙ্কা” নামক একটি সামুদ্রিক ও আংশিক স্বচ্ছ মৎস্য রয়েছে। যা স্থানীয়দের অনেক প্রিয় খাবার। ভূতত্ত্ববিদদের মতে, বৈকাল হ্রদটি ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে অর্থাৎ মধ্যযুগীয় সময়ে সৃষ্টি হয়েছে। বৈকাল হ্রদটির আশেপাশে পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত। যার ফলে হ্রদটি অপ্রতিম সৌন্দর্যের অধিকারী। পাহাড়ে এখনও বন্য প্রাণী রয়েছে। সেখানে ছোট ছোট গ্রামও রয়েছে। “সাইবেরিয়ার তৈগা” নাম দেয়া হয়েছে এসব ছোট গ্রামগুলোকে।

বৈকাল হ্রদটির আকর্ষণীয় কিছু বিষয় এখানে উল্লেখ করা হল-

১. পৃথিবীর সবচেয়ে গভীরতম হ্রদ এবং এর সর্বচ্চ গভীরতা প্রায় ১,৬৩২ মিটার।

২. পৃথিবীর সবচেয়ে পরিষ্কার পানির বৃহত্তম ভলিউম হল বৈকাল হ্রদ। এতে ২৩,০০০ কিউবিক কিলোমিটার পানি রয়েছে।

৩. অর্থাৎ, পৃথিবীর পাঁচ ভাগের এক ভাগ বিশুদ্ধ পানি এই হ্রদে রয়েছে।

৪. বৈকাল হ্রদটি ৬৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং এর প্রস্থ সমুদ্রের প্রায় সমান।

৫. বৈকাল হ্রদ সবচেয়ে প্রাচীন হ্রদ। এটি ২০-২৫ মিলিয়ন বছর পূর্বে উদ্ভূত হয়েছে।

৬. এই স্বাদু পানির হ্রদে অনেক প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী রয়েছে।

৭. বৈকাল হ্রদের পানি অত্যন্ত স্বচ্ছ ও পরিষ্কার। আবহাওয়া ভালো থাকলে আপনি হ্রদের মধ্যে ৪০ মিটার পর্যন্ত দেখতে পারবেন।

৮. বৈকাল হ্রদে ২৭টি দ্বীপপুঞ্জ রয়েছে। যার অধিকাংশই বসতিহীন।

৯. বৈকাল হ্রদের তটরেখা ২১০০ কিলোমিটার।

১০. হ্রদে ৩০০টিরও বেশি নদী প্রবাহিত হয় এবং হ্রদের “আঙ্গারা” নামের মাত্র একটি নালী রয়েছে।

১১. হ্রদের পানি আশেপাশের পাহাড়গুলোকে বেষ্টিত করে রেখেছে।

১২. হ্রদে পাওয়া প্রজাতির অর্ধেকের বেশি অন্যসব যায়গা থেকে আলাদা।

সূত্র: লেক বৈকাল।



মন্তব্য চালু নেই