পুলিশ সুপারের উন্মোচিত ফলক ভেঙে দিলেন পৌর মেয়র!

ফেনী মডেল থানার প্রধান ফটকের ফলক উন্মোচনের দুই দিন পরই ভেঙে দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তরা সংশ্লিষ্ট পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলররা। এরা সবাই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা।

মঙ্গলবার বিকেলে ঘটে যাওয়া ঘটনাটি থানার সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন মহলে জানানোর পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে পুলিশের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। ঘটনার পর সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসক মো. আমিন-উল আহসান, পুলিশ সুপার রেজাউল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জেলা পুলিশ সুপার এই ফলক উন্মোচন করেছিলেন।

সিসিটিভির ফুটেজে কী ছিল? এ ব্যাপারে সিসিটিভির ফুটেজ দেখেছেন এমন একজন পরিদর্শক পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ফেনী পৌরসভার মেয়র হাজি আলাউদ্দিন মঙ্গলবার বিকেল ৪টা ৪৪ মিনিটের দিকে ফেনী মডেল থানার প্রধান ফটকের সামনে এসে দাঁড়ান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন পৌরসভার প্যানেল মেয়রসহ ৮ থেকে ১০ জন কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। একপর্যায়ে পৌরসভার দুই কর্মচারী শাবল ও হাতুড়ি দিয়ে মোজাইক পাথরের নামফলকটি ভেঙে ফেলতে শুরু করেন। আড়াই মিনিটের মধ্যে তাদের ভাঙার কাজটি শেষে করে পৌরসভার ময়লা বহনকারী গাড়ি করে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়। ঘটনাটি ঘটার সময় ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) রাশেদ খান চৌধুরী জরুরি কাজে থানার বাইরে ছিলেন।

ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি) রাশেদ খান চৌধুরী জানান, ১৯ ফেব্রুয়ারি ফেনী মডেল থানার প্রধান ফটকের ফলকটি উন্মোচনের দিন নির্ধারিত করে তিনি গত ১৭ ফেব্রুয়ারি পৌর মেয়রকে আমন্ত্রণ জানান। ১৯ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সুপার নামফলকটি উন্মোচনের সময় ওসি পৌর মেয়রকে ফোন করে অনুষ্ঠানস্থলে আসতে অনুরোধও জানান। তবে ফলক উন্মোচনের সময় পৌর মেয়র বা কোনো কাউন্সিলর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না।

পুলিশ সুপার রেজাউল হক জানান, নামফলক ভেঙে ফেলার বিষয়টি তিনি পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলকে জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান, ওপরের নির্দেশ পেলে ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে ঘটনাটি জানতে পৌরসভার মেয়র আলাউদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে অপর এক কাউন্সিলর নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানিয়েছেন, ওপরের নির্দেশের কারণে তিনি ও অন্যান্য কাউন্সিলররা তখন ঘটনাস্থলে ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ফেনী পৌরসভার অর্থায়নে থানার দীর্ঘ সীমানাপ্রাচীর ও দুটি ফটক নির্মাণ করা হয়েছিল।



মন্তব্য চালু নেই