পুরুষদের ৫টি শারিরীক সমস্যা ও তার প্রতিকার

সোনার আংটি বাঁকা হোক আর যাই হোক, সমস্যা সকলেরই হয়। তেমনই অনেকেই মনে করেন, পুরুষদের ত্বকে কোনও সমস্যা হলেও তারা খুব একটা গুরুত্ব দেন না। কিন্তু এই কথা সম্পূর্ণ ভুল। ত্বকে সমস্যা সকলেরই হয়। কষ্ট সকলেই পান। আর যারা কষ্ট সহ্য করে থাকেন, তাদের পরে ভুগতে হয়। তাদের অনেকসময় স্কিন ইনফেকশনও হয়ে যায়। এবার দেখে নিন, এমন পাঁচটি সমস্যা, যার কারণে প্রায় সব পুরুষই ভুগে থাকেন। খবর ইনাডু ইন্ডিয়া’র।

ব্রণ : শুধুমাত্র কৈশোরেই নয়। ২০-৩০ বছর বয়সেও পুরুষদের ব্রণর জন্য বেশ কষ্ট পেতে হয়। তবে শুধুমাত্র ব্রণই নয়, ব্ল্যাক হেডস্ ও হোয়াইট হেডস্ পুরুষদের বেশ কষ্ট দেয়। প্রাকৃতিক স্কিন অয়েল সিবাম নিঃসরণের ফলে রোমকূপের মুখ বন্ধ হয়ে যায়। এই সিবাম মুখের ডেডস্কিন সেলসের সঙ্গে মিশে যায়। যার ফলেই ব্রণর উৎপত্তি ঘটে। সিবামের ঘনত্ব বেশি হলে, ব্রণ খুব তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসে।

ব্রণর সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বাইরে যাওয়ার আগে এবং বাইরে থেকে এসে অবশ্যই মুখ পরিষ্কার করে নিন। রোজ মুখ পরিষ্কার করার ফলে ত্বক উজ্জ্বল থাকে ও ব্রণ হয় না। কিন্তু স্ক্রাবিং করার সময় খুব জোরে ঘষবেন না। এতে মুখ ছড়ে যেতে পারে। এছাড়া, অ্যান্টি অ্যাকনে ক্রিম বা ভিটামিন A-যুক্ত ওষুধ লাগাতে পারেন।

চর্মরোগ : যেকোনও ভাবেই হতে পারে চর্মরোগ। এই রোগের ফলে গা, হাত, পা অস্বাভাবিকভাবে চুলকাতে থাকে। চুলকানির ফলে অনেক সময় রক্তও বেরিয়ে যায়। প্রাপ্তবয়স্কদের বেশিরভাগ সময় এই রোগ হয়ে থাকে। এটা জিনগত সমস্যার কারণেও হয়ে থাকে, আবার পরিবেশ পরিস্থিতির কারণেও হয়। চুলকানির ফলে স্কিনে অ্যালার্জি হয়ে যায়। যা পরে বড়সড় স্কিন ইনফেকশনের আকার ধারণ করে।

চর্মরোগ নিরাময় করতে হলে শুধুমাত্রই ওষুধ খেলে চলবে না। এর জন্য জীবনধারণের পদ্ধতিরও কিছু পরিবর্তন ঘটাতে হবে। যখনই চুলকোবেন, হাতের নখ দিয়ে না চুলকে হাতের তালু দিয়ে চুলকাতে পারেন। নখ দিয়ে চুলকে কেটে গেলে স্কিন ইনফেকশন হয়ে যেতে পারে। কোনও ত্বক বিশেষজ্ঞের থেকেও পরামর্শ নিতে পারেন। এছাড়া, সাময়িক স্বস্তির জন্য ওমেগা ৩ এবং ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত ক্রিম লাগাতে পারেন। যার ফলে জ্বালা কিছুটা হলেও কমবে।

সোরিয়াসিস : সোরিয়াসিসও এক ধরনের চর্মরোগ। যা শরীরের বিশেষ কয়েকটা জায়গায় হয়ে থাকে। যেমন কনুই, হাঁটু, মাথা এবং পিঠের নিচের দিকে। একে দেখতে খানিকটা লাল। প্রথমে ছোটো অবস্থায় থাকার পর তা আস্তে আস্তে জায়গা বিস্তার করতে থাকে। আবার ধীরে ধীরে লাল থেকে কালো রং ধারণ করতে থাকে সোরিয়াসিস। এই রোগ প্রথম থেকে ঠিক করে বোঝা যায় না। তারপর তা বেড়ে যায়। একে সোরিয়াসিস অ্যাটাকও বলা হয়।

প্রথমত, এই রোগ খুব একটা প্রতিকার করা সম্ভব নয়। তবে খাওয়াদাওয়ার পরিবর্তন ঘটাতে হয়। যার ফলে কিছুটা হলেও প্রতিকার করা যেতে পারে। অ্যাসিডিক খাবার খুব বেশি না খাওয়াই ভালো। এছাড়া মদ, প্রসেসড খাবার, চিনি ইত্যাদি খুব একটা খাবেন না। তার চেয়ে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার খেতে পারেন, যার ফলে এই রোগের কিছুটা হলেও উপশম ঘটবে। এমনকী, সূর্যরশ্মিও এই রোগের জন্য খুব উপকারী। ভিটামিন D চুলকানি কমাতে সাহায্য করে। এবার খুব বেশি চিন্তার কারণেও কিন্তু এই রোগ হতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা যদি দেখেন, যে রোগ কমছে না, তাহলে কোনও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।

রোসাসিয়া : হঠাৎ করে রক্তজালিকা বড় হয়ে রোসাসিয়া রোগ হতে পারে। যার ফলে নাক এবং গালের বেশ কিছু অংশ লাল দেখায়। এমনকী, লাল হয়ে যাওয়ার পর তা ফুলে যেতে থাকে। যা কখনওই ব্রণতে পরিণত হয় না।

রোসাসিয়া রোগ উপশম করতে হলে অবশ্যই জীবনধারণের পদ্ধতির পরিবর্তন করুন। খার জাতীয় খাবার এবং মশলাদার খাবার কম খান। জিঙ্ক, ভিটামিন C যুক্ত খাবার খান। যা শরীরের পক্ষে উপযোগী। এমনকী, শরীরে কোনও কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট করাবেন না। তা হলে কিন্তু পরে আবার ত্বক লাল হয়ে যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন, সূর্যরশ্মি যেন কোনওভাবেই আপনার ত্বকে না লাগতে পারে। সূর্যরশ্মি লাগলে কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি ত্বক লাল হয়ে যাবে। তাই রোদে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন লাগিয়ে তবেই বাইরে যান।

শেভিং থেকে ফুসকুড়ি : দাড়ি কাটার পর গালে হালকা ফুসকুড়ি বের হয়। যা চুলকাতে থাকে। এই ফুসকুড়ির উপর যদি আবার শেভ করা হয়, তাহলে তা কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।এটা অনেকসময় সেন্সিটিভ ত্বক হওয়ার ফলে হয়। কখনও বা আবার দাড়ি কাটার আগে সঠিক পদ্ধতি না মেনে দাড়ি কাটার জন্যও হতে পারে।

শেভিং ফুসকুড়ি কমাতে হলে শেভিং করার আগে শুধু কয়েকটা স্টেপ ফলো করলেই হবে। সবার আগে মুখে মাইল্ড কোনও ফেশওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিন। তারপর হালকা গরম জল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। এরপর প্রি-শেভ স্ক্রাবার লাগান। যাতে মুখে থাকা ডেড স্কিন সেলগুলি সহজেই বেরিয়ে আসতে পারে। এবার মুখ ধুয়ে শেভিং ফোম লাগান। তারপর আস্তে আস্তে শেভ করে নিন। শেভ করার পর ময়েশ্চারাইজ়ার লাগাতে কখনও ভুলবেন না। কারণ, শেভ করার পর মুখের ত্বক খসখসে হয়ে পরে। তাই উজ্জ্বল ত্বক পাওয়ার জন্য ময়েশ্চারাইজ়ার লাগানো খুব জরুরি।



মন্তব্য চালু নেই