পায়ের বিশেষ যত্ন

আমরা সবসময়ই আমাদের চেহারা, চোখ কিংবা ঠোঁটের যত্ন নিয়ে ব্যস্ত থাকি। অবহেলায় থেকে যায় আমাদের পা-যুগল। অথচ সবচেয়ে বেশি চাপ যায় কিন্তু পায়ের ওপর দিয়েই। প্রতিদিনের ধকল আর অযত্মে পায়ের ত্বক হয়ে যায় রুক্ষ আর মলিন। তাই পায়ের দরকার বিশেষ যত্ন।

স্বাস্থ্যসচেতন কিংবা রূপসচেতনমাত্রই সারাদিন কাজের শেষে বাসায় ফিরে মুখের যত্ন নিই। অথচ বাইরের রোদ, ধুলাবালি আর ময়লার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে আমাদের পায়ে। কারণ সারাদিনে একবারও পা ধোয়া হয় না। যার ফলে পায়ের ত্বকে বেশি ময়লা জমে এবং পায়ের ত্বক হয়ে কালচে, রুক্ষ ও খসখসে। তাই নিয়মিত পায়ের ত্বকের পরিচর্যা না করলে বিপাকে পড়ার ঝুঁকি থেকেই যায়।

তা ছাড়া বৃষ্টির সময় পায়ের ত্বক এবং নখের ক্ষতি হয় সব থেকে বেশি।

পানি এবং কাদার কারণে পায়ের নখে ফাঙ্গাস সংক্রমণ, চুলকানি, ফুস্কুড়ি ইত্যাদি সমস্যা হতেই পারে।

বৃষ্টিকালীন সময় তো বটেই, নিয়মিত পা পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত বাইরে থেকে ঘরে ফিরে হালকা গরম পানি দিয়ে পা ভালোভাবে পরিষ্কার করে রাখলে যে কোনো ধরনের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে আসে।

‘প্রতি সপ্তাহে পেডিকিউর করানো গেলে পা পরিষ্কার থাকবে। পেডিকিউর করা হলে পা এবং নখের ভিতর সঠিকভাবে পরিষ্কার করা হয়। তা ছাড়া ঘরোয়া উপায়ে প্রতিদিনই পায়ের বিশেষ যত্ন নিলে সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব।’ বাইরে থেকে ঘরে ফিরে হাল্কা গরম পানিতে শ্যাম্পু এবং অল্প পরিমাণে খাবার সোডা মিশিয়ে পা কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর আলতোভাবে পা ঘষে ধুয়ে নিয়ে, শুকনা করে মুছে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে হবে। এতে পায়ের ত্বক শুষ্ক হয়ে যাবে না।

বর্ষায় পায়ের নখ বড় না রাখাই ভালো। আর যদি বড় রাখাও হয় তাহলে প্রতিদিন খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। কারণ নখের ভিতরে কাদা এবং ময়লা পানি জমে থাকলে ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। নখ পরিষ্কার করার জন্য পা হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে নেইল ব্রাশ দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে নিতে হবে। নখের ভিতরেও ভালোমতো পরিষ্কার করতে হবে, যেন কোনো ধরনের ময়লা জমতে না পারে।

সঠিকভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে এই বর্ষাতেও পায়ের নানা সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে।

তবে গরমেও পায়ের ত্বকের ক্ষতি হয়ে থাকে।

রোদে পায়ের ত্বক পুড়ে কালচে হয়ে যায়। তাই সবসময়ই ঘর থেকে বের হওয়ার ২০ মিনিট আগে মুখ ও হাতের পাশাপাশি পায়ের ত্বকেও সানস্ক্রিন ক্রিম বা লোশন লাগিয়ে নিতে হবে। তা ছাড়া পায়ের রোদে পোড়া ভাব দূর করতেও পেডিকিউর বেশ উপকারী। তবে চাইলে ঘরোয়া বিভিন্ন মাস্ক তৈরি করেও ব্যবহার করা যেতে পারে।

ঘরোয়া পেডিকিউর

* নেইলপলিশ রিমুভার দিয়ে নেইলপলিশ তুলুন।

* নখ খুব ছোট করবেন না, নেইলকাটার দিয়ে চাহিদামতো শেইপ করুন।

* নখের কোণা যেন চামড়ায় গেঁথে না থাকে খেয়াল করুন।

* নখ ফাইল করুন।

* গরম পানিতে লেবুর রস, শ্যাম্পু, পেডিকিউর সল্ট মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন।

* পলিশ স্টোন দিয়ে পায়ের শক্ত চামড়া ঘষে তুলুন।

* ব্রাশের সঙ্গে সামান্য শ্যাম্পু দিয়ে ঘষে পায়ের ত্বক ও নখের কোণায় জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করুন।

* নখের কোণে জমে থাকা ময়লা পরিষ্কার করুন এবং কিউটিকল কাটুন।

* স্ক্র্যাব দিয়ে গোড়ালি থেকে হাঁটু পর্যন্ত ম্যাসাজ করার পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে শুকনো করে মুছুন।

* পায়ে ফুটক্রিম বা বডি অয়েল বা লোশন ম্যাসাজ করুন।

* পছন্দের নেইলপলিশ পরুন। নেইলপলিশ পরতে না চাইলে নেইলবাফার দিয়ে ঘষে নখে শাইন মাখুন।

* ঘরে পেডিকিউর করতে চাইলে এক সেট পেডিকিউর কিট কিনে রাখুন, সুবিধা হবে।



মন্তব্য চালু নেই