পারল না বাংলাদেশ, সিরিজ ড্র

টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের ব্যর্থতায় আরেকটি পরাজয়কে সঙ্গী করল বাংলাদেশ। খুলনায় বাংলাদেশকে ১৮ রানে হারিয়ে ওয়ালটন চার ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-২ সমতায় শেষ করেছে জিম্বাবুয়ে।

শুক্রবার খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ১৮০ রানের বড় পুঁজি গড়ে জিম্বাবুয়ে। জবাবে ১৯ ওভারে ১৬২ রানে অলআউট হয়ে যায় স্বাগতিকরা।

১৮১ রানের বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের টপ অর্ডার। ১২ থেকে ১৭, মাত্র ৫ রানের মধ্যে বিদায় নেন সৌম্য সরকার, তামিম ইকবাল, সাব্বির রহমান ও সাকিব আল হাসান। সৌম্য (১১) ছাড়া বাকি তিন জনের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি!

নেভিল মাদজিভার করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন সৌম্য। কিন্তু পরের বলেই উইকেটের পেছনে মুতুম্বামিকে ক্যাচ দেন। এই ওভারের শেষ বলে একাদশে ফেরা তামিম ইকবালও বোল্ড হয়ে যান।

পরের ওভারে টেন্ডাই চিসোরোর প্রথম বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে দ্বাদশ খেলোয়াড় ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে ক্যাচ দেন সাব্বির। একই ওভারের তৃতীয় বলে সাকিব চার মারলেও পরের বলেই বোল্ড! ১৭ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে তখন ভীষণ বিপদে বাংলাদেশ।

পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ ও ইমরুল কায়েস কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন। তবে ইমরুল সিকান্দার রাজার বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ধরা পড়লে ৩৬ রানের এ জুটিও ভেঙে যায়। ইমরুলের ব্যাট থেকে আসে ১৮ রান।

এরপর নুরুল হাসানকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে রেকর্ড জুটি গড়ে দলকে অনেকটা এগিয়ে নেন মাহমুদউল্লাহ। সেই সঙ্গে মাহমুদউল্লাহ ৩৩ বলে দারুণ এক ফিফটিও তুলে নেন। কিন্তু নুরুল (১৫) সিকান্দার রাজার একটি ফুল টাস বল ডাউন দ্য ট্র্যাকে এসে মারতে গিয়ে চিগুম্বুরাকে ক্যাচ দেন।

নুরুলের বিদায়ে ভেঙে যায় ৫৭ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি। টি-টোয়েন্টিতে ষষ্ঠ উইকেটে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের জুটি। এর আগে ২০১৪ সালে ভারতের বিপক্ষে ষষ্ঠ উইকেটে ৪৯ রানের জুটি গড়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ ও নাসির হোসেন।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামে জিম্বাবুয়ে। শুরুটা যদিও ভালো হয়নি তাদের। ইনিংসের পঞ্চম বলেই ভুসি সিবান্দাকে বিদায় করেন বাংলাদেশের সেরা পেসার মাশরাফি বিন মুর্তজা। অফ সাইডের বাইরে মাশরাফির গুড লেন্থ বল শট খেলতে গিয়ে এক্সট্রা কভারে সাকিব আল হাসানের হাতে ধরা পড়েন সিবান্দা (৪)।

ইনিংসের পরের ওভারের ঠিক পঞ্চম বলে উইকেট পেতে পারতেন তরুণ পেসার আবু হায়দার রনিও। কিন্তু শর্ট ফাইন লেগে রিচমন্ড মুতুম্বামির সহজ একটি ক্যাচ ছাড়েন একাদশে আসা তাসকিন আহমেদ।

জীবন ফিরে পাওয়া মুতুম্বামিকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে বড় জুটি গড়ে তোলেন হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। ইনিংসের ১১তম ওভারে মুতুম্বামিকে (৩২) ফিরিয়ে ৮০ রানের জুটি ভাঙেন আবু হায়দার রনি। দারুণ এক ইয়র্কারে মুতুম্বামির লেগ স্টাম্প উপড়ে ফেলেন বাংলাদেশের এই তরুণ তুর্কি।

মুতুম্বামি ফিরে গেলেও ম্যালকম ওয়ালারের সঙ্গে জুটি বেঁধে ফিফটি তুলে নেন মাসাকাদজা, জিম্বাবুয়েও দলীয় শতরান পেরিয়ে যায়।

মাসাকাদজা ও ওয়ালার- দুজনই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে জিম্বাবুয়েকে এগিয়ে নিতে থাকেন। তবে দলীয় ১৪৫ রানে দারুণ এক ইয়র্কারে ওয়ালারের স্টাম্প ভেঙে দেন তাসকিন। ১৮ বলে ৩টি ছক্কা ও এক চারে ৩৬ রান করেন ওয়ালার।

এরপর পঞ্চম উইকেটে মাসাকাদজা ও এল্টন চিগুম্বুরার ৩১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৮০ রান করে সফরকারীরা।

মাসাকাদজা ৯৩ রান করে অপরাজিত থাকেন, টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের হয়ে সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড এটি। তার ৫৮ বলের ইনিংসে ৮টি চার ও ৫টি ছক্কার মার। চিগুম্বুরা অপরাজিত ছিলেন ৫ রানে।

বাংলাদেশের পক্ষে মাশরাফি, সাকিব, তাসকিন ও আবু হায়দার রনি একটি উইকেট উইকেট নেন।



মন্তব্য চালু নেই