পানি পান করার এই নিয়মগুলো না মানলে ডেকে আনতে পারে ভয়ানক বিপদ!

সবাই বলে থাকেন বেশি বেশি পানি পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ ভালো। কথাটা কিছু মানুষের জন্য প্রযোজ্য হলেও সবার জন্য নয়। অতিরিক্ত পানি পান ডেকে আনতে পারে ভয়ানক বিপদ।

সাধারণত মানুষের কিডনি অতিরিক্ত পানি প্রস্রাবের মাধ্যমে দেহ থেকে বের করে দিতে পারে। কিন্তু অতিরিক্ত পানি পানের ফলে কিডনিকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে।

এতে কিডনির ওপর চাপ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে মারাত্মক রকম। আর কিডনি কাজ না করতে পারলে অতিরিক্ত পানি শরীরে জমে গিয়ে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। তাই বুঝে শুনে পানি পান করতে হবে।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অনুযায়ী একজন মানুষের স্বাভাবিকভাবে ২-৩ লিটার পানি পানই যথেষ্ট। তবে ইউরোপিয়ান ফুড সেফটি অথরিটির এক প্রতিবেদন দাবি করে স্বাভাবিকভাবে এরচেয়ে কম পানি পান করলেও অসুবিধা নেই।

পুরুষদের জন্য ২ লিটার আর নারীদের জন্য ১ দশমিক ৬ লিটার পানিই স্বাভাবিক। প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়, দিনের অসংখ্য খাবারের মধ্য দিয়ে পানি প্রবেশ করছে আমাদের দেহে তাই ২ বা দেড় লিটার পানি পানই স্বাভাবিক।

তবে অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ গ্রহণকারীদের জন্য বেশি পানি পানের পরামর্শ চিকিৎসকরাই দিয়ে থাকেন। যাতে শরীর থেকে রাসায়নিক উপাদান দ্রুত প্রস্রাবের মাধ্যমে নিস্কাশিত হয়।

জ্বর, ডায়রিয়া জাতীয় অসুখেও বেশি বেশি পানি ও তরল জাতীয় খাবার গ্রহণের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
কিডনির সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদেরাগ ও শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা আছে, এমন রোগীদের পানি পানের পরিমাণটি চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নেওয়াই শ্রেয়।

অহেতুক অতিরিক্ত পানি পান তাদের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
তবে বর্তমান সময়ে চিকিৎসকদের প্রধান পরামর্শ হচ্ছে, যে পরিমাণ পানিই একজন পান করুক না কেন তাকে অবশ্যই ফুটানো অর্থাৎ জীবাণুমুক্ত পানি ও পরিশোধিত দূষণমুক্ত পানি পান করতে হবে।

পানি পান করার সময় এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখা জরুরি:

১. আমাদের মতো উষ্ণ আবহাওয়ার দেশে মোটামুটি পরিশ্রমের কাজ করলে একজন মানুষের সাধারণত দিনে দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করলেই চলে। তবে এটি নির্ভর করে তার দেহ থেকে স্বাভাবিক পানি নির্গত হওয়ার পরিমাণের ওপর।

২. জ্বরের সময় প্রচুর পানি পান করা উচিত। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও প্রচুর পানি পান করতে হয়। সকালে খালি পেটে তিন-চার গ্লাস পানি পান করা এ ধরনের সমস্যায় ফলদায়ক। কিছু ওষুধ, বিশেষ করে কিছু অ্যান্টিবায়োটিক খেলে বেশি পানি পান করতে বলা হয়, যাতে তা দ্রুত নিষ্কাশিত হতে পারে।

৩. গরম আবহাওয়ায় পানির পরিমাণ কম হলে প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যেতে পারে, হলুদ বা লালচে রং ধারণ করতে পারে এবং প্রস্রাবে জ্বালা করতে পারে। এ রকম হলে বুঝে নিন পানিশূন্যতা হয়েছে। তাই প্রচুর পানি পান করতে হবে।

৪. ত্বক সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখতে যথেষ্ট পানি পান করা উচিত। ক্ষুধামান্দ্য ও অন্যান্য হজমের সমস্যায়ও পানির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

৫. কিডনির সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, হূদেরাগ ও শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা আছে, এমন রোগীদের চিকিৎসকেরা পানির পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দিতে পারেন।

৬. খাবারের অন্তত আধঘণ্টা আগে এবং খাবার খাওয়ার আধঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পর পানি পান করা উচিত। খাবার সময় বেশি পানি পান না করাই ভালো।

৭. ভারী কাজকর্ম বা ব্যায়ামের পর তিন-চার গ্লাস পানি পান করুন।

৮. তাড়াহুড়া করে পানি পান করবেন না। জোর করে বেশি পানি পান করার প্রয়োজন নেই। আপনার পিপাসাই জানিয়ে দেবে কখন কতটুকু পানি আপনার দরকার।



মন্তব্য চালু নেই