পাকিস্তান ভাঙার জন্যই ভারত মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছিল : বিএনপির দুই নেতা

ভারতের সঙ্গে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের পর বিএনপি নেতারা এখন ভারতের ওপর ক্ষোভ ঝাড়ছেন। রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এক আলোচনা সভায় বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ভারতের বলেছেন, ভারত ১৯৭১ সালে পাকিস্তানকে বিভক্ত করার জন্য মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করেছিল। আজকের অন্যায্য ও একপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে তা স্পষ্ট হয়েছে।

‘বাংলাদেশের জনগণকে গুরুত্ব না দিয়ে একজন ব্যক্তিকে ভারত গুরুত্ব দিয়েছে,’ দাবি করে তিনি বলেন, ভারত মনে করে বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক অনেক উচ্চমানের, হিমালয়ের সমান। ‘প্রিয় বন্ধু! যদি এত প্রাণপ্রিয় বন্ধুত্ব থাকে তবে চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষর করে কেন রক্ষা করতে হচ্ছে? তার মানে এখানে কোন সমস্যা আছে।’

গয়েশ্বর বলেন, ‘ভারতকে বলবো, তাবিজ দিয়ে দাম্পত্য জীবন যেমন সুখী করা যায় না, চুক্তি দিয়ে তেমনি বন্ধুত্ব রক্ষা করা যায় না। চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক দিয়ে এদেশের মানুষের মন পাওয়া যাবে না। বিনিময়ে শুধু তীব্র ঘৃণাই পাবেন।’

তিনি বলেন, ‘ভারত আসলে বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব চায় না। ছোট দেশের প্রধানমন্ত্রীর হাতে চুড়ি পরিয়ে দিলে বন্ধুত্ব বুঝায় না। শেখ হাসিনাও ভারতের বন্ধু নয়।’

গয়েশ্বর বলেন, ‘ভারতের লক্ষ্য পূরণ হতে দিবে না মানুষ। তীব্র সংগ্রামের মাধ্যমে তা প্রতিহত করা হবে।’

অনুষ্ঠানে বিএনপি’র সিনিয়র যগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ হতে চলেছে বলে মন্তব্য করে বলেন, ‘ভারত বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। সেখানে বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ডাক্তার, ব্যবসায়ী সবাই আছেন। সচেতন মানুষ তারা। তাদের গণতন্ত্র অবাধ-সুষ্ঠু। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে কেন এমন বাজে দৃষ্টিতে দেখেন তারা?

‘তাহলে আমরা কি বলবো যে, ১৯৭১ সালে ভারত এদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের জন্য সহযোগিতা করেনি! তারা স্রেফ পাকিস্তান ভাঙার পরিকল্পনা করেছিল?’ বলে মন্তব্য করেন রিজভী।

এর আগে সকালে প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানবন্ধনে রিজভী ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সইকে ‘গোলামীর দস্তখত’ মন্তব্য করে দেশের জনগণ তা বাস্তবায়ন করতে দিবে না বলে হুঁশিয়ার করেন।

তিনি বলেন, ‘এটি সিকিম নয়, নেপাল, ভুটান নয়, এটি স্বাধীন বাংলাদেশ। এদেশের মানুষ আপনাদের আধিপত্যবাদী হস্তক্ষেপ মেনে নিবে না।

‘অন্য কোন দেশ থেকে অত্যাধুনিক অস্ত্র কিনে নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করব। আপনাদের সেকেলে অস্ত্র আমাদের দরকার নেই।’



মন্তব্য চালু নেই