পাকিস্তানে বজরঙ্গী ভাইজানের সত্যি ঘটনা!
বলিউডের ব্লকবাস্টার ছবি ‘বজরঙ্গী ভাইজানে’ কথা বলতে না-পারা একটি পাকিস্তানি বাচ্চা মেয়ে ভারতে হারিয়ে যাওয়ার পর কীভাবে সালমান খান তাকে আবার দেশে ফিরিয়ে দিলেন, সেই কাহিনি এখন সুপারহিট।
তবে সেলুলয়েডের সেই গল্প এবার সীমান্তের অন্য পারে বাস্তবেও করে দেখানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে।
গত ১৫ বছর ধরে পাকিস্তানে পড়ে-থাকা একটি ভারতীয় মেয়েকে দেশে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত ড: টিসিএ রাঘবন মঙ্গলবার সস্ত্রীক করাচী-তে গেছেন মেয়েটির সঙ্গে দেখা করতে।
এই মেয়েটিও মূক ও বধির, পাকিস্তানে তার নাম দেওয়া হয়েছে গীতা। আজ থেকে ১৪ বছর আগে ভারত থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ভুল করে সে ঢুকে পড়েছিল পাকিস্তানে, তাকে উদ্ধার করেছিল পাকিস্তানের পাঞ্জাব রেঞ্জার্স।
তখন মাত্র আট-নবছর বয়স ছিল তার, পাঞ্জাব রেঞ্জার্স ওই মেয়েটিকে পাকিস্তানের একটি সমাজ কল্যাণ সংস্থা এদ্হি ফাউন্ডেশনের হাতে তুলে দেয়।
প্রথমে সে কিছুদিন লাহোরের এদ্হি সেন্টারে কাটালেও পরে ফাউন্ডেশন তাকে করাচীতে তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসে।
সেখানে সে সমাজকর্মী বিলকিস এদ্হি-র দেখাশুনোতেই মানুষ হতে থাকে। বিলকিস এদ্হি-কে দ্য ‘মাদার অব পাকিস্তান’ নামে ডাকা হয়ে থাকে, তিনিই মেয়েটির নাম দেন গীতা।
গীতার বয়স এখন ২৩ বছর, এতদিনে বহুবার চেষ্টা হয়েছে ভারতে তার পরিবার কোথায় তা খুঁজে বের করার জন্য – কিন্তু সেই সব চেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে।
সে ভারতের মানচিত্র চিনতে পারলেও ভারতে কোথায় তার বাড়ি ছিল, সে বিষয়ে এদ্হি ফাউন্ডেশনের কর্মীদের কিছুই জানাতে পারেনি।
সম্প্রতি বজরঙ্গী ভাইজান ছবিটি সুপারহিট হওয়ার পর গীতা-র কাহিনী আবার সামনে আসে।
পাকিস্তানের মানবাধিকার কর্মী ও সাবেক মন্ত্রী আনসার বার্নি গীতার পরিবারকে খুঁজে বের করার জন্য নতুন করে আবেদন জানান।
গীতার পরিবারের সন্ধান বের করার জন্য তিনি তার ফেসবুক পেজে প্রতিনিয়ত ক্যাম্পেন চালাচ্ছেন, বজরঙ্গী ভাইজান ছবি মুক্তি পাওয়ার পর সেই প্রচারের তীব্রতা এখন অনেক বেড়ে গেছে।
আনসার বার্নির আবেদনে সাড়া দিয়েই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে নির্দেশ দেন, স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি যেন গীতার সঙ্গে করাচিতে দেখা করতে যান এবং তার সম্পর্কে যত বেশি সম্ভব তথ্য সংগ্রহ করেন।
সেই নির্দেশের কথা টুইটারেও ঘোষণা করেন মিস স্বরাজ, যার পরই ভারতীয় হাইকমিশনার ড: রাঘবন ইসলামাবাদ থেকে করাচির উদ্দেশে রওনা হন।
বজরঙ্গী ভাইজান সিনেমায় দারুণ নাটকীয়তার মধ্যে দিয়ে পাকিস্তানি মেয়েটি তার বাবা-মার কাছে ফিরতে পেরেছিল।
কিন্তু গীতার জীবনেও সিনেমার গল্প সত্যি হয় কি না, সে দিকেই এখন সবাই কৌতূহলভরে তাকিয়ে আছেন।
মন্তব্য চালু নেই