পাইলস-এর লক্ষণের বিষয়ে সতর্ক হোন

মলাশয়ের নিম্নভাগের বা পায়ুপথের চারপাশে শিরা ফুলে যাওয়াকেই হেমোরয়েডস বলে। হেমোরয়েডস ইন্টারনাল ও এক্সটারনাল এই দুই ধরণের হয়। ইন্টারনাল হেমোরয়েডস পায়ুপথ বা মলদ্বারের অভ্যন্তরে হয়ে থাকে। এক্সটারনাল হেমোরয়েডস পায়ু পথের বাহিরের দিকে হয়। হেমোরয়েডসকে অর্শ রোগ বা পাইলস ও বলে। এই দুই ধরণের পাইলস এর মধ্যে সবচেয়ে কমন এবং সবচেয়ে বিরক্তিকর হচ্ছে এক্সটারনাল হেমোরয়েডস। পাইলস হলে ব্যথা হয়, তীব্র চুলকানি হয় এবং বসতে সমস্যা হয়। তবে ভালো খবর হচ্ছে এটি একটি নিরাময়যোগ্য স্বাস্থ্যসমস্যা। পাইলসের সাধারণ কিছু লক্ষণের বিষয়ে জেনে নিই চলুন যা উপেক্ষা করা ঠিক নয়।

১। মলের সাথে রক্ত যাওয়া

মলের সাথে রক্ত যাওয়া পাইলসের প্রধান লক্ষণ হলেও অ্যানাল ফিশার, প্রদাহজনিত পেটের রোগ এবং পাকস্থলীর ক্যান্সারকেও নির্দেশ করে। যদি আপনার মলের সাথে রক্ত যায় তাহলে ডাক্তারের সাথে দেখা করে কারণটি জানুন এবং প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা শুরু করুন।

২। পায়ু পথে ব্যথা ও অস্বস্তি

পাইলসের সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে পায়ু পথে ব্যথা। এমআরআই বা কোলনস্কপির মাধ্যমে এটি সঠিকভাবে নির্ণয় করা যায়না। তাই একজন গেস্ট্রোএন্টেরোলজিস্টের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। কারণ এই ধরণের ব্যথা অ্যানাল ফিশার বা ফিটুলার ক্ষেত্রেও হতে পারে। পাইলস নির্ণয়ের জন্য সিগময়ডোস্কপি করানোর পরামর্শ দেবেন চিকিৎসক।

৩। পায়ু পথে চুলকানি

পায়ু পথের চারপাশে ফুলে যাওয়ার পাশাপাশি চুলকানি ও হয়। যদি চুলকানি তীব্র আকার ধারণ করে তাহলে অ্যানাল প্যাথলজি টেস্ট করাতে হবে। ইনফেকশন বা ফিশারের কারণেও এমন হতে পারে।

৪। মল নির্গমনের সময় ব্যথা হওয়া

পাইলস এ আক্রান্ত হলে মলদ্বারের রক্তনালীতে চাপ বৃদ্ধি পায় বলে মল নির্গমনের সময় ব্যথা হয়। এটি শুধু কোষ্ঠকাঠিন্য বা পেটের সমস্যার কারণেই হয়না। পাইলস হলে মল নির্গমনে সমস্যা হওয়ার পাশাপাশি তলপেটে ব্যথাও হয়।

৫। মলদ্বারে পিন্ড বা ফোলা অংশ

পায়ু পথে ফুলে গেলে বা পিন্ড দেখা গেলে অনেকেই ক্যান্সার বলে মনে করেন। তবে পায়ু অঞ্চলে ক্যান্সার হওয়া খুব কমন বিষয় নয়। এটি হতে পারে পাইলস বা ইনফেকশনের লক্ষণ।

এছাড়াও পাইলস হলে রক্ত যাওয়ার কারণে দুর্বলতা বা ফ্যাকাসে ত্বকের মত অ্যানেমিয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায় যা খুব বিরল। পাইলস হওয়ার নির্দিষ্ট কারণ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত নন। তবে এটি হওয়ার পেছনে যে কারণগুলোকে দায়ী করা যায় তা হল :

– মল নির্গমনের সময় খুব বেশি চাপ দেয়া

– দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্যের ফলে তৈরি হওয়া জটিলতার কারণে

– দীর্ঘসময় টয়লেটে বসে থাকলে

– পাইলস হওয়ার পারিবারিক ইতিহাস থাকলে

– প্রেগন্যান্ট হলে জরায়ু বড় হতে থাকে এবং কোলনের শিরায় চাপ দিতে থাকে বলে শিরা স্ফীত হয়। যার ফলশ্রুতিতে পাইলস হয়।

চিকিৎসা :

পাইলস এর চিকিৎসায় উষ্ণ পানি পূর্ণ বাথ টাবে বা বোলে ১০ মিনিট বসে থাকলে আরাম পাওয়া যায় ও ব্যথা কমে। এক্সটারনাল হেমোরয়েডসের ক্ষেত্রে গরম পানি পূর্ণ বোতলের উপর বসে থাকলেও আরাম পাওয়া যায়। তীব্র ব্যথা, চুলকানি ও জ্বালাপোড়ার ক্ষেত্রে ডাক্তার অয়েন্টমেন্ট বা ক্রিম ব্যবহার করার পরামর্শ দেবেন। আপনার খাদ্যতালিকায় ডায়াটারি ফাইবার বৃদ্ধি করুন এতে পরবর্তীতে পাইলস হওয়ার সম্ভাবনা কমবে। এছাড়া প্রচুর পানি পান করুন।



মন্তব্য চালু নেই