নয়জনের বার্সার বৈতরণী পার

লাল-হলুদ কার্ডের ছড়াছড়ি। লড়াইটাও হল হাড্ডাহাড্ডি। শুরুতে আধিপত্য দেখালেও প্রথমার্ধেই পিছিয়ে পড়ে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। দ্বিতীয়ার্ধে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েও ন্যুক্যাম্পে জয়খরা ঘোচাতে পারেনি দিয়েগো সিমিওনের দল। তাদের ছিটকে দিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো কোপা দেল রের ফাইনালে চলে গেল বার্সেলোনা।

সেমিফাইনালের ফিরতি লেগের ম্যাচ ১-১ গোলে ড্র হয়েছে। দুই লেগ মিলিয়ে কাতালান ক্লাবটির জয় ৩-২ ব্যবধানে। অ্যাটলেটিকোর মাঠে ২-১ গোলে জিতেছিল বার্সেলোনা।

হলুদ কার্ডের জন্য এই ম্যাচে খেলতে পারেননি নেইমার। ফাইনালেও এমনই এক শূন্যতা নিয়ে মাঠে নামতে হবে তাদের। লাল কার্ড পাওয়ায় শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে খেলতে পারবেন না লুইস সুয়ারেজ।

তিন লাল আর আট হলুদ কার্ডের এই ম্যাচে সুয়ারেজের গোলে প্রথমার্ধের শেষদিকে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা।

অ্যাটলেটিকোকে সমতায় ফেরান কেভিন গামেরো। ফাইনালে উঠতে একরকম অসাধ্যই সাধন করতে হতো অ্যাটলেটিকোকে।

গত ১০ বছরে যেখানে একবারও জিততে পারেনি সেই ন্যুক্যাম্পে মঙ্গলবার রাতে কমপক্ষে ২-০ গোলে জিততে হতো তাদের। সিমিওনের শিষ্যরা শুরুটা অবশ্য করেছিলেন আশা জাগানিয়া। প্রথম ২০ মিনিটে আক্রমণাত্মক ফুটবলে ব্যস্ত রাখেন তারা স্বাগতিক রক্ষণভাগকে। সের্গিও রবার্তোর দলকে পিছিয়ে পড়া থেকে বাঁচান গোলরক্ষক ইয়াসপার সিলেসেন। ৩০ মিনিটে ডি-বক্সে বারদুয়েক ট্যাকলে ফার্নান্দো টরেস পড়ে গেলে পেনাল্টির আবেদন জানায় অতিথিরা। রেফারির সাড়া মেলেনি।

বিরতির আগের পাঁচ মিনিটে সবকিছু পাল্টে যায়। বার্সেলোনা ৪৩ মিনিটে এগিয়ে যায়। ডি-বক্সের বাইরে থেকে লিওনেল মেসির শট গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে ঠেকালেও বিপদমুক্ত করতে পারেননি। ফিরতি বল ফাঁকায় পেয়ে লক্ষ্যভেদে কোনো ভুল করেননি সুয়ারেজ। এবারের আসরে উরুগুয়ের এই স্ট্রাইকারের এটি চতুর্থ গোল, সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এই মৌসুমে ২১তম গোল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুটাও আক্রমণাত্মক করে বার্সা। ম্যাচের নাটকীয়তার তখনও ঢের বাকি। ৫৭ মিনিটে স্পেনের মিডফিল্ডার রবার্তো দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় তারা।

তিন মিনিট পর অ্যান্তনি গ্রিজমান গোল করলেও অফসাইডের বাঁশিতে অ্যাটলেটিকোর উল্লাস থেমে যায়। ৬৯ মিনিটে বেলজিয়ামের মিডফিল্ডার ইয়ানিক কারাসকো দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখলে মাদ্রিদের দলটিও ১০ জনে পরিণত হয়।

৭৭ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারত। কিন্তু প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে মেসির ফ্রিকিক ক্রসবারে লাগে। দুই মিনিট পর জেরার্ড পিকে নিজেদের ডি-বক্সে গামেরোকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় অ্যাটলেটিকো। নিজেই শট নিয়ে ক্রসবারের ওপর দিয়ে উঁচিয়ে মারেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড।

ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে দেরি করেননি গামেরো। ৮৩ মিনিটে বাঁ-দিক থেকে গ্রিজমানের নিঃস্বার্থ পাস পেয়ে সহজেই জালে পাঠান এই বদলি স্ট্রাইকার। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে সুয়ারেজও দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। যোগ করা সময়ে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে লড়াই আরও জমে ওঠে।

তবে নয়জনের বার্সেলোনা আর কোনো নাটকীয়তার জন্ম হতে দেয়নি। ওয়েবসাইট।



মন্তব্য চালু নেই